সোমবার, ৮ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

সংবিধান সমুন্নত রাখতেই সিপাহিরা বিদ্রোহ করেছিল

নিজস্ব প্রতিবেদক

সংবিধান সমুন্নত রাখতেই সিপাহিরা বিদ্রোহ করেছিল

সামরিক অফিসারদের সংবিধান লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে সিপাহিরা বিদ্রোহ করেছিল বলে উল্লেখ করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু। গতকাল রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে শহীদ কর্নেল তাহের মিলনায়তনে সিপাহি-জনতার অভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটি আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। হাসানুল হক ইনু বলেন, স্বাধীনতার পর থেকেই ক্ষমতালিপ্সু উচ্চাভিলাষী সামরিক অফিসাররা ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর স্বার্থে সেনাবাহিনীকে খন্ডবিখন্ড করে ফেলেছিল। ক্ষমতালিপ্সু এই উচ্চাভিলাষী সামরিক অফিসাররা সেনাবাহিনীর শৃঙ্খলা এবং চাকরিবিধি লঙ্ঘন করে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের বাসাবাড়ি ও রাজনৈতিক কার্যালয়ে ওঠা-বসা করত। তিনি বলেন, সাধারণ সিপাহিরা নয়, এই ক্ষমতালিপ্সু উচ্চাভিলাষী সামরিক অফিসাররাই সেনাবাহিনীর ভিতরে রাজনীতিকরণ ও রাজনৈতিক বিরোধের সূত্রপাত করেন। এই উচ্চাভিলাষী সামরিক অফিসারদের একটি গ্রুপ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে ক্ষমতা দখল করেছিল। ইনু বলেন, উচ্চাভিলাষী সামরিক অফিসাররা সংবিধান লঙ্ঘন করে চলছিল। এর বিপরীতে ৭ নভেম্বর সিপাহিরা সংবিধান সমুন্নত রাখার প্রচেষ্টা নিয়েছিল। কিন্তু জিয়া বিশ্বাসঘাতকতা করে জাসদ, কর্নেল তাহের ও সিপাহিদের এ প্রচেষ্টাকে ধ্বংস করে দেয়। জিয়া নিজের ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে পাকিস্তানপন্থিদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে পাকিস্তানের ট্রেনে উঠে যায় এবং দেশকে পাকিস্তানপন্থার দিকে ঠেলে দেয়। জাসদ সভাপতি বলেন, সামরিক অফিসারদের এ ক্যু-ক্ষমতা দখল-পাল্টা দখলের খেলায় ৩ নভেম্বর আরেক উচ্চাভিলাষী সামরিক অফিসার খালেদ মোশাররফ ক্যু করে ক্ষমতা দখল করে। খালেদ মোশাররফ তার নিজের ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে সামরিক শাসন জারি করে এবং পাকিস্তানপন্থি বিচারপতি সায়েমকে রাষ্ট্রপতি বানায়। তিনি বলেন, শুধু তাই নয় খালেদ মোশাররফ খুনি মোশতাককে গ্রেফতার না করে বঙ্গবন্ধু ও চার জাতীয় নেতার খুনিদের সমঝোতার মাধ্যমে নিরাপদে দেশ ত্যাগ করার সুযোগ করে দেয়। ক্ষমতালিপ্সু সামরিক অফিসারদের এ বিশৃঙ্খলায় সৃষ্ট চরম রাজনৈতিক সংকট ও অনিশ্চয়তা থেকে দেশকে বাঁচাতে ঔপনিবেশিক আমলের গণবিরোধী ব্যবস্থার পরিবর্তন করার লক্ষ্যে উচ্ছৃঙ্খল অফিসারদের বিরুদ্ধে সিপাহিদের সুশৃঙ্খল বিদ্রোহে কর্নেল আবু তাহের বীর উত্তমের নেতৃত্বে জাসদ সমর্থন দিয়েছিল। তিনি বলেন, ৭ নভেম্বর ঐতিহাসিক সিপাহি-জনতা অভ্যুত্থানের মহানায়ক কর্নেল আবু তাহের বীর উত্তম, খলনায়ক জিয়া। যারা জিয়া বা খালেদের পক্ষে সাফাই গাইছেন তারা কার্যত সংবিধান লঙ্ঘন, অবৈধ ক্ষমতা দখল ও সামরিকতন্ত্রের পক্ষেই সাফাই গাইছেন। জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার, সহ-সভাপতি নুরুল আকতার, ফজলুর রহমান বাবুল, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা শফি উদ্দিন মোল্লা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাদের চৌধুরী, মোখলেছুর রহমান মুক্তাদির, শওকত রায়হান, রোকনুজ্জামান রোকন, নইমুল আহসান জুয়েল, ওবায়দুর রহমান চুন্নু, মির্জা আনোয়ারুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুন্নবী, জাতীয় শ্রমিক জোট-বাংলাদেশের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সাইফুজ্জামান বাদশা, জাতীয় কৃষক জোটের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান ফসি প্রমুখ।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর