সোমবার, ২৩ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

কলকাতায় পি কে হালদারের রিমান্ডে পাওয়া তথ্য চেয়েছে বাংলাদেশ

পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভার প্রচারণায় টাকা দেন, রিমান্ড চলবে আরও চার দিন

নিজস্ব প্রতিবেদক ও কলকাতা প্রতিনিধি

কলকাতায় পি কে হালদারের রিমান্ডে পাওয়া তথ্য চেয়েছে বাংলাদেশ

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে গ্রেফতারের পর রিমান্ডে এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রশান্ত কুমার হালদারের দেওয়া তথ্য চেয়েছে বাংলাদেশ। ইতোমধ্যেই ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) কাছে এ বিষয়ে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গে একুশের বিধানসভার নির্বাচনী প্রচারণার কাজে লাগানো হয়েছিল পি কে হালদারের আত্মসাৎ করা রুপি। পি কে হালদারকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছেন ইডি কর্মকর্তারা।

দুদকের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, ভারতের পশ্চিমবঙ্গে গ্রেফতারের পর রিমান্ডে থাকা এনআরবি গ্লোবাল  ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পি কে হালদাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে কাজ চলছে। দেশের টাকা পাচারে তিনি কী কৌশল অবলম্বন করেছেন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা তাকে কীভাবে সহযোগিতা করেছেন সেই তথ্য দেশটির তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) পেয়ে থাকলে তা সরবরাহ করার জন্য ইতোমধ্যে ইডিকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ওই তথ্য হাতে পাওয়ার পর তা পর্যালোচনা করে পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে।

ইডি সূত্রের খবর, পি কে হালদারের টাকা খাটানো হয়েছিল অশোকনগরসহ উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বেশ কিছু বিধানসভা এলাকার নির্বাচনী প্রচারণার কাজে। পি কে হালদারের কাছে ওই রুপি কোথা থেকে এলো তারই উৎস জানার চেষ্টা করছে তদন্তকারী কর্মকর্তারা। শুধু তাই নয়, ইডি সূত্রে খবর পি কে হালদারকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বাংলাদেশের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নাম পেয়েছে, যে তালিকায় রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের এক মন্ত্রী। এও জানা যাচ্ছে, খুব শিগগিরই সেই মন্ত্রীকে ডেকে জিজ্ঞাসা চালাতে পারে ইডি।

গত ১৪ মে পশ্চিমবঙ্গের ১১টি জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালিয়ে মোট ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়। ২০০২ সালের ‘প্রিভেনশন অফ মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট’ (পিএমএলএ)-এর অধীন গ্রেফতার হওয়া পি কে হালদার ছাড়াও অন্যরা হলেন- প্রাণেশ কুমার হালদার, স্বপন মিত্র ওরফে স্বপন মিস্ত্রি, উত্তম মৈত্র ওরফে উত্তম মিস্ত্রি, ইমাম হোসেন ওরফে ইমন হালদার এবং আমানা সুলতানা ওরফে শর্মী হালদার। প্রথম দফায় তিন দিনের রিমান্ড শেষে ১৭ মে আদালতে তোলা হলে অভিযুক্ত নারী শর্মি হালদারকে ১০ দিনের জেলহাজতের নির্দেশ দেয় আদালত। বাকি পাঁচ অভিযুক্তকে ১০ দিনের রিমান্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়।

১০ দিনের রিমান্ড শেষে আগামী ২৭ মে ফের কলকাতার নগর দায়রা আদালতে ‘স্পেশাল সিবিআই কোর্ট-১’ এ তোলা হবে পি কে হালদারসহ ছয় অভিযুক্তকে। ওইদিন আদালতের কাছে ফের রিমান্ডের জন্য অবেদন করতে পারে ইডি। কারণ পি কে হালদারকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও কিছু তথ্য হাতে পেতে চাইছে ইডি।

পি কে হালদারকে জেরা করে ইতোমধ্যেই তার কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ উদ্ধার করা হয়েছে, যে অর্থের পরিমাণ ভারতীয় মুদ্রায় ১৫০ কোটি রুপির বেশি। এমনকি বেশ কিছু ইলেকট্রনিক ডিভাইসও উদ্ধার করা হয়। সূত্রে খবর, ৮১টি ইলেকট্রনিক গ্যাজেট  পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৩০টি খোলা হয়েছে, যেখানে ইডির হাতে উঠেছে একাধিক তথ্য। সেগুলো তদন্ত করে খতিয়ে দেখছেন ইডির কর্মকর্তারা। আর সে কারণেই ফের রিমান্ডের আবেদন জানাতে পারে ইডি। একটি সূত্রে জানা গেছে,  ইডির তদন্তের পার্ট শেষ হলে সে ক্ষেত্রে ভারতের আরেকটি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই তদন্তের ভার নিতে পারে। আর তাহলে নতুন মোড় নিতে পারে এই তদন্ত।

সর্বশেষ খবর