মহামারী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঝুঁকি না নিয়ে স্থানীয়ভাবে কঠোর লকডাউনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে তিনি এ নির্দেশ দেন। পরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ বিষয়ে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
প্রধানমন্ত্রীর বরাত দিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, কোনো এলাকায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেশি হলে সেসব এলাকায় চলাচলসহ অন্যান্য কার্যক্রম কঠোরভাবে বন্ধ করে করোনা নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করতে বলেছেন সরকারপ্রধান।
৬ জুন দেওয়া চলমান লকডাউন-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে অন্যান্য বিধিনিষেধের সঙ্গে স্থানীয়ভাবে লকডাউন আরোপের ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসনকে ক্ষমতা দেওয়া হয়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব রেজাউল ইসলাম স্বাক্ষরিত ওই প্রজ্ঞাপনের পাঁচটি নির্দেশনার চতুর্থ নম্বরে বলা হয়, ‘কভিড-১৯-এর উচ্চ ঝুঁকিসম্পন্ন জেলাগুলোর জেলা প্রশাসকরা সংশ্লিষ্ট কারিগরি কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে স্ব স্ব এলাকার সংক্রমণ প্রতিরোধে বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন।’ করোনাভাইরাসের টিকার বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, টিকা নিয়ে আলোচনা চলছে। ইনশা আল্লাহ ভালো কিছু হবে। তিনি জানান, করোনাভাইরাস নিয়ে মোটামুটি আলোচনা হয়েছে। আনুষ্ঠানিক বৈঠক ছাড়াও এ বিষয়ে নিয়মিত আলাপ হয়। তিনি বলেন, স্থানীয় প্রশাসন, স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিসহ সব ধরনের সরকারি চ্যানেলে বলা আছে, তারা স্থানীয়ভাবে আলোচনা করে এ-সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। এমনভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়াও হচ্ছে। তিনি বলেন, ভাইরাসটি সারা দেশে সমানভাবে ছড়াচ্ছে না। তাই যেখানে যেমন প্রয়োজন তেমন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। তিনি জানান, দিনাজপুরে সংক্রমণ একটু বেড়েছে। যশোরে ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে একটু কমে এসেছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চলমান বিধিনিষেধের মেয়াদ ১৬ জুন পর্যন্ত বিদ্যমান আছে। চলমান লকডাউন বাড়বে কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আরও তো দুই দিন আছে, দেখা যাক।
গতকালের মন্ত্রিসভায় ‘অটোমোবাইল শিল্প উন্নয়ন নীতিমালা, ২০২১’-এর খসড়ার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ‘গার্ড অব অনার’ দেওয়ার ক্ষেত্রে মাঠ প্রশাসনের নারী কর্মকর্তাদের বাদ রাখতে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সুপারিশসংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, আমিও সংবাদমাধ্যম থেকে এ তথ্যটি জেনেছি। এ বিষয়ে অফিশিয়ালি কিছু জানি না। জেনে তারপর কথা বলব। এর পরও সাংবাদিকরা বিষয়টি জানতে চাইলে ধর্মীয় প্রসঙ্গের উদাহরণ টেনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, হাদিসে অনেক বিষয় রয়েছে, যার প্রয়োগের ক্ষেত্রে অনেক সময় উল্টোটাও হয়। তাই এ বিষয়টা না জেনে মন্তব্য করা যাবে না। গতকালের বৈঠকে ‘জাতীয় সংসদের নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ আইন, ২০২১’-এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আনোয়ারুল ইসলাম জানান, এটি অধ্যাদেশ থেকে শুধু আইনে পরিণত করা হয়েছে। কোনো পরিবর্তন করা হচ্ছে না। এর বাইরে ওআইসির উইমেন ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ডব্লিউডিও)-এর সদস্যপদ গ্রহণ এবং এ-সংক্রান্ত একটি সংবিধি স্বাক্ষর ও অনুসমর্থনের প্রস্তাবেও সায় দিয়েছে মন্ত্রিসভা।