বৃহস্পতিবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

বাংলাদেশকে লাল তালিকা থেকে বের হতে পাঁচ শর্ত ব্রিটেনের

ট্রাভেল খাতে ১০০ মিলিয়ন ক্ষতি, বিপাকে ব্যবসায়ীরা

আ স ম মাসুম, যুক্তরাজ্য

বাংলাদেশ এখনো লাল তালিকায়, অথচ পাশের দেশ ভারত ইতিমধ্যে হলুদ তালিকায় চলে গেছে! ভারতকে যখন হলুদ তালিকায় নিয়ে আসা হয় তখন পাকিস্তান পার্লামেন্টে ঝড় বয়ে যায়, লন্ডনে পাকিস্তানি বংশোভূত ব্রিটিশ সংসদ সদস্যরা পার্লামেন্টে এটি নিয়ে কথা বলেছেন। সেই কারণেই পাকিস্তানের নাম লাল তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে সংবাদ হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের নাম নিয়ে কোনো আশার সংবাদ নেই। এই লাল তালিকার কারণে ব্রিটেনে পরিচালিত বাংলাদেশকেন্দ্রিক ট্রাভেলস ব্যবসায় প্রায় ৫০ মিলিয়ন আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে বলে জানান ব্রিটেনের অন্যতম শীর্ষ বাংলাদেশি মালিকানাধীন ট্রাভেল এজেন্ট ট্রাভেল লিংকের কর্ণধার সামি মানাউল্লাহ। তিনি বলেন, বাংলাদেশকে ঘিরে ব্রিটিশ বাংলাদেশি ট্রাভেল এজেন্টদের বছরে ৬০ মিলিয়ন পাউন্ডের ব্যবসা ছিল। সেটা এখন নেমে এসেছে ১০ শতাংশের নিচে! এমনকি ট্রাভেল ইন্ডাস্ট্রি ঘিরে টিকিট ছাড়াও আরও যে আনুষঙ্গিক ব্যবসা-বাণিজ্য তা ১০০ মিলিয়নের ওপরে হবে, সেটাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মারাত্মক!

ব্রিটেনের অন্যতম শীর্ষ এই ব্রিটিশ বাংলাদেশি ট্রাভেল ব্যবসায়ী বলেন, বর্তমানে এমন অবস্থা হয়েছে যে, আমাদের অনেকেই হাইস্ট্রিটের ব্যবসা গুটিয়ে অনলাইন বেইজড হয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে। তিনি মনে করেন, এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার ও এখানে যারা ব্রিটিশ বাংলাদেশি জনপ্রতিনিধি আছেন তাদের কথা বলা প্রয়োজন! একইভাবে লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি ইমদাদুল হক চৌধুরী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এ বিষয়টি নিয়ে আপসানা বেগম এমপি একবার কথা বলেছিলেন অনেক আগে, তারপরও আমাদের যেহেতু আরও ৩ জন ব্রিটিশ বাংলাদেশি এমপি রয়েছেন যারা আসলে অনেক অভিজ্ঞ ও প্রভাবশালী, তাদের উচিত এটি নিয়ে কথা বলা। এদিকে বাংলাদেশ হাইকমিশন যুক্তরাজ্য বলেছে, ব্রিটিশ সরকার বাংলাদেশসহ রেডজোনের দেশগুলোকে রেডজোন থেকে বের হতে ৫টি শর্ত বেঁধে দিয়েছে। শর্তগুলো হচ্ছে, বাংলাদেশকে অবশ্যই মোট জনগোষ্ঠীর ৩০ শতাংশের বেশি মানুষকে প্রথম ডোজের টিকা দিতে হবে। জনসংখ্যার ১০ শতাংশকে দ্বিতীয় ডোজের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার ১০ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনা, কভিড ১৯-এর জিনোম সিকোয়েন্স নিয়মিত আপলোড করা যাতে বাংলাদেশের কভিড বিস্তারের সংক্রমণ হার কী সেটা বোঝা যায়, বড় আকারে কভিড টেস্ট ফ্যাসিলিটি তৈরি করা। বাংলাদেশ রেডজোনে থাকার কারণে বর্তমানে লন্ডন থেকে বাংলাদেশ বিমানের সপ্তাহে একটি ফ্লাইট পরিচালিত হয়, যা আগে ছিল সপ্তাহে চারটি। গত সপ্তাহে ছেড়ে যাওয়া বিমানের ২৮০ আসনের ফ্লাইটে যাত্রী ছিলেন মাত্র ৭৬ জন। এদিকে লন্ডনে ফিরে হোটেল কোয়ারেন্টাইনের ১০ দিনের জন্য একজন যাত্রীকে দিতে হচ্ছে ২২৮৫ পাউন্ড। কোয়ারেন্টাইনে নিম্নমানের খাবার, অপরিষ্কার রুমসহ বিভিন্ন সার্ভিস নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে মানুষের মনে।  লন্ডনে সফররত বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন গত বৃহস্পতিবার। বাংলাদেশকে লাল তালিকা থেকে বের করার ব্যাপারে তাদের কথা হয়েছে বলে জানা গেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর