বৃহস্পতিবার, ২৮ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

ইসির প্রস্তুতি পর্যবেক্ষণ করছে যুক্তরাজ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক

ইসির প্রস্তুতি পর্যবেক্ষণ করছে যুক্তরাজ্য

 বাংলাদেশের আগামী সংসদ নির্বাচনের জন্য কীভাবে নির্বাচন কমিশন প্রস্তুতি নিচ্ছে তা আগ্রহের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে যুক্তরাজ্য। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে ডিপ্লোমেটিক করেসপনডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ডিক্যাব) আয়োজিত ডিক্যাব টকে যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার রবার্ট ডিকসন এ কথা বলেন। তিনি বলেন, আগামী সাধারণ নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার ও ভোটারদের সুরক্ষার জন্য একজন বাইরের বন্ধু হিসেবে যতটুকু সহায়তা করা সম্ভব আমরা করব। বাংলাদেশে নির্বাচন কীভাবে হবে সেটি বিদেশিদের বলার কথা নয়। এটি নির্ধারিত হবে বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী বলে তিনি জানান।

এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন কী প্রস্তুতি নিচ্ছে তা আগ্রহের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করব- জানিয়ে রাষ্ট্রদূত রবার্ট ডিকসন বলেন, নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দল ও প্রার্থী যেন অংশগ্রহণের সুযোগ পায়, সেটি জরুরি।

ভাবে হবে সেটি ঠিক করবে বাংলাদেশ। তবে এদেশে আমাদের বন্ধুদের সঙ্গে যতটুকু করা সম্ভব ততটুকু আমরা করব। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অংশ হিসেবে যুক্তরাজ্য এক্ষেত্রে সহযোগিতা করে বলে তিনি জানান।

বাংলাদেশের সঙ্গে দৃঢ় প্রতিরক্ষা সহযোগিতা রয়েছে যুক্তরাজ্যের। ওই দেশ থেকে নিরাপত্তা সামগ্রী ক্রয় করা হলে বন্ধন আরও দীর্ঘ ও দৃঢ় হবে। ইউরোপের দেশটি ইউরোফাইটার, যুদ্ধজাহাজ, সি-১৩০ পরিবহন উড়োজাহাজসহ অন্যান্য সামগ্রী বাংলাদেশের কাছে বিক্রি করতে আগ্রহী। রাষ্ট্রদূত বলেন, প্রতিরক্ষা সামগ্রী সংগ্রহের ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে দৃঢ় সহযোগিতা আছে। আমি এখানে থাকাকালীন আমরা পাঁচটি সি-১৩০ পরিবহন উড়োজাহাজ বাংলাদেশ এয়ারফোর্সকে সরবরাহ করেছি। এটি একটি সফল লেনদেন। যুক্তরাজ্যের রয়্যাল নেভির সার্ভে জাহাজ এখন বিএনএস অনুসন্ধান হিসেবে বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, এটি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর একটি প্রথা যুক্তরাজ্য থেকে যুদ্ধজাহাজ ক্রয় করা। এটি চলমান থাকুক এ বিষয়ে আমরা অত্যন্ত আগ্রহী।

রবার্ট ডিকসন বলেন, যে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে ওই দেশ প্রতিরক্ষায় আরও বিনিয়োগ করতে পারে। যুক্তরাজ্য ইউরো ফাইটার কনসোর্টিয়ামের সদস্য এবং জেট বিষয়ে আলোচনার একটি আগ্রহপূর্ণ সুযোগ তৈরি হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, টাইফুন বিমান বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত উপযোগী কিন্তু এর দাম বেশি। তবে এটি বাংলাদেশের জন্য ভালো হবে যদি তারা এটি কিনতে চায়। তিনি বলেন, গত ৫০ বছরে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব উন্নতি করেছে এবং স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হয়ে যাচ্ছে। দেশটির উন্নতি মসৃণ করার জন্য বের হয়ে যাওয়ার পরবর্তী তিন বছর পর্যন্ত শুল্কমুক্ত সুবিধা অব্যাহত থাকবে। যুক্তরাজ্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে গেছে এবং এর ফলে বাংলাদেশের বাণিজ্য নীতি কী হবে সেটি স্বাধীনভাবে বিবেচনা করার সুযোগ পেয়েছি। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য বিনিয়োগ সংলাপ হয়েছে বলে তিনি জানান।

তিনি বলেন, যুক্তরাজ্যে বসে বাংলাদেশ ও সরকারের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচারণা চালাচ্ছে কিছু বাংলাদেশি। তাদের ফেরত আনার জন্য মিউচুয়াল লিগাল অ্যাসিস্ট্যান্স চুক্তি করতে চায় সরকার। কিন্তু ওই দেশ থেকে কোনো ব্যক্তিকে ফেরত পাঠানোর বিষয়টি পুরোপুরি আদালতের ওপর নির্ভর করছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূত রবার্ট ডিকসন।

তিনি বলেন, ‘কার কার প্রত্যাবর্তন চাওয়া হয়েছে সেই বিষয়ে কিছু বলব না, কারণ তা ঠিক হবে না। প্রত্যাবর্তন একটি আইনি প্রক্রিয়া। অনেক ব্যক্তির প্রত্যাবর্তন হয়তো দেশের জনগণ চায়, কিন্তু সেটা ব্রিটিশ সরকারের ওপর নির্ভর করে না। করে আদালতের ওপর। প্রত্যাবর্তনের বিরুদ্ধে এর সঙ্গে জড়িত পক্ষগুলো বেশ শক্ত লড়াই করে বলেও তিনি জানান। নেতিবাচক প্রচারণার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে যুক্তরাজ্যে পরিষ্কার নিয়ম আছে। কেউ যদি ঘৃণা বা উসকানিমূলক মন্তব্য করে তবে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। যখন কেউ লাল দাগ অতিক্রম করে এবং তা আমাদের জানানো হয়, তখন আমরা বিষয়টি তদন্ত করি।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর