বৃহস্পতিবার, ৪ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা
জেলহত্যা দিবস পালিত

কুশীলবদের বিচারে তদন্ত কমিশন গঠন করা হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশে দুটি ঘৃণ্যতম হত্যাকান্ড ঘটেছে। একটি ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা, অন্যটি ৩ নভেম্বর জেলহত্যা। এগুলো কারা ঘটিয়েছে তা সবাই জানে। অনেক হত্যাকারীরই বিচার হয়েছে। ষড়যন্ত্রকারী ও কুশীলবদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে তদন্ত কমিশন গঠন করা হবে। গতকাল জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা এসব কথা বলেন। সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী। সূচনা বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। দলটির উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিনের পরিচালনায় আরও বক্তব্য রাখেন, প্রেসিডিয়াম সদস্য কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, দলের কেন্দ্রীয় নেতা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি প্রমুখ। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদেরকে অভিভাবকশূন্য করতে বঙ্গবন্ধুকে আর নেতৃত্বশূন্য করতে জাতীয় চার নেতাকে জেলখানার ভিতরে হত্যা করা হয়েছিল। খুনিদের পুরস্কৃত, পুনর্বাসন করেছিল জেনারেল জিয়াউর রহমান। বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের বিচার হবে না এই অধ্যাদেশের বৈধতা দিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। সভাপতির ভাষণে বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, আমাদের জাতীয় চার নেতা জীবন দিয়ে প্রমাণ করেছেন, তারা মৃত্যুকে ভয় করেন না। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে তারা পালিয়ে যান নাই। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুকে বুকে ধারণ করে তারাও মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছেন। তিনি বলেন, ষড়যন্ত্রকারী ও কুশীলবদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে তদন্ত কমিশন গঠন করা হবে।

ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, ১৫ আগস্টের মতো ৩ নভেম্বরও বাঙালি জাতির একটি কলঙ্কজনক দিন। দেশকে নেতৃত্বশূন্য করতে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করতে ৩ নভেম্বর জেলখানায় জাতীয় চার নেতাকে নির্মম, নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়।

মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম বলেন, বছর ঘুরে যখনই এই রাত আসে, আমার কাছে এটাকে কিয়ামতের রাত মনে হয়। গর্ববোধ করি, এই জাতীয় চার বীর, আপসহীন নেতাদের সঙ্গে দীর্ঘ আড়াই মাস জেলে ছিলাম। আমি বঙ্গবন্ধুর প্রতি তাদের শ্রদ্ধা, ভালোবাসা দেখেছি। বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য তাদের যে মনোবল যেটা আমি স্বচক্ষে দেখেছি। মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, বিএনপি-জামায়াত সাম্প্রদায়িক শক্তিকে মদদ দিয়ে দেশকে অশান্ত করার অপচেষ্টা করছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশকে এগিয়ে নিতে যেতে হবে। ডা. দীপু মনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর হত্যার পরে তার আদর্শ নিয়ে যেন আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব ঘুরে দাঁড়াতে না পারে সেজন্য জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়। ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে হত্যা করতেই ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর ৩ নভেম্বর জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়েছিল। এর আগে সকালে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জাতির পিতা প্রতিকৃতিতে এবং বনানীতে শ্রদ্ধা জানায় আওয়ামী লীগসহ দলটির সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম ও সামাজিক সংগঠন। এ ছাড়াও রাজধানীর পুরনো জেলখানায় জাতীয় চার নেতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ ও এম মনসুর আলীর পরিবারের সদস্যরা। রাজশাহীতেও কামারুজ্জামানের প্রতিকৃতিতে পৃথক শ্রদ্ধা জানানো হয়। সারা দেশেও একইভাবে পালিত হয় জেলহত্যা দিবস। বিকালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভা করে বাংলাদেশ কৃষক লীগ। কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দের সভাপতিত্বে সভায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন, উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন প্রমুখ বক্তব্য দেন।

সর্বশেষ খবর