মঙ্গলবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

চট্টগ্রামে শিশু ধর্ষণ হত্যায় ফাঁসি আটজনের

টাঙ্গাইলে তিনজনের মৃত্যুদন্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম ও টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

চট্টগ্রামে তিন বছর আগে ধর্ষণের পর শিশু মীমকে হত্যার মামলায় আট আসামির ফাঁসির দন্ড দিয়েছে আদালত। পাশাপাশি আদালত প্রত্যেক আসামিকে ১ লাখ টাকা করে অর্থদন্ড দিয়েছে। গতকাল দুপুরে চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক মো. জামিউল হায়দার এ রায় দেন। দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন- মো. বেলাল হোসেন ওরফে বিজয় (১৮), মো. রবিউল ইসলাম ওরফে রুবেল (১৬), মো. হাছিবুল ইসলাম ওরফে লিটন (২৬), মো. আকসান মিয়া প্রকাশ হাসান (১৮), মো. সুজন (২০), মো. মেহেরাজ প্রকাশ টুটুল (৩২), মনিরুল ইসলাম মনু (৪৯) ও শাহাদাত  হোসেন সৈকত (১৯)। এদের মধ্যে শাহাদাত হোসেন সৈকত শুরু থেকেই পলাতক। রায় ঘোষণার পর সাত আসামিকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২১ জানুয়ারি নগরের আকবর শাহ এলাকার আয়শা মমতাজ মহল নামের একটি ভবনে নিয়ে প্রথমে ধর্ষণ ও পরে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয় ৯ বছরের শিশু ফাতেমা আক্তার মীমকে। আলোচিত এ মামলায় প্রত্যক্ষদর্শীসহ ১৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া হয়। মীম আকবর শাহ এলাকার ফাতেমাতুজ জোহরা হিফজুল কোরআন মহিলা মাদরাসার দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ওই বছরের ২৫ জানুয়ারি মামলার পাঁচ আসামি মো. বেলাল হোসেন ওরফে বিজয়, মো. রবিউল ইসলাম, মো. হাছিবুল ইসলাম, মো. আকসান মিয়া ও মো. সুজন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নাজমুল হোসাইনের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। মায়ের সঙ্গে বিরোধের জের ধরে শিশু ফাতেমা আক্তার মীমকে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। শিশুটির মায়ের সঙ্গে আসামি  বেলাল হোসেন বিজয়ের মায়ের বিরোধ ছিল। তার জেরেই বিজয় অন্য আসামিদের যোগসাজশে তাকে তুলে গণধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করে। ঘটনার দিন রাত ১০টার দিকে আকবর শাহ বিশ্বব্যাংক কলোনির ছয়তলার একটি ভবনের দ্বিতীয় তলার সিঁড়ির পাশ থেকে শিশুটির মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এম এ নাসের বলেন, মীম হত্যা মামলায় আট আসামির সবাইকে ফাঁসির দন্ডের পাশাপাশি ১ লাখ টাকা করে অর্থদন্ড দিয়েছে আদালত।

দুই শিশু অপহরণ ও হত্যায় তিনজনের ফাঁসি : টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে দুই শিশুকে অপহরণ ও পরে হত্যার ঘটনায় তিনজনের মৃত্যুদন্ড, তিনজনকে আমৃত্যু এবং তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক সাউদ হাসান গতকাল এ রায় দেন। এ ছাড়া সাজা পাওয়া প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। মৃত্যুদন্ড পাওয়া আসামিরা হলো- বাহাদুর মিয়া, রনি মিয়া ও মিল্টন। এ ছাড়া আ. মালেক, শাহিনুর ও জহিরুলকে আমৃত্যু এবং শামিম মিয়া, আরিফ ও জাকির হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেওয়া হয়। মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৬ সালের ২৭ জানুয়ারি বিকালে মির্জাপুর উপজেলার হারিয়া বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা দেখতে যায় ঢাকার ধামরাইর দেলোয়ার হোসেনের ছেলে শাকিল (১০) ও আবু বক্করের ছেলে ইমরান (১১)। সেখান থেকে অপহরণের শিকার হন চতুর্থ শ্রেণির ওই দুই শিক্ষার্থী। পরদিন মোবাইল ফোনে ২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। ২৯ জানুয়ারি রাতে মির্জাপুর উপজেলার হাড়িয়া গ্রামের একটি লেবু বাগান থেকে ওই দুই শিশুর গলা কাটা লাশ উদ্ধার করা হয়। ৩০ জানুয়ারি এক শিশুর মা বাদী হয়ে মামলা করেন। পুলিশ ১১ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে চার্জশিট দেয়। দুজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের অব্যাহতি দেয় আদালত। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী খোরশেদ আলম রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে দ্রুত কার্যকরের দাবি জানান।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর