বগুড়ার গাবতলী উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিলকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ-বিএনপির দফায় দফায় সংঘর্ষ, ইট-পাটকেল নিক্ষেপ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের রাবার বুলেটে আহত হয়েছেন ১৫ জন। আহতরা গাবতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। গাবতলী উপজেলা সদরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
জানা যায়, গত ২৭ মে বগুড়ার গাবতলী উপজেলা বিএনপির সম্মেলনে জেলা মহিলা দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুরাইয়া জেরিন রনি তার বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কটূক্তি, অশালীন ও অসংলগ্ন কথা বলেন। এই বক্তব্যের পর থেকে প্রতিবাদ জানিয়ে গাবতলী উপজেলা আওয়ামী লীগ ও জেলা আওয়ামী লীগ, জেলা ছাত্রলীগ ভিন্ন ভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে। গতকাল সকাল ১১টায় গাবতলী উপজেলা আওয়ামী লীগ বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে উপজেলা সদরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। মিছিলটি বেলা পৌনে ১২টার সময় গাবতলী উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোর্শেদ মিল্টনের বাড়ির সামনে পৌঁছলে বিএনপির সমর্থকরা মিছিলের ওপর ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে ও সড়কের পাশে থাকা আয়ামী লীগের দলীয় ব্যানার ভাঙচুর করতে থাকে। প্রতিবাদে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বিএনপির নেতা-কর্মীদের ধাওয়া করলে তারা দিগ্বিদিক ছুটে পালিয়ে যান। প্রথম ধাওয়ার কিছু পরে বিএনপির নেতা-কর্মীরা সংগঠিত হয়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ধাওয়া ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। প্রতিবাদ জানাতে গেলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশের উপস্থিতিতে বিএনপির নেতা-কর্মীরা চলে যায়। দ্বিতীয় ধাওয়ার পর কে বা কারা উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় ও ভাঙচুর করে। এ সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে দুপুর দেড়টার সময় বিএনপির নেতা-কর্মীরা আবারো একযোগে লাঠিসোঁটা নিয়ে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের দিকে হামলা করতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় বিএনপি নেতা-কর্মীরা পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে এগিয়ে যেতে চাইলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাবার বুলেট ছুড়ে পুলিশ। রাবার বুলেটসহ ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় বিএনপি ও আয়ামী লীগের কমপক্ষে ১৫ নেতা-কর্মী আহত হন। বগুড়ার গাবতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এআই ফয়সাল খান জনি জানান, প্রধানমন্ত্রীকে ঘিরে উপজেলা বিএনপির সম্মেলনে কটূক্তি, অশালীন বক্তব্য দেওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল আহ্বান করা হয়। তাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে বিএনপির নেতা-কর্মীরা অস্ত্রসহ হামলা করে। হামলায় আওয়ামী লীগের ১০ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন বলে তিনি দাবি করেন। বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলী হায়দার চৌধুরী (প্রশাসন) জানান, কতটি রাবার বুলেট ছোড়া হয়েছে তার গণনা চলছে। কাউকে আটক করা যায়নি। মামলাও হয়নি। পুলিশ আইনি প্রক্রিয়ায় এগোচ্ছে। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে।
