রবিবার, ১৪ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

নিজস্ব সম্পদের ওপর নির্ভরতা বাড়ানোর তাগিদ বিশেষজ্ঞদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

জ্বালানি সংকট নিয়ে এডিটরস গিল্ড বাংলাদেশের গোলটেবিল বৈঠকে নিজস্ব সম্পদের ওপর নির্ভরতা বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলেছেন, করোনা মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ নানা কারণে বিশ্বব্যাপী জ্বালানি সংকট বাংলাদেশেও বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে জ্বালানি তেলের দাম বাড়লেও পরিস্থিতি মোকাবিলায় বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। তবে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে নিজস্ব সম্পদের ওপর নির্ভরতা বাড়ানোর বিকল্প নেই। গতকাল রাজধানীর বনানীর ঢাকা গ্যালারিতে ‘বিশ্ব জ্বালানি সংকট ও বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলেন বক্তারা। সংগঠনটির সভাপতি মোজাম্মেল বাবুর সঞ্চালনায় বৈঠকে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব ও বিদ্যুৎ সচিব আবুল কালাম আজাদ, বিপিসি চেয়ারম্যান এ বি এম আজাদ, অর্থনীতিবিদ ও পিআরআইর নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর, জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন, আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ এবং ‘এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার’-এর সম্পাদক মোল্লাহ আমজাদ হোসেন। আলোচনার সূত্রপাত করে মোল্লাহ আমজাদ হোসেন বলেন, ‘এ মুহূর্তে জ্বালানির দাম বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই, এটা সবাই স্বীকার করছে। কিন্তু আমাদের কি এলএনজি আমদানির সক্ষমতা আছে? আমাদের নিজস্ব সম্পদ উত্তোলন করতে হবে। এগুলো উৎপাদনের কাজে ব্যবহার করতে হবে। গ্যাস-কয়লার অনুসন্ধানে মনোযোগ দিতে হবে।’ বিপিসি চেয়ারম্যান এ বি এম আজাদ জানান, সরকার যে সিদ্ধান্ত দেয় সে অনুযায়ী কাজ করেন তাঁরা। তিনি বলেন, ‘বিপিসিতে দুর্নীতির কোনো সুযোগ নেই। বিপিসি এখন লাভ করছে- অনেকেই এমন কথা বললেও এখনো ২৭ হাজার কোটি টাকা ঋণ রয়ে গেছে।’ জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন বলেন, ‘তেলের বিষয়ে কোনো সমস্যা নেই, সমস্যা হচ্ছে প্রাইসিং। তেলের টাকা অন্য খাতে যাবে কেন? অ্যাডমিনিস্ট্রেট প্রাইস ওভাবে তো হয় না। এখন যে লোডশেডিং হচ্ছে, তা-ও সিস্টেমিক সমস্যা। দেশের পুরো পাওয়ার সিস্টেম ভুল পথে রয়েছে।’ অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘পৃথিবীর সব দেশেই বাজারদরের সঙ্গে জ্বালানির দাম ওঠানামা করে। যুদ্ধের কারণে তেলের দাম কোথায় গিয়ে ঠেকবে তা আমরা জানি না। গ্যাসের দামও কমবে। প্যানিক হওয়ার কিছু নেই।’ প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘বাংলাদেশের বাস্তবতায় তেল-গ্যাসের দাম বারবার বাড়ানো-কমানো সম্ভব নয়। বহির্বিশ্বের চেয়ে দেশে দাম কম, সেজন্য এটি করা যাচ্ছে না।’ বিদ্যুতের সমস্যা সমাধানে ব্যাপকভাবে সৌরবিদ্যুৎ ও কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতের ব্যবহার বাড়ানোর পরামর্শও দেন তিনি। ড. সেলিম মাহমুদ বলেন, বিএনপি গ্যাস এক্সপোর্ট করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল। কিন্তু তারা সেটা পারেনি। তাতে আন্তর্জাতিক বাজারে নেতিবাচক বার্তা গেছে। তবে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালে গ্যাস ডেভেলপমেন্ট ফান্ড গঠন করা হয়েছে, ভারত-মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্র জয় করেছে।

 

সর্বশেষ খবর