শুক্রবার, ১৩ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ ঢাকায়

আসন ভাগের নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না : আব্বাস

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ ঢাকায়

গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ঢাকা মহানগরী উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস -বাংলাদেশ প্রতিদিন

বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, বাংলাদেশে আর আসন ভাগাভাগির নির্বাচন হতে দেওয়া যাবে না। যারা তাতে অংশ নেবে, তাদেরও প্রতিহত করবে বিএনপি। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আসন ভাগাভাগির পরিকল্পনা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। গতকাল দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। ‘দেশব্যাপী বিএনপিসহ বিরোধী নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে’ বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখা এ সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশ থেকে কুমিল্লায় বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের বাড়িতে, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদের গাড়িতে এবং ফেনীতে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নাল আবদিন ফারুকের বাড়িতে হামলার প্রতিবাদ জানানো হয়। ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলমের পরিচালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নাল আবদিন ফারুক, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন প্রমুখ বক্তৃতা করেন। মির্জা আব্বাস বলেন, আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। সে নির্বাচনে যারা যাবে, সরকার ও তাদের বিরুদ্ধে একযোগে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পত্রিকায় একটি সংবাদের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আসন ভাগ করছেন। ১০০ আসন এবং ৭০ আসন। যারা আসন ভাগ করছেন, আমরা আপনাদের পা ভাগ করে দেব। আসন ভাগের নির্বাচন বাংলাদেশে হবে না। কোনো আঁতাতের নির্বাচন বাংলাদেশে হতে দেওয়া হবে না’। দলের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা হলে একযোগে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানিয়ে মির্জা আব্বাস বলেন, বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবে না। প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে বাধা দেওয়া হবে না। এ কথার পরই খন্দকার মোশাররফের বাড়িতে হামলা করা হলো, রেদোয়ানের গাড়িতে হামলা হলো। এতে বোঝা যায়, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা কেউ প্রধানমন্ত্রীর কথা শোনে না।

তিনি জানান, মোশাররফের বাড়িতে যারা হামলা করেছিল, তারা উত্তম-মধ্যম খেয়ে ফেরত এসেছে। প্রতিরোধ শুরু হয়ে গেছে। এখন থেকে প্রত্যাঘাত করতে হবে। মির্জা আব্বাস বলেন, দেশে মাথাপিছু আয় নাকি বেড়েছে! আসলে কার যে মাথাপিছু আয় বেড়েছে তা আমি জানি না। কিন্তু আওয়ামী লীগের যে মাথাপিছু আয় বেড়েছে এতে কোনো সন্দেহ নেই। আর যে বাচ্চাটা মায়ের পেটে আছে, তার মাথায় লোন হচ্ছে ৪৯২ ডলার। সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, সময় কিন্তু এসে গেছে। এখন থেকে আমরা আর মিছিল-মিটিংয়ের অনুমতি নেব না। এখন থেকে আমরা কোনো অনুমতির তোয়াক্কা করব না। মনে রাখবেন শুরু কিন্তু হয়ে গেছে। পালানো শুরু হয়ে গেছে। কিছু কিছু লোক এর আগেও বিমানবন্দরে গিয়ে ধরা খেয়েছে, এখনো ধরা খাচ্ছে। যেতেও পারছে না, বেরোতেও পারছে না। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় অভিযোগ করে বলেন, ‘প্রতিবেশী ও বাংলাদেশ সরকারের কতিপয় লোক ফেরি করে বেড়াচ্ছে-কাকে কয়টা আসন দিয়ে নির্বাচনে নেবে। এ অধিকার কে দিয়েছে?’ আসন বণ্টনকারী এই দালালদের ধরার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যারা সরকারের ফাঁদে পা দেবে, তাদের প্রতিহত করতে হবে। তিনি বলেন, ড. মোশাররফের বাড়িতে হামলা তাদের পরিকল্পিত মহড়া। তবে হামলা হলে পাল্টা হামলা, আঘাত এলে পাল্টা আঘাত করতে হবে। এ দায়িত্ব পালনে যারা বাধা দেবে, তাদের মোকাবিলা করব। আর ছাড় দেওয়ার সময় নেই। মুখ বুজে পিঠে লাঠির বাড়ি খাওয়ার সময় নেই। শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীর মতো অবস্থা দেখতে চান না জানিয়ে তিনি বলেন, নিরাপদে মানসম্মান নিয়ে প্রস্থান করুন। আওয়ামী লীগ যদি শ্রীলঙ্কা থেকে শিক্ষা না নেয়, তাহলে তাদের পরিণতি ভয়াবহ হবে। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেন, এই প্রতিবাদ সভা অন্যায় ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। ড. খন্দকার মোশাররফের বাড়িতে হামলা করেছে দুষ্কৃতকারীরা। আগে দুষ্কৃতকারীদের জায়গা ছিল জেলে। এখন তাদের জায়গা আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ-সংগঠনে।

 

সর্বশেষ খবর