শুক্রবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

নভেম্বরের মধ্যেই বাজারে ভ্যাকসিন ছাড়বে যুক্তরাষ্ট্র

প্রতিদিন ডেস্ক

নভেম্বরের মধ্যেই বাজারে ভ্যাকসিন ছাড়বে যুক্তরাষ্ট্র

ক্লিনিক্যাল ডাটা ছাড়াই ‘নির্বাচনী চমক’ হিসাবে ট্রাম্প প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আগামী নভেম্বরের মধ্যে করোনার ভ্যাকসিন ছাড়তে যাচ্ছে। এ বিষয়ে এরই মধ্যে প্রশাসন থেকে অঙ্গরাজ্যগুলোকে প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে এ সময়ের মধ্যে কোন ভ্যাকসিন বাজারে ছাড়া হবে- সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলা হয়নি। সূত্র : রয়টার্স ও হিন্দুস্তান টাইমস।

প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি) থেকে রাজ্যগুলোর কাছে চিঠি দিয়ে বলা হয়েছে, নভেম্বরে আসছে করোনাভাইরাসের টিকা। আর এই টিকা বিতরণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্যগুলোকে প্রস্তুত থাকতে হবে। যাদের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি, তাদের হয়তো অক্টোবরের শেষ দিকেই এই টিকা দেওয়া হবে। রাজ্যগুলোর গভর্নরদের সিডিসি অনুরোধ করেছে, বণ্টন কেন্দ্রগুলো যেন দ্রুত তৈরি করা হয়, যাতে ১ নভেম্বর থেকে এগুলো পুরোদমে কাজ করতে পারে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, নভেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। কয়েক দিন আগেই ট্রাম্প বলেছিলেন, বছর শেষ হওয়ার আগেই কভিডের টিকা মিলবে। কিন্তু বলা হচ্ছে নির্বাচনের আগেই শুরু হবে টিকা বিতরণের প্রক্রিয়া। এ প্রসঙ্গে সিডিসি-এর মুখপাত্র জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে তৎপরতা শুরুর জন্য তারা রাজ্যগুলোকে মোটের ওপর বলেছেন কবে থেকে পাওয়া যেতে পারে টিকা। সীমিত সংখ্যক টিকা অক্টোবর মাসেও রাজ্যগুলোর কাছে পৌঁছাতে পারে। ৫০টি রাজ্য ও পাঁচটি বড় শহরের স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছে সিডিসি। শুধু একটি নয়, অক্টোবরের শেষ নাগাদ তারা দুটি টিকা বাজারে ছাড়তে পারে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ করোনা বিশেষজ্ঞ অ্যান্থনি ফাউচি জানিয়েছেন, টিকার ক্লিনিক্যাল ডেটা পেতেই নভেম্বর বা ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় লেগে যাবে। ফলে তার আগেই কীভাবে টিকা বাজারে আসবে- তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। তা ছাড়া সিডিসি ঠিক কোন প্রতিষ্ঠানের টিকা সরবরাহ করবে- সেটিও নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। 

হু’র ভ্যাকসিন উদ্যোগে শামিল হতে পারে চীন : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) নেতৃত্বে করোনা ভ্যাকসিন তৈরি ও বণ্টনের যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তাতে শামিল হবে না বলে জানিয়েছে আমেরিকা। এবার সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে এই উদ্যোগে শামিল হতে পারে চীন। এর ফলে আন্তর্জাতিক সংস্থাটিতে বেইজিংয়ের গুরুত্ব অনেকটাই বৃদ্ধি পেতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নেতৃত্বে ১৫০-এর বেশি দেশ ভ্যাকসিনস গ্লোবাল অ্যাক্সেস ফেসিলিটি বা কোভ্যাক্স তৈরি করেছে। আন্তর্জাতিক স্তরে পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে ভ্যাসকিন তৈরি ও তা বিতরণ করতেই এই উদ্যোগ। কিন্তু এতে রাজি নয় আমেরিকা। মঙ্গলবার ওয়াশিংটন জানিয়েছে, ভ্যাকসিনের ব্যাপারে হু’র নজরদারি তারা মানবে না। এই ভ্যাকসিন যাতে নিরাপদ হয়ে মানুষের কাছে পৌঁছায় সেটা আমেরিকা নিশ্চিত করবে, তবে হুর নেতৃত্বে নয়। তারপরই বুধবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনইং বলেন, ‘কোভ্যাক্স ও চীনের উদ্দেশ্য একই।’ এর আগে গত মে মাসে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং জানিয়েছিলেন, করোনা টিকা তৈরি হলে বিশ্বের সব দেশগুলোর সঙ্গে তা ভাগ করে নেবে বেইজিং। উল্লেখ্য, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনেক আগেই বলেছে, করোনা মোকাবিলায় ভ্যাকসিন সমহারে বণ্টন হওয়াটা খুব জরুরি। বিত্তবান দেশগুলো যদি অর্থের বলে ভ্যাকসিন কুক্ষিগত করে রাখে তাহলে কোনো কাজই হবে না। তাই ভ্যাকসিন যাতে উন্নয়নশীল এবং অনুন্নত দেশগুলোতেও সমানভাবে বণ্টন করা হয়, তা নিশ্চিত করতে বিশ্বের সব দেশকে একটা নতুন আন্তর্জাতিক জোটে আহ্বান করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। কিন্তু আমেরিকা সাফ জানিয়ে দিয়েছে তারা ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নেতৃত্বে কোনো যৌথ প্ল্যাটফরমে অংশ নিতে পারবে না।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর