সোমবার, ২১ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

বারবার কালো টাকা সাদা করলেও বন্ধ হচ্ছে না অর্থ পাচার

-ড. মোস্তাফিজুর রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক

বারবার কালো টাকা সাদা করলেও অর্থপাচার বন্ধ হচ্ছে না বলে মনে করেন বেসরকারি সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ-সিপিডির বিশেষ ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেছেন, চলতি অর্থবছরে করোনাকালীন বাজেট বাস্তবায়ন নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। হয়তো এবারও অন্যান্য বারের মতোই ছয় বা সাত মাস অতিবাহিত হলে বাজেট রিভাইস হবে এবং তা বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হবে। তিনি বলেন, বাজেট বাস্তবায়ন হতে হবে গুণগত মানসম্পন্ন। ব্যয় বাড়িয়ে প্রকল্পের মেয়াদ দীর্ঘায়িত করা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। বাজেটে বারবার কালো টাকা সাদা করার যে সুযোগ রাখা হচ্ছে, তা দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে একটি বড় বাধা। গতকাল এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির আয়োজনে ‘করোনা প্রেক্ষাপটে এবারের বাজেট’ নিয়ে ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। প্রতিযোগিতায় ঢাকা কমার্স কলেজকে পরাজিত করে সরকারি বাঙলা কলেজের বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মোহাম্মদ রইস, সাংবাদিক সবুজ ইউনুস, ড. সাকিলা জেসমিন, কাবেরী মৈত্রেয় ও আবুল বশির খান। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলের মাঝে ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়। অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কালো টাকা সাদা করার পরও প্রতিবছর গড়ে ৫০ থেকে ৬০ হাজার কোটি টাকা দেশ থেকে পাচার হয়ে যাচ্ছে। ফলে এই সুযোগ আমাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ও সামাজিক সুরক্ষায় কোনো অবদান রাখছে না। এই ধারাবাহিকতা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য বিভিন্ন নজরদারি খবরদারি প্রতিষ্ঠান ও আইনের মাধ্যমে অর্থ পাচার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করতে হবে। তিনি আরও বলেন, কর আহরণ প্রক্রিয়া উন্নয়নের মাধ্যমে ডিজিটাল প্লাটফর্মের ওপর গুরুত্ব দিয়ে অপ্রত্যক্ষ করের পরিবর্তে প্রত্যক্ষ করের ওপর জোর দিতে হবে। প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি, সুশাসন, রাজনৈতিক সদিচ্ছাই পারে মানসম্পন্ন বাজেট বাস্তবায়ন করতে। করোনাকালে সারা বিশ্বই অর্থনৈতিক ঝুঁকি, স্বাস্থ্য ঝুঁকি ও খাদ্য ঝুঁকির মধ্যে পড়লেও বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত খাদ্য ঝুঁকিতে পড়েনি। তবে অর্থনৈতিক ও স্বাস্থ্য ঝুঁকির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, এবারের বাজেট ব্যবসাবান্ধব হওয়ায় বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেলে কর্মসংস্থান তৈরি হবে। জীবন ও জীবিকার এই বাজেটে স্বাস্থ্য, সামাজিক নিরাপত্তা, শিক্ষাসহ দেশীয় শিল্প খাতকে প্রাধান্য দিয়ে দুর্নীতি প্রতিরোধ করতে পারলে বাজেট বাস্তবায়নে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা কঠিন হবে না। তবে রাজস্ব আয়ের ঘাটতি মোকাবিলায় কর কাঠামোকে শক্তিশালী করে এনবিআরের অবকাঠামো ও দক্ষ জনবল বৃদ্ধি না করতে পারলে বাজেট বাস্তবায়ন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর