বুধবার, ২৮ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

নানা ছুতায় ঘর থেকে বের হচ্ছে মানুষ

রাজধানীতে গ্রেফতার ৫৫৫

নিজস্ব প্রতিবেদক

নানা ছুতায় ঘর থেকে বের হচ্ছে মানুষ

রাজধানীর কারওয়ানবাজারে গতকাল মানুষের ঢল -বাংলাদেশ প্রতিদিন

করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সারা দেশে জারি করা লকডাউনের পঞ্চম দিন ছিল গতকাল। কঠোর অবস্থানে ছিলেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। রাজধানীর বিভিন্ন মোড়ে ছিল চেকপোস্ট। ঘর থেকে বের হয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জিজ্ঞাসাবাদের মুখেও পড়তে হচ্ছে। হচ্ছে জেল-জরিমনাও। তবু নানা ছুতায় ঘর থেকে বের হচ্ছে মানুষ। সবারই ভাষ্য, তারা প্রয়োজনীয় কাজেই বের হয়েছেন। অনেকের হাতে প্রেসক্রিপশন বা এক্স-রে ফিল্ম। কয়েক দিনের তুলনায় গতকাল রাজধানীর সড়কে যানবাহন ও মানুষের চলাচল আরও বেশি ছিল। তবে মূল সড়কে তুলনামূলক কম মানুষ দেখা গেলেও  অলিগলিতে আনাগোনা বেশ বেড়েছে। পুলিশের চেকপোস্টগুলোয় প্রাইভেট কার থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। কাউকে কাউকে জরিমানাও গুনতে হচ্ছে। আবার গাড়ি ঘুরিয়েও দেওয়া হচ্ছে।

পুরান ঢাকার আজিমপুর, লালবাগ, কেল্লার মোড়, বকশীবাজার ও পলাশীর অলিগলিতে মানুষ, ব্যক্তিগত গাড়ি, রিকশা সোমবারের চেয়ে বেশি চলেছে। গতকাল সকালে বৃষ্টি হলেও থেমে নেই মানুষের বের হওয়া, সকাল থেকেই নিত্যপ্রয়োজনীয় দোকান খুলেছে। অলিগলিতে ভ্যানে ফল আর সবজির পসরার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে মানুষের আনাগোনা; মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। রাজধানীর রামপুরা, মালিবাগ, মগবাজার, কাকরাইল, পল্টন, বিজয়নগর ঘুরে দেখা গেছে, সড়কে রিকশার পাশাপাশি সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের যানবাহন, পণ্যবাহী যান চলছে। তবে মালিবাগের রেলগেট ও শান্তিনগর বাজারে মানুষের ততটা ভিড় নেই। যারা আসছেন বাজার করে দ্রুতই বাসায় ফিরছেন। কাকরাইলের মোড়ে দেখা গেল রিকশার জটলা। সড়কজুড়ে রিকশার বিচরণ। কেউ যাত্রী নিয়ে, কেউ বা খালি রিকশা নিয়ে চলছে। মোহাম্মদপুরে সকালের দিকে গাড়ি চলাচল তুলনামূলক কম থাকলেও হেঁটে চলা মানুষের সংখ্যা বেশি ছিল। মোহাম্মদপুর টাউন হল কাঁচাবাজারে ক্রেতা কম থাকলেও কেউ কেউ সদাই কিনতে আসছেন বলে জানালেন মাছ বিক্রেতা আলাউদ্দিন। তিনি বলেন, কেনাবেচা হচ্ছে। তবে ধীরে। কোনো সমস্যা হচ্ছে না। ধানমন্ডি, সাত মসজিদ রোড এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, প্রধান সড়কে রিকশা ও মানুষের চলাচল বেড়েছে। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের টহলও দেখা গেছে।

মূল সড়কে মানুষ কম, আনাগোনা বেশি অলিগলিতে : চলমান বিধিনিষেধে রাজধানীর মূল সড়কে তুলনামূলক কম মানুষ দেখা গেলেও অলিগলিতে আনাগোনা বেশ বেড়েছে। দিন যত যাচ্ছে এ জায়গাগুলোয় মানুষের আড্ডা তত বাড়ছে। মেইন রোডে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে এবং অযাচিত চলাচল রোধে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বেশ তৎপর রয়েছেন। তবে অলিগলিতে সেলুন, চায়ের দোকানসহ বিভিন্ন সামগ্রীর দোকান খুলতে শুরু হয়েছে। সেখানে মানুষের আনাগোনাও বেশি। বিধিনিষেধে যেসব দোকানপাট বন্ধ থাকার কথা ছিল অলিগলিতে সেগুলো খোলা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টহলের সময় দোকানপাট বন্ধ হলেও তারা ফিরে গেলে আবারও খোলা হচ্ছে। রামপুরা মোড়ে মেইন রাস্তায় যত ভিড় তার থেকে বেশি ভিড় মহানগর প্রজেক্টে যাওয়ার রাস্তাটিতে। আর ওই রাস্তা থেকে বেরিয়ে যাওয়া পাশের গলিগুলোয় ভিড় আরও বেশি। সেসব গলিতে জটলা পাকিয়ে মানুষকে আড্ডা দিতে দেখা গেছে। চায়ের দোকান ও খাবার হোটেলেও বেড়েছে ভিড়। খাবার পারসেলে বিক্রির কথা থাকলেও অনেক হোটেলে ক্রেতাকে বসে খেতে দেখা গেছে।

কঠোর বিধিনিষেধের পঞ্চম দিনে রাজধানীতে গ্রেফতার ৫৫৫ : করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে কঠোর বিধিনিষেধ চলছে। বিধিনিষেধের পঞ্চম দিনে গতকাল রাজধানীতে ৫৫৫ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বিনা প্রয়োজনে বাসা থেকে বের হওয়ার অভিযোগে তাদের গ্রেফতার করা হয়। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগ থেকে এসব তথ্য জানানো হয়। ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের তথ্যমতে, গতকাল সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত অকারণে ঘর থেকে বের হওয়ায় তাদের গ্রেফতার করা হয়। ডিএমপির ভ্রাম্যমাণ আদালত ২৩৬ জনকে ৪ লাখ ৮৩ হাজার ৯৭৫ টাকা জরিমানা করেছেন। পাশাপাশি ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ সড়ক পরিবহন আইন অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘনসহ বিভিন্ন অভিযোগে ৪৯৭টি গাড়িকে ১১ লাখ ৭৩ হাজার টাকা জরিমানা করে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর