শনিবার, ৭ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

মিডিয়াকর্মীদের অধিকার প্রশ্নে সরকার অবগত : অর্থমন্ত্রী

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

সম্প্রচার মাধ্যম কর্মীদের সুরক্ষা নিয়ে আয়োজিত এক সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, সরকার মিডিয়াকর্মীদের অধিকার প্রশ্নে অবগত আছে। আপনাদের সব কাজের সঙ্গে আমি আছি। প্রধানমন্ত্রী আছেন। একই অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সম্প্রচার আইন ও গণমাধ্যমকর্মী আইনের মাধ্যমে দেশের সম্প্রচারকর্মীদের চাকরির সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে।  গতকাল দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-ছাত্র কেন্দ্র-টিএসসি মিলনায়তনে ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার-বিজেসির দ্বিতীয় সম্মেলনে পৃথক দুটি পর্বে এসব কথা বলেন দুই মন্ত্রী। অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে ‘নীতি সংলাপ : কর্মী সুরক্ষা’ শীর্ষক সম্প্রচার সম্মেলনে বিজেসি সভাপতি রেজওয়ানুল হক রাজার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। বিজেসির সদস্য সচিব শাকিল আহমেদের সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম ও ঢাকায় নিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার জাভেদ প্যাটেল। হাছান মাহমুদ বলেন, সম্প্র্রচারমাধ্যমের সঙ্গে যাঁরা যুক্ত আছেন, অবশ্যই তাঁদের চাকরির সুরক্ষা প্রয়োজন। আমরা চেষ্টা করব খুব শিগগির গণমাধ্যমকর্মী আইন মন্ত্রিসভায় উপস্থাপনের জন্য। আগামী সংসদ অধিবেশনে সেটি নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করব। গণমাধ্যমকর্মী আইন যখন চূড়ান্ত হবে, তখন গণমাধ্যমকর্মীদের চাকরির আইনগতভাবে সুরক্ষা দেওয়া সম্ভব হবে। সম্প্রচার আইন প্রসঙ্গে বলেন, সম্প্র্রতি আইন মন্ত্রণালয় এটির ভেটিংয়ের কাজ শুরু করেছে। আমরা আশা করছি, দ্রুত ভেটিং হয়ে আমাদের কাছে পৌঁছে যাবে। আপনারা জানেন, সম্প্রচার নীতিমালা রয়েছে, এটি আইনে পরিণত হবে। তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরেই দেশে বেসরকারি খাতে টেলিভিশন- বেতারসহ সম্প্রচার জগতের যাত্রা শুরু হয়। গত এক যুগে এই খাতের ব্যাপক বিকাশ ঘটেছে। কিন্তু এটির পাশাপাশি সম্প্রচারের ক্ষেত্রে যে শৃঙ্খলা দরকার ছিল, বিশেষ করে টেলিভিশন সম্প্রচারের ক্ষেত্রে যে শৃঙ্খলা ও ডিজিটালাইজেশন প্রয়োজন ছিল, সেটি হয়নি। পরে ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের ট্রাস্টি সৈয়দ ইশতিয়াক রেজার সভাপতিত্বে সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, তথ্যমন্ত্রী বলে গেছেন, তিনি একটি আইন করছেন। সেই আইনসহ সব আইন, যা ভালো হবে আপনাদের জন্য, আমরা নিখুঁতভাবে সেই আইন প্রণয়ন করব। কিছুটা সময় লাগছে। কিন্তু ধরে নেন এই আইন আমরা করতে পারব। প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত সোচ্চার এ ব্যাপারে। তিনি  বলেন, এ শিল্পকে রক্ষা করতে হলে শুধু পারমিশন দিলে হবে না। ধারণ করতে হবে। একটি দেশের নির্ধারিত অবস্থানে অনেক উপাদান রয়েছে। আর্থিক ও সামাজিক খাত, সংস্কৃতি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের হাত ধরে এগিয়ে যায় দেশ। আমি বিশ্বাস করি, আমার দেশের ইলেকট্রনিক এবং প্রিন্ট মিডিয়া সামাজিকভাবে অসাধারণ অগ্রযাত্রায় ভূমিকা রাখছে। এদেশের সব ভালো কাজের সঙ্গে তারা সম্পৃক্ত। আমাদের অর্জনগুলো তারা এদেশের মানুষকে জানাচ্ছে। পাশাপাশি বিদেশেও তারা তাদের অবস্থান জানান দিচ্ছে। এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান, নিউজ টোয়েন্টিফোরের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম, একাত্তর টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল বাবু, আরটিভির সিইও সৈয়দ আশিক রহমান প্রমুখ। তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান বলেন, আজকে সবার বক্তব্য একই ২০ হাজার কোটি টাকার ইন্ডাস্ট্রিকে রক্ষা করতে হবে। সম্প্রচার আইন, ক্যাবল অপারেটর আইন, ক্যাবল অপারেটরদের ডিজিটালাইজড করতে হবে। গণমাধ্যম কর্মী আইনসহ অনেক পদক্ষেপ তো আমরা গ্রহণ করছি। আপনাদের প্রত্যাশা পূরণে আমি জীবন দিয়ে কাজ করতে চাই। বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং মিথ্যাচারভিত্তিক ইউটিউবের প্রোপাগান্ডা চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে। যে যার মতো করে অনলাইন টেলিভিশন খুলে বসে আছে। এগুলো বন্ধ করতে হবে। বন্ধের জন্য এই সম্প্রচার কেন্দ্রের দৃষ্টিভঙ্গি ছিল। আমি মনে করি, ঐক্যবদ্ধ অবস্থানে থাকলে সংকটগুলো দ্রুত সমাধান হবে।

সর্বশেষ খবর