দেশে গত কয়েক বছরে উল্লেখযোগ্য হারে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা কমলেও আয় বৈষম্য বিপজ্জনকভাবে বাড়ছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অধ্যাপক মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন। গতকাল এক সেমিনারে তিনি বলেন, সরকারের জনবান্ধব অর্থনৈতিক নীতিমালার পরিপ্রেক্ষিতে দারিদ্র্যসীমার নিচে জনসংখ্যা ২০০৫ সালের ৪০ শতাংশ থেকে ২০১০ সালে ৩১ দশমিক ৫ শতাংশ এবং ২০১৯ সালে ২১ শতাংশে নেমে এসেছে। বর্তমানে ১৭ কোটি লোকের মধ্যে সাড়ে ৩ কোটি লোক দারিদ্র্যসীমার নিচে রয়েছেন। গত ১১ বছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি গড়ে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ ছিল, যা ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৮ দশমিক ১৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। অপরদিকে গিনিসহগ, খানাজরিপ এবং পামা অনুপাত পর্যালোচনায় দেখা গেছে, বাংলাদেশ বিপজ্জনক আয় বৈষম্যের দেশে পরিণত হওয়ার পথে অগ্রসর হচ্ছে। তিনি বলেন, ১৯৭২ সালের গিনিসহগ দশমিক ৩৩ শতাংশ থেকে ২০১৯ সালে দশমিক ৪৮ শতাংশে বেড়ে গেছে। রাজধানীর টিসিবি ভবনে প্রতিযোগিতা কমিশন আয়োজিত ‘ক্রেতা, উৎপাদনকারী ও ব্যবসায়ীর স্বার্থ সংরক্ষণে বাজারে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা নিশ্চিতকরণ’ শীর্ষক সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর এসব কথা বলেন। সেমিনারে ফরাসউদ্দিন বাড়তে থাকা মূল্যস্ফীতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, বর্তমানে মূল্যস্ফীতির হার ৬ দশমিক ৫ শতাংশ, যা দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বোচ্চ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাবেক এই একান্ত সচিব দেশে মূল্যস্ফীতির কয়েকটি ঘটনার কথা উল্লেখ করে বলেন, ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৫ সালে মূল্যস্ফীতি হয়েছিল। ওই সময় সমস্যাসংকুল বৈশ্বিক অর্থনীতির কারণে মূল্যস্ফীতি বেড়েছিল। দ্বিতীয়টি হলো ২০০৭ সালে। ওই সময় খাদ্য পরিস্থিতি সম্পর্কে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আগাম বিচার-বিশ্লেষণ করতে পারেনি। ফলে ১১-১২ শতাংশ মূল্যস্ফীতি হয়ে যায়। ফরাসউদ্দিন ২০১১ সালে শেয়ারবাজারে শেয়ারের মূল্যবৃদ্ধিকে একটি মূল্যস্ফীতির ঘটনা উল্লেখ করে বলেন, একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান, যেখানে আমি কাজ করেছি, তারা পুঁজিবাজার সম্পর্কে বেশ অজ্ঞতার পরিচয় দিয়ে, সেটাকে নিয়ন্ত্রণ না করার ফলে শেয়ারবাজার রমরমা হয়ে যায়। সাম্প্রতিক বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে ফরাসউদ্দিন আশা প্রকাশ করেন এবং প্রার্থনা করেন যে, এবার যেন মূল্যস্ফীতি ততটা বেড়ে না যায়। তিনি ১৯৯৮ সালে চালের মূল্য বৃদ্ধির ঘটনা উল্লেখ করে বলেন, ওই সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, আমাদের কাছে ১০ লাখ মেট্রিক টন চাল আছে। প্রয়োজনে দুই থেকে তিন মাস সরকারের এই চাল খোলা বাজারে বিক্রি করা হবে। সরকারের এই মজুদ পরিস্থিতি ওই সময়ে মূল্যস্ফীতি সহনীয় রাখতে সহায়তা করেছিল বলে উল্লেখ করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক এই গভর্নর। মূল প্রবন্ধে ফরাসউদ্দিন লবণ, ভোজ্যতেল, পিয়াজ, ব্যাংক সুদ, গণপরিবহন, চিনি এবং স্বাস্থ্যসেবা এই খাতগুলো নিয়ে বাজার গবেষণার জন্য পরামর্শ দেন প্রতিযোগিতা কমিশনকে। প্রতিযোগিতা আইন সঠিকভাবে কার্যকর হলে সেটি জিডিপি প্রবৃদ্ধি ২ থেকে ৩ শতাংশ বেড়ে যায় বলেও তথ্য দেন তিনি। ব্যবসায়ী ও ক্রেতার স্বার্থ সংরক্ষণে তিনি ১০টি পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ করেন। এগুলো হলো- বাজারে পণ্য ও সেবার তথ্যভা ার গড়ে তোলা, জনগণের মাঝে আস্থার পরিবেশ নিশ্চিত করা, অর্থনৈতিক যৌক্তিকতা দেখে সিদ্ধান্ত গ্রহণ, কমিশনের সক্ষমতা বাড়ানো, ডিজিটাল সংস্কৃতি দৃশ্যমান করা, সব কেনাকাটা ও দরপত্রে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা, বাংলাদেশ ব্যাংক, রাজস্ব বোর্ড, বিএসইসি, এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন, ট্যারিফ কমিশনের সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ, দরপত্রে শর্ত প্রত্যাহার করা যাতে সবার জন্য সমান সুযোগ থাকে, কৃষক বা উৎপাদকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা এবং কৃষিপণ্য উৎপাদন ও বিপণনে সমবায় গঠন করা। এ ছাড়া বাজার স্থিতিশীল রাখতে তিনি নিয়মিত ও মাঝে মাঝে বিনা নোটিসে পরিদর্শনের ওপরও গুরুত্ব দেন।
শিরোনাম
- পাকিস্তানে বৃষ্টি-বন্যায় ১৯ জনের প্রাণহানি
- গাজায় হামলা চালাতে গিয়ে পুঁতে রাখা বোমায় ৫ ইসরায়েলি সেনা নিহত
- ৩৫ শতাংশ শুল্কের কথা জানিয়ে ড. ইউনূসকে ট্রাম্পের চিঠি
- বাংলাদেশসহ ১৪ দেশে শুল্কের সময়সীমা ‘চূড়ান্ত নয়’, দর-কষাকষির ইঙ্গিত ট্রাম্পের
- আফতাবনগরে দেয়াল ধসে পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু
- কক্সবাজার সীমান্তে এক লাখ পিস ইয়াবা উদ্ধার
- যাত্রাবাড়ীতে গ্রীল কেটে প্রবেশ করে বৃদ্ধকে হত্যা
- ব্রিটেনে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে বাংলাদেশের সবজি
- টানা ২ বছর ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়লেও মজুদ শেষ হবে না, হুঁশিয়ারি ইরানি কমান্ডারের
- হেরে যাওয়ার সেই ধারা ভাঙতে পারলেন জোকোভিচ
- ক্লাব বিশ্বকাপে চমক দেখিয়ে প্রিমিয়ার লিগে ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার
- ১৪ বছর পর নতুন করে ফিরছে আজম খানের 'উচ্চারণ'
- টানা ৯ দিন পানি ছাড়া কিছুই খান না নার্গিস
- গাজা গণহত্যায় অংশগ্রহণকারী ইসরায়েলি সেনার আত্মহত্যা; ‘শুধুই লাশের গন্ধ পেতেন’
- একনজরে আজকের বাংলাদেশ প্রতিদিন (৮ জুলাই)
- বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক রাখলেন ট্রাম্প
- ইলন মাস্ককে রাজনীতি থেকে দূরে থাকতে বললেন মার্কিন মন্ত্রী
- দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে কৃষকদলের সদস্য সচিব বহিষ্কার
- জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের নামে নামকৃত চত্বর ও সড়ক উদ্বোধন
- ঝিনাইদহে পুলিশ কর্মকর্তা হত্যা মামলায় ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড
দেশ বিপজ্জনক আয় বৈষম্যের পথে
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট ভার্সন

টপিক
এই বিভাগের আরও খবর
সর্বশেষ খবর

মাদারীপুরে হেলথ এসিস্ট্যান্ট এসোসিয়েশনের ৬ দফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালিত
৩৫ মিনিট আগে | দেশগ্রাম

বাংলাদেশসহ ১৪ দেশে শুল্কের সময়সীমা ‘চূড়ান্ত নয়’, দর-কষাকষির ইঙ্গিত ট্রাম্পের
১ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

গাজা গণহত্যায় অংশগ্রহণকারী ইসরায়েলি সেনার আত্মহত্যা; ‘শুধুই লাশের গন্ধ পেতেন’
৩ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

টানা ২ বছর ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়লেও মজুদ শেষ হবে না, হুঁশিয়ারি ইরানি কমান্ডারের
২ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

মিয়ানমারে সশস্ত্র দুই গোষ্ঠীর মাঝে তুমুল সংঘর্ষ, পালাচ্ছে হাজার হাজার মানুষ
১৭ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম

কথিত ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী’ সন্দেহে বীরভূমের বাংলাভাষী পরিবার এখন বাংলাদেশে
২৩ ঘণ্টা আগে | পূর্ব-পশ্চিম