শুক্রবার, ১৩ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

রাজনৈতিক দলের জন্য আলাদা সংস্থা বা উইং চায় ইসি

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগেই নতুন দলের নিবন্ধন দেবে ইসি, চলতি মাসে গণবিজ্ঞপ্তি

গোলাম রাব্বানী

দেশের নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের জন্য আলাদা উইং করতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিমন। এ জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে প্রস্তাবনা দিয়েছেন ইসি সচিবালয়ের কর্মকর্তারা। নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের কার্যক্রম মনিটরিং করাসহ অন্যান্য কার্যক্রম দেখভালের জন্য এ ইউং করার চিন্তা করা হচ্ছে। এদিকে আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন দেবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ জন্য চলতি মাসে নতুন দল নিবন্ধনের জন্য আবেদন চেয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করবে ইসি। ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন ও নিবন্ধিত দলগুলোর নিয়মিত খোঁজ রাখার মতো বর্তমানে পর্যান্ত জনবল নেই ইসির। তাই এ কার্যক্রম দেখভাল করার জন্য আলাদা উইং করা প্রয়োজন।

এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, অন্যান্য দেশে রাজনৈতিক দল নিবন্ধন দেওয়ার জন্য একটি আলাদা অথরিটি থাকে। তাদের কাজই হলো- রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন, রেগুলেশন ঠিকমতো পালন করছে কি না এগুলো দেখা। আমাদের দেশে ২০০৮ সাল থেকে নির্বাচন কমিশনকে এ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আমাদের এ জন্য আলাদা করে অতিরিক্ত জনবল নেই। আমার ব্যক্তিগত মতামত হচ্ছে, রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের জন্য আলাদা অথরিটি হলে সবচেয়ে ভালো হয়। আর তা না হলে নির্বাচন কমিশনেই আলাদা একটা উইং করার প্রয়োজন হবে। যে উইংয়ের সারা বছর কাজই হবে, রাজনৈতিক দলগুলোর অফিস পরিদর্শন করা, তাদের যে নিয়ম-কানুনগুলো আছে, যেভাবে তারা মিটিং করবে বা সাংগঠনিক কমিটি গঠন করবে সেখানে নিয়ম পালন করল কি না, তারপর দলের নিজস্ব যে গঠনতন্ত্র আছে সে অনুযায়ী পরিচালিত হচ্ছে কি না, তাদের আর্থিক বিষয়গুলো ঠিকমতো আছে কি না, সেগুলো অডিট করানোসহ অন্যান্য বিষয় দেখা। আমরা এসব বিষয় নিয়ে আলাপ-আলোচনা করছি। নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের জন্য গণবিজ্ঞপ্তি কবে নাগাদ প্রকাশ করা হতে পারে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মোটামুটি এ মাসে হওয়ার সম্ভাবনা আছে। ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, সংসদ নির্বাচনের আগে নতুন দল নিবন্ধনের জন্য গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে নির্বাচন কমিশন। ২০০৮ সাল থেকে নির্বাচনমুখী দলগুলোকে নিবন্ধন দিয়ে আসছে ইসি।

নিবন্ধন না থাকলে কোনো দল নির্বাচনে অংশ নিতে পারে না। নতুন দলের নিবন্ধনের বিষয়টি কমিশনে উপস্থাপন করা হয়েছে। কমিশন অনুমোদন দিলেই গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে। সর্বশেষ দল নিবন্ধনের জন্য ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল ইসি। সময় দেওয়া হয়েছিল ওই বছর ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এতে নিবন্ধন পেতে আবেদন করেছিল ৭৬টি রাজনৈতিক দল। কে এম নূরুল হুদা কমিশন নানা কারণে সবার আবেদন বাতিল করেছিল। পরে আদালতের আদেশে নিবন্ধন পায় জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএম ও বাংলাদেশ কংগ্রেস। এর আগে ২০১৩ সালে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করলে ৪৩টি দল আবেদন করেছিল। কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ কমিশন সে সময় বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ) ও সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট- এ দুটি দলকে নিবন্ধন দেয়। বিগত ড. এ টি এম শামসুল হুদা নেতৃত্বাধীন কমিশন ২০০৮ সালে দেশে প্রথমবারের মতো দলগুলোকে নিবন্ধন দেয়। সে সময় ১১৭টি দল আবেদন করেছিল। যাচাই-বাছাইয়ের পর নিবন্ধন পায় ৩৯টি। সব মিলিয়ে গত ১৪ বছরে মোট ৪৪টি দলকে নিবন্ধন দিয়েছে ইসি। এর মধ্যে শর্ত পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় ও আদালতের নির্দেশে পাঁচটি দলের নিবন্ধন বাতিলও করা হয়। ফলে বর্তমানে ইসিতে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল রয়েছে ৩৯টি।

সর্বশেষ খবর