ছেলেবেলা থেকে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের জীবন বিস্ময়কর ঘটনাবহুল। আপাদমস্তক সৎ, গণমুখী কর্মচঞ্চল, দক্ষ ও উন্নয়ন কর্মকান্ডে সহজ সরল নিরাবরণ জীবনে মানুষের হৃদয় জয় করে হাঁটছেন। শনিবার রাতে হেয়ার রোডের সরকারি বাসভবনে তার সঙ্গে কথা হচ্ছিল নানা বিষয়ে। জীবনটাই তার রোমাঞ্চকর সংগ্রাম ও অলৌকিকভাবে মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে আসার। ৫০ দশকে সুনামগঞ্জ জেলার দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার অবহেলিত ডুংরিয়া গ্রামে প্রতি বছরের ভয়াবহ কলেরা রোগে আক্রান্ত হয়ে যখন তার দুই ভাই ও এক বোন মারা যান তখন স্নেহময়ী মা তাকে নিয়ে ছাতকের বাপের বাড়ি চলে যান। সেই সময় প্রতি বছর কলেরায় মানুষের করুণ মৃত্যু তার হৃদয়কে এতটাই আলোড়িত করেছিল যে প্রশাসনিক কর্মজীবনে তিনি যেমন গ্রামের মানুষের জন্য কাজ করেছেন তেমনি এখনো সেই ধারা অব্যাহত রেখেছেন। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার পরিকল্পনামন্ত্রী হিসেবে তিনি তার নির্বাচনী এলাকার দুই উপজেলা দক্ষিণ সুনামগঞ্জ ও জগন্নাথপুরে ৮ হাজার করে ডিপটিউবওয়েল ও আধুনিক পাকা টয়লেট নির্মাণের প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু করেছেন। ১০০ কোটি টাকার এই প্রকল্প শেখ হাসিনা অনুমোদন দেওয়ার পরে ইতিমধ্যে দুই হাজার ডিপটিউবওয়েল ও পাকা টয়লেটের কাজ শেষ করেছেন। এতে করে প্রতি পাঁচ পরিবার একটি করে পাকা টয়লেট ও একটি ডিপটিউবওয়েল পাচ্ছেন। সম্প্রতি সুনামগঞ্জে সব স্তরের মানুষ সেখানে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পর তাকে উষ্ণ সংবর্ধনা দেন। সংসদ সদস্যদের নিয়ে তিনি জেলাজুড়ে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকা-ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কাজ শুরু হয়েছে। টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ হচ্ছে। ছাতক থেকে সুনামগঞ্জ জেলা সদরে রেললাইন যাচ্ছে। সুনামগঞ্জ থেকে ধর্মপাশা সড়ক যোগাযোগ ফ্লাইওভারসহ হচ্ছে। রানীগঞ্জ সেতু, দোয়ারাবাজার মুক্তিযুদ্ধ সড়ক, দিরাই শাল্লা আজমিরিগঞ্জ সড়ক, ঢাকা সিলেট মহাসড়ক এবং সিলেট সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কসহ ব্যাপক উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ হচ্ছে। সুনামগঞ্জের সুরমা নদীর ওপর ধারার গাঁওয়ে আরেকটি সেতু হচ্ছে। অনেক পরিকল্পনা জানালেন এবং তার কর্মতৎপরতা ও সুনামগঞ্জবাসীর আশা-আকাক্সক্ষা এবং জেলার এমপিদের প্রত্যাশা, তাদের দৌড়ঝাঁপ ও সহযোগিতার কথাও উল্লেখ করলেন।
এম এ মান্নান জানান, ডুংরিয়ার মতো পশ্চাৎপদ গ্রাম থেকে লেখাপড়া করে তার এই উঠে আসার পিছনে তার মায়ের অদম্য উৎসাহ ও সহযোগিতা কাজ করেছে। শুকনো মৌসুমে গ্রামের বাড়ি থেকে আড়াই তিন মাইল হেঁটে আর বর্ষায় নৌকায় করে জয়কলসের জুনিগাঁও জুনিয়র হাইস্কুলে লেখাপড়া করতে যেতেন। ৫৭ সালে জেলা সদরের জুবিলি স্কুলে ভর্তি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেখেন পশ্চিম পাকিস্তানের এয়ার ফোর্সের স্কুলে ছাত্র ভর্তির বিজ্ঞাপন। তিনি আবেদন করেন। তখন সিলেট এমসি কলেজে সে অঞ্চলের আবেদনকারীদের পরীক্ষা নেওয়া হতো। তিনি তখনকার যোগাযোগ ব্যবস্থার চরম দুরবস্তার মধ্যে সারাদিনে সিলেট পৌঁছলেন। লিখিত পরীক্ষা দিলেন। ফলাফল দেখে সবাই চমকে গেলেন। তিনি এ অঞ্চল থেকে একমাত্র সুযোগ পেলেন। পরে মেডিকেল চেকআপ ও ভাইভা দিতে গিয়ে একজন ব্রিটিশ টিচার তাকে প্রশ্ন করছেন আর তিনি বাংলায় আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে জবাব দিচ্ছেন। আরেকজন সেটি তর্জমা করে সেই শিক্ষককে বলছেন। ব্রিটিশ পরীক্ষক তার জবাবে সন্তুষ্ট হলে সেখানেও তিনি উতরে গেলেন। সহজ সরল মান্নান বলেন, সেই সময় গ্রাম থেকে আসা স্কুলছাত্র ইংরেজিতে কথা বলতে পারতাম না। পূর্ব পাকিস্তান থেকে ১২ জন ছাত্রের মধ্যে তিনিও টিকলেন। কিন্তু যখন এয়ারফোর্সে বিমানে করে তাদের নিয়ে যাওয়া হবে তখন তাদের চারজনকে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হলো। তিনি জেদ ধরলেন যেভাবেই হোক এই বঞ্চনা তিনি মেনে নেবেন না। তখন শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক গভর্নর। থাকেন বর্তমান রাষ্ট্রপতি ভবনে। তিনি তার কাছে সেই কিশোর বয়সে দেখা করতে গেলে গেটের সামরিক কর্মকর্তারা জানান এভাবে তিনি দেখা করতে পারবেন না। তবে তারা তার বিষয়টি লিখে নেন এবং গভর্নরকে অবহিত করবেন বলে জানান। এদিকে অন্য ছাত্ররা তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী আতাউর রহমান খানকে অবহিত করেন। তিনি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীকে জানালে তিনি সবার যাওয়া নিশ্চিত করেন। আনন্দের সঙ্গে পরদিন তারা ১২ জন বাঙালি ছাত্র এয়ারফোর্সের মালবাহী ফ্রেইটার বিমানে ঢাকা কলকাতা দিল্লি হয়ে লাহোর যান ১২ ঘণ্টায়। সেই স্কুল থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে পাস করলেও চোখের সমস্যা দেখা দেওয়ায় এয়ার ফোর্সে আর সুযোগ পাননি।
ঢাকায় ফিরে এসে এলাকার কাউকেও পাননি যে সহযোগিতা পাবেন। আত্মীয়স্বজন দূরে থাক। কিন্তু হাল ছাড়েননি। তার ভাষায় প্রাইভেটে আইএ পাস করেন। এমনকি এইচএসসিতে ভালো রেজাল্ট করার পরেও তার বিশ্ববিদ্যালয় বা কোনো কলেজে ভর্তি হওয়া হয়নি। প্রাইভেটেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কৃতিত্বের সঙ্গে বিএ পাস করেন। সেই সময় বিভিন্ন সংস্থায় চাকরি করে সততার সঙ্গে জীবিকা নির্বাহ করেন। তিনি ৬৬ সালে কেয়ারে চাকরি করতেন। সেই সময় ২ ফেব্রুয়ারি বুধবার পিআইএর রাশিয়ান হেলিকপ্টারে কুষ্টিয়া যাচ্ছিলেন। ফরিদপুরের লাগোয়া সোনাপুর গ্রামে হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়। ২১ জন যাত্রী, দুজন পাইলট ও একজন স্টুয়ার্ট সব মিলিয়ে ২৪ জন ছিলেন। কী বিস্ময়কর অলৌকিক ঘটনা। দুর্ঘটনাস্থলে ২৩ জনই পুড়ে মারা গেলেও তিনি প্রাণে বেঁচে যান! পরে জানা জায় উড়ন্ত শকুন বা চিলের সঙ্গে আঘাত লেগে হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়েছিল। গোটা জীবনটাই তার বিস্ময়কর এক যোদ্ধার। এম এ মান্নান দেশ ও মানুষের জন্য নিবেদিত প্রাণ হয়ে সততার সঙ্গে নিরলস কাজ করছেন। নিরহংকারী নির্লোভ গণমুখী মানুষটি তার দরজা মানুষের জন্য সব সময় খোলা রাখেন। মানসিক ও শারীরিকভাবেও তিনি দিনরাত পরিশ্রম করার প্রচন্ড শক্তি রাখেন। যাক সেই ৭০ সালে সিএসপি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করেন। তার চাকরির বয়স ২৫ বছর পার হতে মাত্র কিছুদিন বাকি। সেই সিএসপি পরীক্ষায় গোটা পাকিস্তানের মধ্যে ১৩তম স্থান ও পূর্বপাকিস্তানের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেন। এতে চারদিকে বিষয়টি চমকে ওঠার মতো খবর হয়ে ওঠে। ফকিরাপুলের জীর্ণশীর্ণ একটি মেসে তখন থাকতেন। গণমাধ্যম থেকে সেই সময় পরীক্ষার্থী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষক তাকে খুঁজে বের করেন। পরীক্ষার ফলাফল দিতে দিতে স্বাধীনতা সংগ্রামের উত্তাল একাত্তর চলে আসে। পাকিস্তান সরকার অক্টোবর মাসে তাকে চাকরিতে গিয়ে জয়েন্ট করতে টেলিগ্রাম দিলে তিনি সেখানেও যোগদান করেননি। মুক্তিযুদ্ধেও আর যাওয়া হয়নি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনি তার এই বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন অস্থির হন। তার সঙ্গে যারা সেই সিএসপি অফিসার হয়ে চাকরিতে যাননি তাদেরও একই অবস্থা। বঙ্গবন্ধু তখন বর্তমান যমুনায়ও বিকালে বসতেন। একদিন তিনি বিকাল ৪টায় বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের সপ্তাহ দুয়েক পর দেখা করতে যান। বিকাল ৪টা থেকে অনেক দর্শনার্থীর সঙ্গে টানা রাত ১২টা পর্যন্ত বসে থাকেন। বর্তমান স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর পিতা রফিক উল্লাহ চৌধুরী তখন বঙ্গবন্ধুর একান্ত সচিব। রাত ১২টায় তিনি বেরিয়ে যাওয়ার সময় শেষ দর্শনার্থী হিসেবে তাকে ওপরে যেতে বললেন। তিনি যখন বঙ্গবন্ধুর কক্ষে প্রবেশ করলেন তখন সেখানে তার রাজনৈতিক সচিব তোফায়েল আহমেদ ও নোয়াখালীর এমপি নুরুল হক উপস্থিত ছিলেন। বঙ্গবন্ধু এম এ মান্নানকে জিজ্ঞাসা করলেন তুমি কে কী চাও? জবাবে এম এ মান্নান তিন মিনিটে তার বিষয়টি উত্থাপন করে বললেন, আমি আমার চাকরিটি চাইছি। বঙ্গবন্ধু তাৎক্ষণিক তার বক্তব্যের যৌক্তিকতাকে গ্রহণ করে তাদের সবাইকে চাকরিতে বহাল করতে নির্দেশ দেন। কিন্তু প্রশাসনের অভ্যন্তরে একটি অংশ আমলাতন্ত্রের দীর্ঘসূত্রিতায় ফেলে দেয়। তাদেরও বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা করার সুযোগ ছিল সীমিত। শেষ পর্যন্ত ৭৪ সালে তাদেরকে চাকরিতে নেওয়া হলেও বঙ্গবন্ধু হত্যার পর নানা হয়রানির শিকার হতে হয়।
৮৬ সালে শেখ হাসিনা যখন সংসদে বিরোধী দলের নেতা তখন এরশাদের সামরিক শাসন। এম এ মান্নান ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক। সাবেক আইজিপি মোদাব্বির হোসেন চৌধুরী পুলিশ সুপার। শেখ হাসিনা ময়মনসিংহ সফরে যাচ্ছেন। মন্ত্রীর মর্যাদায় বিরোধীদলীয় নেতাকে পর্যাপ্ত হাউস গার্ডসহ প্রয়োজনীয় প্রটোকল দেওয়ার কথা থাকলেও আগের দিন ঢাকা থেকে তাকে নির্দেশ দেওয়া হয় সেটি যেন পর্যাপ্ত দেওয়া না হয়। পুলিশ সুপার ছুটিতে চলে যান। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফয়েজ আহমদকে নিয়ে এম এ মান্নান সর্বোচ্চ প্রটোকল দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। বঙ্গবন্ধুর প্রতি তার কৃতজ্ঞতা বোধ সেদিন তাকে এই সাহস দিয়েছিল। বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনাকে ১৮ জন হাউস গার্ডসহ সর্বোচ্চ প্রটোকল দেওয়া হয়। শেখ হাসিনা হালুয়া ঘাটে গিয়েছিলেন। রাজনৈতিক সভা করতে। ফিরে আসার সময় রাত ১২টায় তুমুল বৃষ্টির মধ্যে একটি জুট মিলের শ্রমিকরা তাদের বেতন না পাওয়ায় বিক্ষোভ করে এবং ফেরি সরিয়ে নেয়। তিনি খবর পেয়ে ঝড় বৃষ্টির মধ্যে সেখানে ছুটে যান। শ্রমিকরা তাকে ভালোবাসতেন গরিব মানুষদের সঙ্গে তার নিবিড় যোগাযোগের কারণে। কারণ তিনি যেখানেই চাকরি করতে যেতেন গরিব মানুষদের সুখ-দুঃখের সাথী হতেন। তিনি শ্রমিকদের বললেন, ফেরিতে বিরোধীদলীয় নেত্রীকে আসতে দাও। কালকেই তোমাদের বেতন ভাতা পেয়ে যাবে। তারা আস্বস্ত হয়ে অবরোধ প্রত্যাহার করে। তিনি শেখ হাসিনাকে সার্কিট হাউসে নিয়ে এসে রাত ১টায় ঘরে ফেরেন। সকালে নাস্তা খাওয়ার সময় শেখ হাসিনা তাকে জিজ্ঞেস করেন আপনি শ্রমিকদের বেতন দেওয়ার যে ওয়াদা করেছেন সেটি কীভাবে রক্ষা করবেন? কত টাকা? উত্তরে তিনি জানালেন, আড়াই কোটি টাকার মতো তাদের বেতন বকেয়া। তখন বিজেএমসির চেয়ারম্যান ছিলেন সাবেক সচিব মোফাজ্জল করিম। তার সঙ্গে যোগাযোগ করে সেদিন এম এ মান্নান শ্রমিকদের পাওনা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন। এম এ মান্নান জানান, সেদিন তিনি শেখ হাসিনাকে বলেছিলেন, ‘আমি আপনার সঙ্গে কাজ করতে চাই’। শেখ হাসিনা জানতে চেয়েছিলেন সেটি কীভাবে? তিনি বলেছিলেন আপনি চাইলে আপনার একান্ত সচিব করে নিতে পারবেন। তখন শেখ হাসিনা বলেছিলেন, প্রশাসনে দায়িত্বের সঙ্গে কাজ করতে থাকেন। এই দিন থাকবে না। একদিন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসবে। তখন আমি আপনাকে খুঁজে নেব। এখন চাকরির ঝুঁকি নেওয়ার প্রয়োজন নেই। অভিজ্ঞতা আরও অর্জন করেন। ৯৬ সালের নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার আবু হেনা, এম এ মান্নানকে অতিরিক্ত সচিব হিসেবে নির্বাচন কমিশনে নিয়ে গেলে আওয়ামী লীগ নেতা আবদুস সামাদ আজাদ ও তোফায়েল আহমেদের সঙ্গে তার নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। বেশি ছিল সামাদ আজাদের সঙ্গে। শেখ হাসিনা জানতেন সেই সময় তিনি আইন ও বিধি-বিধানের মধ্যে কতটা সহযোগিতা করেছেন। আওয়ামী লীগ শাসন আমলে তিনি জেনেভায় নিয়োগ পেয়ে চলে যান। কিন্তু ২০০১ সালের নির্বাচনের সময় প্রধান নির্বাচন কমিশনার আবু সাঈদ তাকে সচিব করে নিতে চাইলে তাকে দেশে আনা হয়। কিন্তু বিএনপি মহাসচিব আবদুল মান্নান ভূঁইয়া বিবৃতি দিয়ে প্রতিবাদ জানালে তাকে আর সেখানে নেওয়া হয়নি। পরবর্তিতে বিসিক চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি চাকরি থেকে অবসর নেন। বিএনপি-জামায়াত শাসন আমলে আবদুস সামাদ আজাদের মৃত্যুতে তার আসন শূন্য হলে তিনি সেখানে উপনির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়ে শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেন। শেখ হাসিনা জানান, তার দল নির্বাচন বয়কট করছে। তবে তিনি যদি নির্বাচন করেন তাতে তার আপত্তি নেই এবং জেলা আওয়ামী লীগকে সহযোগিতা করতে বলবেন। সেই উপনির্বাচনে জেলা আওয়ামী লীগ তাকে সহযোগিতা করেনি। মাত্র অল্প ভোটে পরাজিত হয়ে তিনি শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে বিস্তারিত জানান। পরে আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। ২০০৬ সালের নির্বাচনেও তিনি মনোনয়ন পেয়েছিলেন। পরে সে নির্বাচন আওয়ামী লীগ বর্জন করে এবং বাতিল হয়। ১/১১ এর পর ২০০৮ সালের নির্বাচনে শেখ হাসিনা তাকে মনোনয়ন দেন। তিনি বিজয়ী হয়ে আসেন। আবুল মাল আবদুল মুহিত অর্থমন্ত্রী থাকা কালে তিনি অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী হন। এবার পরিকল্পনামন্ত্রী হিসেবে শুরু থেকেই দায়িত্ব পালন করছেন। এম এ মান্নান জানান, কর্ণফুলী টানেলের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে আগামীতে পদ্মাসহ নানা জায়গায় টানেল নির্মাণের পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। তিনি জানান, পদ্মা সেতুর কাজ এই সর্বনাশা নদীর গতি প্রকৃতির বৈরিতার কারণে শেষ হতে বিলম্ব হলেও শেখ হাসিনার গৃহীত সব মেগা প্রকল্প ২০২৪ সালের মধ্যেই শেষ হবে। তিনি জানান, সেতু নির্মাণে নদীর গতি পথ অনেক সময় বাধাগ্রস্ত হয়। পরিবেশ বিপর্যয় হয়। সেটিও তারা বিচার-বিবেচনা করছেন। যমুনা নদীর ওপর তৃতীয় যমুনা সেতু হবে আগামীতে।
 
                         
                                     
                                                             
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                        