বুধবার, ১৯ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা

মানব পরীক্ষার ধাপে ২০ ভ্যাকসিন

কোনটির কত দাম

প্রতিদিন ডেস্ক

মানব পরীক্ষার ধাপে ২০ ভ্যাকসিন

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার ও ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলো করোনাভাইরাস প্রতিরোধী ভ্যাকসিন তৈরিতে প্রতিযোগিতা শুরু করেছে। ২০০টির বেশি দেশ ও কোম্পানি ভ্যাকসিন তৈরির কাজ চালাচ্ছে। এর মধ্যে ২০টি ভ্যাকসিন মানব পরীক্ষার ধাপে রয়েছে। এই অবস্থায় সবার নজর কোন দেশ বা কোন কোম্পানির ভ্যাকসিনের দাম কত।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়, কার্যকর ভ্যাকসিন বাজারে আনতে দ্রুত কাজ চালিয়ে যাচ্ছে চীনের চায়না ন্যাশনাল ফার্মাসিউটিক্যাল গ্রুপ (সিনোফার্ম)। প্রতিষ্ঠানটির তৈরি করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য ভ্যাকসিনের দুই ডোজের দাম এক হাজার ইউয়ানের (১৪৪.২৭ মার্কিন ডলার) বেশি হবে না।  সিনোফার্মের চেয়ারম্যান লিউ জিনহেং দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছেন। সিনোফার্ম বলেছে, তাদের সম্ভাব্য ভ্যাকসিনটি জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য এ বছরের শেষ নাগাদ তৈরি হতে পারে। তাদের ভ্যাকসিনটি সর্বশেষ মানব পরীক্ষার ধাপে বা ভ্যাকসিন পরীক্ষার তৃতীয় ধাপে রয়েছে। আরব আমিরাতে ভ্যাকসিনটির কার্যকারিতা প্রমাণে ও অনুমোদন পেতে হাজারো মানুষের ওপর পরীক্ষা চালানো হচ্ছে। সিনোফার্মের চেয়ারম্যান লিউ জিনহেং গুয়ানমিং বলেন, ‘ভ্যাকসিনের দাম আকাশছোঁয়া হচ্ছে না। প্রতি ডোজের জন্য কয়েকশ ইউয়ান খরচ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। দুই  ডোজ মিলিয়ে এর খরচ এক হাজার ইউয়ানের বেশি হবে না।’ এর আগে এ মাসের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের মডার্না ইনকরপোরেশন জানায়, তাদের পরীক্ষামূলক ভ্যাকসিনটির প্রতি ডোজের দাম হতে পারে ৩২ থেকে ৩৭ মার্কিন ডলার। এদিকে গত মাসে মার্কিন সরকার ফাইজার ও বায়োএনটেকের সঙ্গে তাদের পরীক্ষামূলক ভ্যাকসিনটি পেতে প্রতি ডোজ ৪০ মার্কিন ডলার করে দাম ধরেছে। বিল গেটস ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে এ ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সেরাম ইনস্টিটিউটকে অর্থ দেওয়া হচ্ছে। এ অর্থে ১০ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন তৈরি করা হবে। প্রতি ডোজ ভ্যাকসিনর দাম ধরা হতে পারে মাত্র ৩ মার্কিন ডলার। বিল গেটস বলেন, যেসব টিকা উন্নয়নশীল বিশ্বের জন্য সাশ্রয়ী দামে তৈরি করা যাবে, তিনি সেগুলোকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। এর মধ্যে রয়েছে ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও নোভাভ্যাক্সের ভ্যাকসিন। এ ভ্যাকসিন দুটি কম খরচে সহজে উৎপাদন করা যায়। এ পর্যন্ত মানব পরীক্ষার পর্যায়ে পৌঁছানো একেকটি ভ্যাকসিন একেক রকম ও ভিন্ন উপাদানে তৈরি হচ্ছে। মডার্না ও ফাইজারের মতো শীর্ষ প্রতিদ্বন্দ্বী কয়েকটি ভ্যাকসিন বেশি খরচের। কারণ, এগুলো আরএনএ ভ্যাকসিন, যা তৈরিতে খরচ বেশি। এনপিআরের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, মডার্নার ভ্যাকসিনের দাম হতে পারে ৩২ থেকে ৩৭ মার্কিন ডলার আর ফাইজারের ভ্যাকসিনের দাম পড়তে পারে প্রায় ২০ মার্কিন ডলার।

রাশিয়ার ভ্যাকসিন নিতে মেক্সিকোর আগ্রহ : সবার আগে রাশিয়ার ভ্যাকসিন নিতে চান মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাদর। সোমবার তিনি বলেছেন, রাশিয়ার ভ্যাকসিন কার্যকর কিনা, সে পরীক্ষায় যেসব স্বেচ্ছাসেবীর ওপর ভ্যাকসিনটি প্রয়োগ করা হবে, এর মধ্যে প্রথম হতে চান তিনি। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। দুই মাসেরও কম সময়ের মধ্যে মস্কোর ভ্যাকসিন অনুমোদন ও প্রথম ব্যাচের ভ্যাকসিন তৈরি করে মানুষের ওপর প্রয়োগের বিষয়টি কিছু বিজ্ঞানীর মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছে। তারা বলছেন, কেবল ১০ শতাংশ ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা সফল হওয়ার নজির রয়েছে। সেখানে তাড়াহুড়ো করে রাশিয়া তাদের ভ্যাকসিন অনুমোদন দিয়ে ফেলেছ। কিছু গবেষক বলছেন, তারা আশঙ্কা করছেন, নিরাপত্তার কথা বিবেচনা না করে কেবল সম্মানের দিক বিবেচনাতেই রাশিয়া ভ্যাকসিনের অনুমোদন দিয়েছে। নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমিই প্রথম ভ্যাকসিনটি গ্রহণ করব।’ রাশিয়ার ভ্যাকসিন ছাড়াও মেক্সিকো ও আর্জেন্টিনার সরকার ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকার সঙ্গে ভ্যাকসিন উৎপাদনের জন্য চুক্তি করেছেন। মেক্সিকোর ডেপুটি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্থা ডেলগাদো বলেন, তার দেশের ২০ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন প্রয়োজন হবে। যদি তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা সফল হয়, তবে আগামী বছরের এপ্রিল থেকে ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে।

মেক্সিকোতে ৫ লাখ ২২ হাজার ১৬২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে, আর মারা গেছে ৫৬ হাজার ৭৫৭ জন।

সর্বশেষ খবর