কথিত শিশুবক্তা রফিকুল ইসলাম মাদানীর উসকানিতে বায়তুল মোকাররম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, নাশকতা ও ব্যাপক ধ্বংসাত্মক ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছে র্যাব। বুধবার রাতে গাজীপুর মহানগর পুলিশের গাছা থানায় তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় এসব অভিযোগ করা হয়েছে। মামলাটি করেন র্যাব-১ এর ডিএডি মো. আবদুল খালেক।
গতকাল সকালে গাজীপুর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম শরিফুল ইসলামের আদালতে তাকে হাজির করা হলে শুনানি শেষে বিচারক রফিকুলকে জেলা কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এরপর দুপুরে তাকে জেলা কারাগারে নেওয়া হয়েছে। তবে মামলাটি নিজেরা তদন্তের জন্য এরই মধ্যে র্যাবের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এর আগে বুধবার রাষ্ট্রবিরোধী উসকানিমূলক ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে রফিকুল ইসলাম মাদানীকে নেত্রকোনা থেকে আটক করা হয়। তার বিরুদ্ধে করা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, মাদানী গত ১০ ফেব্রুয়ারি রাত ৯টা থেকে ১০টায় গাজীপুরের গাছা থানার বোর্ড বাজারের কলমেশ্বর এলাকার শীতক ফ্যাক্টরির মধ্যে ওয়াজ মাহফিলে বক্তা হিসেবে বিভিন্ন ধরনের রাষ্ট্র তথা সরকারবিরোধী ও আইনশৃঙ্খলা পরিপন্থী বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ডিজিটাল মাধ্যমে প্রদান করেন, যা তার নির্দেশে ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ পেলে দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায়। তার উসকানিমূলক বক্তব্যের ফলে গত ২৬ মার্চ বায়তুল মোকাররম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, নাশকতা ও ব্যাপক ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ সংঘটিত হয়। এজাহারে রফিকুল ইসলাম আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নন বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে। তার জব্দ তিনটি মোবাইল ফোন থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। গত ২৫ মার্চ বিক্ষোভকালে ঢাকার মতিঝিল এলাকা থেকে রফিকুল ইসলাম মাদানীকে আটক করেছিল মতিঝিল থানা পুলিশ। পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। ওই ঘটনার মামলায় তাকে আসামি করা হয়নি। ওই সময় বিক্ষোভ ও হেফাজতে ইসলামের হরতাল থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে ব্যাপক সহিংসতা হয়েছিল। সূত্র জানায়, গাজীপুর মহানগরের বাড়িয়ালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পেছনে মারকাজুন নূর আল ইসলামিয়া নামে একটি আবাসিক মাদরাসা রয়েছে। রফিকুল ইসলাম মাদানুী ওই মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ ও পরিচালক। রফিকুল আটকের পর গতকাল মাদরাসাটির প্রধান ফটকে ভিতর থেকে দুটি তালা ঝুলতে দেখা গেছে এবং দিনের বেলায়ও মাদরাসা ভবনের বাইরের বিদ্যুতের বাতি জ্বলতে দেখা গেছে। জানা গেছে, নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার লেটিরকান্দা গ্রামে রফিকুলের বাড়ি। সেখান থেকেই তাকে আটক করা হয়।