শুক্রবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

আমেরিকার দীর্ঘতম যুদ্ধ শেষ করার সময় হয়েছে : বাইডেন

প্রতিদিন ডেস্ক

আমেরিকার দীর্ঘতম যুদ্ধ শেষ করার সময় হয়েছে : বাইডেন

‘আমেরিকার দীর্ঘতম লড়াই শেষ করার এটিই সময়’ বলে উল্লেখ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বুধবার হোয়াইট হাউস থেকে দেওয়া ভাষণে এ কথা বলেন। তিনি উল্লেখ করেন, এখান থেকেই ২০০১ সালে আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলার কথা প্রথম ঘোষণা করা হয়েছিল। বিসিসি, রয়টার্স।

গত এক দশকে আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্য ‘ক্রমাগত অপরিষ্কার’ হয়ে উঠেছে বলেও ভাষণে স্বীকার করেন বাইডেন। তিনি আফগানিস্তানে থাকা আড়াই হাজার মার্কিন সৈন্যের সবাইকে চলতি বছরের ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রত্যাহার করার চূড়ান্ত তারিখ নির্ধারণ করেছেন; যুক্তরাষ্ট্রে আল কায়েদার হামলার ঠিক ২০ বছর পর যা থেকে যুদ্ধটি শুরু হয়েছিল। বাইডেন বলেন, ‘আমরা হামলার শিকার হয়েছিলাম। পরিষ্কার লক্ষ্য নিয়ে আমরা যুদ্ধে গিয়েছিলাম। আমরা ওই লক্ষ্যগুলো অর্জন করেছি।’ ২০১১ সালে মার্কিন সৈন্যরা আল কায়েদার নেতা ওসামা বিন লাদেনকে হত্যা করেছে এবং আফগানিস্তানে সংগঠনটিকে ‘হীনবল’ করে দেওয়া গেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। একই সঙ্গে বলেন, ‘চিরকালীন যুদ্ধটি শেষ করার এটিই সময়।’ উল্লেখ্য, আফগানিস্তানের যুদ্ধে মার্কিন সামরিক বাহিনীর ২ হাজার ৪৪৮ জন সদস্য নিহত হয়েছেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় দুই ট্রিলিয়ন ডলার ব্যয় হয়েছে। ২০১১ সালে আফগানিস্তানে মোতায়েন যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্য সংখ্যা সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠে ১ লাখ ছাড়িয়েছিল। ১ মে, ২০২১ এর মধ্যে আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্য প্রত্যাহার করার চূড়ান্ত সময়সীমা নির্ধারণ করেছিলেন বাইডেনের পূর্বসূরি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউস ছাড়ার আগেই আফগানিস্তান থেকে সব সৈন্য প্রত্যাহার করার চেষ্টা করেছিলেন ট্রাম্প কিন্তু ব্যর্থ হন। ট্রাম্পের বেঁধে দেওয়া তারিখের পরিবর্তে সেই দিন থেকেই সৈন্য প্রত্যাহার শুরু করে ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে শেষ করার ঘোষণা দিয়েছেন বাইডেন। বাইডেন বলেন, ‘এখন আমি চচুর্থ আমেরিকান প্রেসিডেন্ট যে আফগানিস্তানে আমেরিকান সৈন্যদের উপস্থিতি দেখভাল করছে। দুজন রিপাবলিকান, দুজন ডেমোক্র্যাট। আমি এই দায়িত্ব পঞ্চম জনের কাছে ঠেলে দেব না। খবরে বলা হয়, এই প্রত্যাহারের মাধ্যমে বাইডেন তাঁর প্রেসিডেন্ট মেয়াদের শুরুতেই এমন একটি ঝুঁকিকে বরণ করে নিচ্ছেন, যা তার উত্তরসূরিদের জন্য বড় ধরনের চাপ হয়ে দেখা দিতে পারে; যেমন- আল কায়েদা নিজেদের পুনর্গঠন করে নিতে পারে অথবা তালেবান বিদ্রোহীরা যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থিত কাবুল সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারে। এ ব্যাপারে ব্রাসেলসে ন্যাটো কর্মকর্তাদের বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন জানিয়েছেন, আফগানিস্তানে ন্যাটোর কমান্ডে থাকা বিদেশি সৈন্যরা যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাহারের সঙ্গে সমন্বয় করে ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে দেশটি ছাড়বে। ব্লিনকেন বুধবার পাকিস্তানের সেনাবাহিনী প্রধানকে ফোন করে কথা বলেছেন এবং আফগানিস্তানের শান্তি প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করেছেন বলে পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর গণমাধ্যম শাখা জানিয়েছে। টুইটারে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি লিখেছেন, তিনি বাইডেনের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধা পোষণ করেন।

সর্বশেষ খবর