মঙ্গলবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

করোনা সংকট মোকাবিলা করতে হবে ঐক্যবদ্ধভাবে

শফিকুল ইসলাম সোহাগ

করোনা সংকট মোকাবিলা করতে হবে ঐক্যবদ্ধভাবে

এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার

জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেছেন, রাজনীতির ঊর্ধ্বে থেকে ঐক্যবদ্ধভাবে মহামারী করোনা সংকট মোকাবিলা করতে হবে। তিনি বলেন, কভিড-১৯ সারা পৃথিবীকে ঘিরে ফেলছে। জনজীবনকে স্তব্ধ করে দিয়েছে। লাখ লাখ মানুষের জীবন কেড়ে নিচ্ছে। বহু জ্ঞানী-গুণী মানুষও এর থাবা থেকে রক্ষা পাননি। এই নির্মম চিত্র জাতি হিসেবে আমাদের ক্ষতবিক্ষত করেছে। এ মুহূর্তে ঐক্যবদ্ধভাবে এই মহাবিপর্যয় থেকে কীভাবে আমরা জাতিকে রক্ষা করতে পারি সে জন্য একযোগে কাজ করতে হবে। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন তিনি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে জাতীয় পার্টির সাক্ষাৎ বিষয়ে রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, উভয় দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা অন-অ্যারাইভাল ভিসার প্রতি গুরুত্ব দিয়েছি। চিকিৎসা ও ব্যবসার জন্য এটা বাস্তবায়ন প্রয়োজন। তিস্তার পানির কথা বলেছি। এটা আমাদের প্রাণের দাবি। তিনি বলেন, ভারত প্রতিবেশী রাষ্ট্র। প্রতিবেশীর সহযোগিতা উভয় দেশেরই প্রত্যাশা। স্বাধীনতার পর কখনই আমাদের মাঝে দূরত্ব সৃষ্টি হয়নি। মোদির সফরে হেফাজতে ইসলামের বিরোধিতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নরেন্দ্র মোদি প্রতিবেশী দেশের প্রধানমন্ত্রী। আমাদের মেহমান। বাংলাদেশ সব সময়ই অতিথিপরায়ণ দেশ। ’৭১ সালে ১ কোটি মানুষকে আশ্রয় দিয়েছিল ভারত। মুক্তিযুদ্ধে অস্ত্র দিয়েছে, মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রেনিং দিয়েছে, আমি নিজেও ট্রেনিং নিয়েছি। আর সেই দেশের প্রধানমন্ত্রীকে সম্মান জানানো আমাদের দায়িত্ব। বিরোধিতা করে রাষ্ট্রের সম্পদ বিনষ্ট করা অবশ্যই অপরাধ। এ বিষয়ে আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। এইচ এম এরশাদবিহীন জাতীয় পার্টির কার্যক্রম প্রসঙ্গে সাবেক এই মহাসচিব বলেন, এটা মূল্যায়ন করবে দলীয় নেতা-কর্মীরা। আমি দীর্ঘদিন পার্টির মহাসচিব ছিলাম। কেমন ছিলাম তাও মূল্যায়ন করবে নেতা-কর্মীরা। চলার পথে আমার হয়তো কিছু ভুল ছিল। তার জন্য আমি ব্যথিত। আমি এই পার্টির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আছি। তাই আমি চাই দলটা আরও বিকশিত হোক। অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছে দেশ ও জনগণের সেবা করার সুযোগ পাক। এখানে আমিও আমার দায়িত্ব এড়াতে পারি না। যতদিন বেঁচে আছি পল্লীবন্ধু এরশাদের প্রতিষ্ঠিত এ দলের প্রতি আনুগত্য রেখে সব নেতা-কর্মীর মাঝে বেঁচে থাকতে চাই। যেদিন থাকব না নেতা-কর্মী ও জনগণ যেন আমাকে স্মরণ করে এই ভেবেই আমি চলছি। সরকারের করোনা মোকাবিলা প্রসঙ্গে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, সরকারের সফলতা ও ব্যর্থতা নিয়ে একটি গণতান্ত্রিক দেশে কিছু কিছু ক্ষেত্রে মতপার্থক্য থাকতেই পারে। তবে সরকারপ্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতার অভাব আছে বলে আমি একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে বিশ্বাস করি না। বিশ্বের অনেক উন্নত দেশের আগে আমরা ভ্যাকসিন ব্যবহার শুরু করেছি। এটা অবশ্যই প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শিতা, আন্তরিকতা ও জনগণের প্রতি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি প্রসঙ্গে এ বি এম রুহুল আমিন বলেন, করোনার কারণে গভীর সংকটময় সময় অতিক্রম করছি। অর্থনীতি এবং দেশের সার্বিক উন্নয়নও কিছুটা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তা সত্ত্বেও উন্নয়ন থেমে নেই। এখানেই আমাদের সাফল্য। জাতীয় পার্টির কার্যক্রম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সংসদে গঠনমূলক সমালোচনা করে আসছে জাপা। আমরা শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে বিশ্বাসী। সংসদে অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হোক এটা আমাদের কাম্য নয়। জাতীয় পার্টি হরতাল, অবরোধ, ভাঙচুর, জাতীয় সম্পদ বিনষ্ট করার রাজনীতিতে বিশ্বাসী নয়। আমি বিশ্বাস করি সময়ের ব্যবধানে দেশবাসীও এগুলো প্রত্যাখ্যান করেছে। সম্প্রতি দলের পক্ষ থেকে সরকারের কঠোর সমালোচনা করা হচ্ছে-এ প্রসঙ্গে রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, বিরোধী দল হিসেবে আমাদের দায়িত্ব আছে। কোনো কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে দেশের জনগণের স্বার্থে গঠনমূলক বিরোধিতা করাকে যদি কেউ অন্যভাবে ব্যাখ্যা দেয়, সেটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর