বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

এবার ডাকঘর সঞ্চয়ে লাগাম টানতে চাইছে সরকার

সুদের হার কমাতে চিঠি

রুকনুজ্জামান অঞ্জন

সঞ্চয়পত্রের উৎসে কর আরোপের পর এবার ডাকঘর সঞ্চয়ের সুদহার কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। আর তা বাস্তবায়ন করতে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়কে চিঠিও দিয়েছে তারা। তবে অর্থ বিভাগের এ ধরনের চিঠির পর হতাশা প্রকাশ করেছেন ডাক বিভাগের কর্মকর্তারা। তারা জানান, ডিজিটাল প্রযুক্তির কারণে এমনিতেই ডাক বিভাগের কার্যক্রম ছোট হয়ে আসছে। ডাকঘর সঞ্চয়সহ বেশ কিছু স্কিমের মাধ্যমে সংস্থাগুলো কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এ কার্যক্রমেও অনেক সীমাবদ্ধতা আছে। এক ডাকঘরে টাকা জমা রেখে অন্য ডাকঘর থেকে সে টাকা উত্তোলন করা যায় না। ফলে ডাকঘর সঞ্চয় স্কিমে মানুষের আস্থাও কম। এখন সুদের হারে লাগাম টেনে ধরা হলে মানুষ আর সঞ্চয় রাখতেও ডাকঘরে আসবে না। জানা গেছে, ডাকঘর সঞ্চয় স্কিমে বিভিন্ন মেয়াদের আমানতের বিদ্যমান সুদহার সাড়ে ৭ থেকে ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ পর্যন্ত। একক নামে সর্বোচ্চ ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করা যায় এসব স্কিমে। এটিতেই এখন লাগাম টেনে ধরতে চাইছে অর্থ মন্ত্রণালয়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ডাকঘর সঞ্চয়ে যেসব ব্যক্তি আমানত রাখেন তারা ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী। বিশেষ করে নারী ও সাধারণ সঞ্চয়কারীরা ছোট ছোট অঙ্কে এখানে আমানত রাখেন। এমন একটি সঞ্চয় খাতের সুদহার কমানো হলে ক্ষুদ্র আমানতকারীদের মধ্যে মারাত্মক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবে। অবশ্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, এটি সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্ত। ওপর থেকে ‘গ্রিন সিগন্যাল’ পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে সুদহার কমাতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চিঠি দিয়েছেন তারা। তিনি আরও বলেন, সরকার ব্যাংক ঋণ ও আমানতের সুদহার কমানোর সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করছে, যা এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে। এমনকি সরকারি আমানতের বিপরীতে সুদের হারও সাড়ে ৫ থেকে ৬ শতাংশ নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এ অবস্থায় আমাদের পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সঞ্চয়পত্রের পাশাপাশি ডাকঘর সঞ্চয় স্কিমে সুদের হার বেশি। এটিও কমানো দরকার। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (ডাক) মো. শাহাদাৎ হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘সুদের হার কমানোর বিষয়ে চিঠি পাওয়ার পর ডাক বিভাগের মহাপরিচালকের কাছে মতামত চাওয়া হয়েছে। মতামত পেলে এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলব আমরা।’ তিনি বলেন, ডাকঘর সঞ্চয় স্কিমে মূলত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা ছোট ছোট আমানত রাখেন। এখানে সঞ্চয়পত্রের মতো খুব বেশি বিনিয়োগ আসে না। মূলত যারা ব্যাংকে আমানত রাখেন না, তারাই ডাকঘর সঞ্চয় স্কিমে বিনিয়োগ করেন। এ খাতের সুদহার কমালে নিম্মমধ্যম আয়ের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এটি চিন্তার বিষয়।

সর্বশেষ খবর