গণভবনে গতকাল সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, নেপাল ও ভুটানে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করে উভয় দেশই উপকৃত হতে পারে। বাংলাদেশে দুই দিনের সফর শেষে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা গতকাল ঢাকা ত্যাগ করেন।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শুভেচ্ছা বার্তা পৌঁছে দেন হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের মাধ্যমে নরেন্দ্র মোদিকে শুভেচ্ছা জানান। বৈঠকে হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেন, বাংলাদেশ ও ভারত সীমান্তের ছোটখাট কিছু বিষয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) মধ্যে বৈঠকের মাধ্যমে সমাধান করা যেতে পারে। আমরা চাই এ সমস্যার সমাধান হোক। প্রধানমন্ত্রীও এতে সম্মত হয়েছেন বলে প্রেস সচিব জানিয়েছেন। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বলেন, কভিড-১৯ মহামারীর ধাক্কা সামলে ভারত স্বাভাবিকের দিকে ফিরে আসছে। করোনার ওমিক্রন ধরন নিয়ে সবাই সতর্ক উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভারতে এ পর্যন্ত প্রায় ২১ জনের শরীরে নতুন এ ধরন শনাক্ত হয়েছে। আফ্রিকার দেশগুলো ছাড়াও করোনার এই ধরন ইউরোপের বিভিন্ন দেশে শনাক্ত হয়েছে। শ্রিংলা কভিড-১৯ মহামারীকালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির প্রশংসা করেন এবং বলেন, ভারতেও ভালো প্রবৃদ্ধি হয়েছে। বাংলাদেশের ৫০তম বিজয় দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে আমন্ত্রণ জানানোয় তিনি ধন্যবাদ জানান এবং একে ‘বন্ধুত্বের বিশেষ বন্ধন’ হিসেবে উল্লেখ করেন। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ভারত বিশ্বজুড়ে তার মিশনসমূহে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পকর্ স্থাপনের ৫০তম বার্ষিকী পালন করবে। এ ছাড়া ওই সব দেশের স্থানীয় জনগণের মাঝেও বঙ্গবন্ধুকে তুলে ধরবে। শ্রিংলা আশা করছেন, কভিড পরিস্থিতির উন্নতি হলে জাতিসংঘে ভারত ও বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে একটি যৌথ ছবির প্রদর্শনী করবে। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব শিলিগুড়ি-পার্বতীপুর, ঢাকা-শিলিগুড়ি এবং ঢাকা-জলপাইগুড়ি রেল যোগাযোগ পুনরায় চালু করার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশও কভিড-১৯ মহামারীর ধকল সামলে ওঠে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থার দিকে ফিরছে।
ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নীতিবিষয়ক উপদেষ্টা অশোক মল্লিক এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস এ সময় উপস্থিত ছিলেন।