শিরোনাম
শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

নিরপেক্ষ সিটি ভোটে হার্ডলাইনে প্রধানমন্ত্রী

শাবান মাহমুদ

নিরপেক্ষ সিটি ভোটে হার্ডলাইনে প্রধানমন্ত্রী

পোস্টারে ছেয়ে গেছে ঢাকা মহানগরী -বাংলাদেশ প্রতিদিন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আসন্ন ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন যে কোনো মূল্যে বিতর্কের ঊর্ধ্বে রাখতে বলেছেন। এ ব্যাপারে তিনি হার্ডলাইনে। দলের শীর্ষ নেতাদেরই শুধু নয়, সরকারের দায়িত্বশীল মন্ত্রী, এমপি থেকে বিভিন্ন সংস্থার দায়িত্বশীলদের সঙ্গে বৈঠকে তাঁর এ মনোভাব জানিয়ে দিয়েছেন। দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র জানায়, ওই সব বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিষ্কার জানিয়েছেন, সিটি নির্বাচন হবে অবাধ, গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ। নগরবাসী ভোট প্রয়োগের মাধ্যমে তাদের নগরপিতা নির্বাচিত করবেন।

সূত্রগুলো জানিয়েছে, স্থানীয় সরকারের ভোট হলেও ঢাকা সিটিকে গুরুত্বের সঙ্গেই নিয়েছে আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড। বির্তকমুক্ত নির্বাচন এবং দলীয় প্রার্থীর জয় চায় সরকার। এজন্য দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা দক্ষিণে সিটি ভোটের সমন্বয়কের দায়িত্ব দিয়েছিলেন প্রবীণ নেতা আমির হোসেন আমু ও উত্তরে তোফায়েল আহমেদকে। দুই প্রবীণ রাজনীতিকই সংসদ সদস্য হওয়ায় সরাসরি নির্বাচনী প্রচারে নামতে পারছেন না। নির্বাচন কমিশনের আচরণবিধি মেনে চলতে গিয়ে তারা সরাসরি প্রচার থেকে দূরে রয়েছেন। কিন্তু যারা এমপি-মন্ত্রী নন, এমন নেতাদের ঐক্যবদ্ধ প্রচারণায় নামার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

টানা তৃতীয় মেয়াদে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার গত ৭ জানুয়ারি এক বছর পূর্ণ করেছে। বিগত বছরে রাজপথের বিরোধী দল বিএনপিকে মোকাবিলা করতে হয়নি। এখন সিটি ভোটকে সামনে রেখে বিএনপি ইস্যু খোঁজার চেষ্টা করবে। কিন্তু সরকার কোনোভাবেই বিএনপির হাতে ইস্যু তুলে দিতে রাজি নয়। সে কারণেই সরকার দ্বিতীয় বছরের শুরুতেই বিতর্কিত সিটি ভোট করে বিএনপির হাতে ইস্যু তুলে দিতে চায় না। আওয়ামী লীগ ও সরকারের নীতিনির্ধারকরা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলীয় ও সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে অবাধ-গ্রহণযোগ্য ভোট করার পক্ষে মত দিয়ে পরিষ্কার বলেছেন, কেউ যেন বাড়াবাড়ি না করে। জনগণ যাকে খুশি নির্বাচিত করবে। এদিকে গত রবিবার প্রধানমন্ত্রী সরকারি সফরে আবুধাবি যাওয়ার পথে বিমানবন্দরে সরকারের কয়েকজন সিনিয়র মন্ত্রী ও বিভিন্ন বাহিনীর প্রধানগণের সঙ্গে আলাপকালে অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করার নির্দেশ দেন। একাধিক সিনিয়র মন্ত্রীর সঙ্গে আলাপকালে তারা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর মনোভাব থেকে আমারা পরিষ্কার ধারণা পেয়েছি, যেনতেন নয়, সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয় এমন একটি নির্বাচন করতে হবে। এতে ফলাফল যাই আসুক তাতে আওয়ামী লীগেরই লাভ হবে।

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘প্রশ্নবিদ্ধ ও বিতর্কিত নির্বাচন করতে চাই না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিষ্কার বলেছেন, নির্বাচন নিরপেক্ষ হতে হবে। নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন করবে। সরকার সব ধরনের সহযোগিতা করবে। রেজাল্ট যেটাই হোক আমরা মেনে নেব।’ সরকার ও দলের একাধিক সূত্র বলেছে, ঢাকা সিটি ভোট গ্রহণযোগ্য করে দলীয় প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত করা হবে। অন্যদিকে সুষ্ঠু ভোটে দলীয় প্রার্থী পরাজিত হলেও অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ভোট বিতর্ক যেমন দূর হবে তেমনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সরকারের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে। কারণ আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই দেশের মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার নিশ্চিত হয়েছে। সূত্রগুলোর মতে, সিটি মেয়র পদে হারলেও যেমন সরকার পতন হবে না, আবার বিতর্কিত নির্বাচন করে বিএনপির হাতে ইস্যু তুলে দেওয়া হবে না। নির্বাচনে সরকারের গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানোর সুযোগ কাজে লাগাবে আওয়ামী লীগ। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘সিটি ভোটের প্রচার-প্রচারণা শুরু হওয়ার পর থেকেই বিএনপি নানাভাবে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছে। কিন্তু আমরা সতর্ক রয়েছি। সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ভোটই আমাদের প্রথম চাওয়া। আমরা বিতর্কিত নির্বাচন করতে চাই না। এ ব্যাপারে দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর নির্দেশনা রয়েছে।

সর্বশেষ খবর