চীনের তৈরি করোনার ভ্যাকসিন সিনোফার্মা গ্রহীতাদের পবিত্র ওমরাহ পালনের অনুমতি দেয়নি সৌদি সরকার। তবে সিনোফার্মা টিকা গ্রহণকারীরা বুস্টার ডোজ হিসেবে অন্য কোনো টিকা নিলে ওমরাহ পালনের অনুমতি পাবেন। বাংলাদেশে সিনোফার্মা টিকা আমদানি করছে এবং দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু শুরু হয়নি বুস্টার ডোজ। ফলে ওমরাহ যাত্রীদের টিকা জটিলতা কাটছে না।
এদিকে সৌদি আরবের শর্তানুযায়ী যারা মডার্না, ফাইজার, অ্যাস্ট্রেজেনেকা ও জনসনের টিকা নিয়েছেন তারা আগামী সপ্তাহ থেকে ওমরাহ পালনের জন্য সৌদি আরবে যেতে পারবেন বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। পাশাপাশি করোনার কারণে যাতায়াত, হোটেল ভাড়াসহ সবকিছুতে শর্ত জুড়ে দেওয়ায় খরচ পড়বে সর্বনিম্ন দেড় লাখ টাকা। এনিয়েও দুশ্চিন্তায় হজ এজেন্সি মালিকরা। উল্লেখ্য, মহামারীর কারণে দীর্ঘ বিরতির পর গত ১০ আগস্ট থেকে সৌদির সরকার শর্ত সাপেক্ষে বিদেশিদের ওমরাহ পালনের অনুমতি দিলেও বাংলাদেশ থেকে নানান জটিলতার কারণে এখনো কাউকেই পাঠাতে পারেনি।
জানতে চাইলে হজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সিনোফার্মার টিকার বিষয়টি নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। এখনো সমাধান মেলেনি। এ জটিলতার নিরসন না হলে আগ্রহীদের ওমরাহ পালন সম্ভব হবে না। তিনি বলেন, শুধুমাত্র সিনোফার্মার টিকাতেই যেন ওমরাহ পালনের অনুমতি সৌদি কর্তৃপক্ষ দেয় সেজন্য কার্যকরী উদ্যোগ নিতে হবে। তিনি বলেন, পরীক্ষামূলকভাবে ৪ জনের একটি দল সৌদি গেছে। আগামী সপ্তাহ থেকে বাংলাদেশের ওমরাহ যাত্রীরা যেতে পারবেন বলে আশা করছি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনার আগে প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে প্রায় আড়াই লাখ মানুষ ওমরাহ পালন করতে যেতেন। তখন এজেন্সি ভেদে এবং হোটেলের মান অনুযায়ী সর্বনিম্ন ৮০ হাজার টাকা খরচ হতো। কিন্তু এবার হজ এজেন্সিগুলোর জন্যও শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ওমরাহ যাত্রীদের থ্রি স্টার থেকে ফাইভ স্টার মানের হোটেলে রাখা, এক কক্ষে মাত্র দুজন ওমরাহ যাত্রী রাখা, অ্যাপসের মাধ্যমে মক্কা-মদিনার পবিত্র স্থানগুলোতে প্রবেশ করা ইত্যাদি। এসব শর্ত মানতে গেলে খরচ বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যাবে। ইতিমধ্যে হাজার হাজার মানুষ ওমরাহ করার জন্য এজেন্সিগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। ওমরাহ পালনের জন্য সৌদি সরকারের দেওয়া শর্তগুলো হলো ওমরাহ পালনে ইচ্ছুক সবাইকে বাধ্যতামূলকভাবে করোনার টিকার উভয় ডোজই নিতে হবে। এক্ষেত্রে টিকা হতে হবে ফাইজার, মডার্না, অ্যাস্ট্রেজেনেকা অথবা জনসন অ্যান্ড জনসনের। যারা চীনের তৈরি সিনোফার্মার টিকার উভয় ডোজ নিয়েছেন, ওমরাহ পালনের জন্য তাদের উল্লেখিত টিকার বাড়তি বুস্টার ডোজ গ্রহণ করতে হবে। ১৮ বছর বা এর তদূর্ধ্ব বয়সীরাই কেবল ওমরাহ পালনের অনুমতি পাবেন। যে দম্পতির তিন-চার বছরের শিশু রয়েছে তারা ইচ্ছা করলেও শিশুদের সঙ্গে নিতে পারবেন না।