রবিবার, ৫ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

বাংলাদেশকে গম দেবে পাঞ্জাবের মার্কফেড

চুক্তির উদ্যোগ নিতে দিল্লিতে চিঠি

রুকনুজ্জামান অঞ্জন

ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের একটি সমবায়ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে গম সরবরাহের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। দ্য পাঞ্জাব স্ট্যাট কো-অপারেটিভ সাপ্লাই অ্যান্ড মার্কেটিং ফেডারেশন লিমিটেড (মার্কফেড) নামে প্রতিষ্ঠানটি সম্প্রতি এক চিঠিতে খাদ্য মন্ত্রণালয়কে বাংলাদেশে তাদের গম রপ্তানির আগ্রহের বিষয়টি জানায়। খাদ্য মন্ত্রণালয় ওই প্রতিষ্ঠানটি থেকে সরকারিভাবে গম আমদানির জন্য ভারত সরকারের সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ নিতে দিল্লির বাংলাদেশ হাইকমিশনে চিঠি পাঠিয়েছে। ৩১ মে এই চিঠি পাঠানো হয়। হাইকমিশনার মো. ইমরানকে উদ্দেশ করে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, খাদ্য মন্ত্রণালয় প্রতি বছর ৫ থেকে ৬ লাখ মেট্রিক টন গম আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে আমদানি করে থাকে। খাদ্য নিরাপত্তার স্বার্থে জরুরি অবস্থায় সরকারিভাবে (জিটুজি) গম আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ পরিস্থিতিতে পাঞ্জাবের মার্কফেড থেকে যাতে জিটুজি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় গম আমদানির জন্য ভারতের সংশ্লিষ্ট সরকারি দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়, চিঠিতে সেই বিষয়ে অনুরোধ জানানো হয়। এর আগে সরকারি পর্যায়ে ভারত থেকে ১২ লাখ মেট্রিক টন গম আমদানির জন্য জরুরি উদ্যোগ নিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছিল খাদ্য মন্ত্রণালয়। গত ২২ মে পাঠানো ওই চিঠিতে বলা হয়েছিল, সরকারি বিতরণ ব্যবস্থা সচল রাখা ও জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে ভারতের ‘বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়’ অথবা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে বাংলাদেশ সরকার যেন দ্রুত কমপক্ষে ১২ লাখ টন গম আমদানি করতে পারে- সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হয়। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সংগ্রহ ও সরবরাহ অনুবিভাগ) মো. মজিবর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সরকারের কাছে পর্যাপ্ত খাদ্য মজুদ রয়েছে। এখন যে চিঠি পাঠানো হয়েছে এটি আগামী অর্থবছরে জিটুজি (সরকারি) ভিত্তিতে গম আমদানির জন্য। এই মুহূর্তে ভারত, রাশিয়া এবং অস্ট্রেলিয়া এই তিনটি দেশ বাংলাদেশে গম রপ্তানির আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলেও জানান খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এই কর্মকর্তা।

গত অর্থবছরে প্রায় ৭৫ লাখ মেট্রিক টন গমের চাহিদার বিপরীতে উৎপাদন ছিল ১২ লাখ টনের কিছু বেশি। এ ছাড়া সরকারি পর্যায়ে আরও প্রায় ৫ লাখ মেট্রিক টন আমদানি বাদ দিলে, বাকি ৫৮ লাখ মেট্রিক টনের পুরোটাই আমদানি হয় বেসরকারি খাতের মাধ্যমে। আর বেসরকারি খাতের এই আমদানির বেশির ভাগই আসে রাশিয়া-ইউক্রেন, আর্জেন্টিনা ও ভারত থেকে। তবে ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বেসরকারি খাতের আমদানি প্রক্রিয়া গত মার্চ থেকে থমকে যায়। বিকল্প হিসেবে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ভারত থেকে গম আমদানির প্রক্রিয়া শুরু করে। তবে সম্প্রতি ভারতও গম রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করায় বাজারে গম, আটা ও ময়দার দাম বাড়তে থাকে হু হু করে। কর্মকর্তারা জানান, ভারত গম রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিলেও দেশটির কৃষক পর্যায় থেকে পণ্য রপ্তানির বিষয়ে চাপ রয়েছে। ন্যাশনাল ফেডারেশন অব ফারমার্স প্রকিউরমেন্ট প্রসেসিং অ্যান্ড রিটেইলিং কোঅপারেটিভস অব ইন্ডিয়া (এনএসিওএফ) সম্প্রতি এক চিঠিতে জানিয়েছে, তারা বাংলাদেশে গম রপ্তানি করতে আগ্রহী। এরপর পাঞ্জাবের মার্কফেডও গম রপ্তানির আগ্রহ দেখিয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠায়।

সর্বশেষ খবর