রবিবার, ২১ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা
পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ঘিরে যত কথা

ইতিহাসের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে : ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এখন আর কোনো নির্বাচনের কথা নয়। ঘুম পাড়ানির কথা নয়। এখন একটাই দাবি- ‘এই সরকার কবে যাবে।’ তিনি বলেন, বাংলাদেশকে ধ্বংসের ষড়যন্ত্র ও ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য অবশ্যই আওয়ামী লীগকে ইতিহাসের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। গতকাল রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব)-এর মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি, সারা দেশে নজিরবিহীন লোডশেডিং, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি এবং হত্যা, গুম, দমন-পীড়নের প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি বিএনপির শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন। মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ যতবারই ক্ষমতায় এসেছে বাংলাদেশের আত্মা-স্বপ্ন ধ্বংস করেছে। এর জন্য তাদের জবাবদিহি করতেই হবে। আমরা বলেছি সবার আগে গণতন্ত্রের নেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। ৩৫ লাখ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে দেওয়া মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। অবিলম্বে এই সরকারকে পদত্যাগ করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে এবং নতুন নির্বাচন কমিশনের মধ্য দিয়ে জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল পার্লামেন্ট ও সরকার গঠন করতে হবে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, লুটেরা সরকারের এলিট শ্রেণি হচ্ছে আওয়ামী লীগের রাজনীতিবিদ, মন্ত্রী, এমপি, ওয়ার্ড পর্যায়ের রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরা। আমলা কিছু আছেন যারা প্রতিদিন দেখবেন প্রজেক্ট তৈরি করছে কীভাবে তাদের সম্পদ আরও বাড়বে। কানাডার বেগম বাজারে তাদের আরও বাড়ি তৈরি হবে। আরও আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু উচ্ছিষ্টভোগী শিক্ষক-বুদ্ধিজীবী। তারা যখন টকশোতে কথা বলেন, তারা প্রমাণ করতে চান আসলেই মানুষ বেহেশতে আছে। মোমেন সাহেব কোনো অমূলক কথা বলেননি। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ যখন স্বাধীন হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করে, তখন আওয়ামী লীগ সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারত সরকারকে আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে বলেছেন। এর অর্থ তারা ভারত সরকারের অনুকূলেই টিকে আছে। বিএনপির এই নেতা বলেন, আমি গতকালও (শুক্রবার) পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের ব্যাখ্যা জানতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ব্যাখ্যা তারা দেয়নি। অথচ পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার জায়গা থেকে সরে আসেননি। তিনি একটা বক্তব্য দিয়েছেন সেই বক্তব্যে তিনি আবার ওইটাই নিশ্চিত করেছেন। মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ যতবারই ক্ষমতায় এসেছে ততবারই বর্গিদের ভূমিকা পালন করেছে। সরকার আমাদের ন্যূনতম অধিকারগুলো কেড়ে নিয়েছে। একটি গণমাধ্যমে পরিষ্কার করে উঠে এসেছে গোয়েন্দা সংস্থার দ্বারা পরিচালিত আয়না ঘর নামে একটি টর্চার সেল আছে। সেই সেলে আমাদের নেতা-কর্মীদের ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। টর্চার করা হয় দিনের পর দিন মাসের পর মাস। কাউকে কাউকে সেখানে মেরে ফেলা হয়। আবার কাউকে বছরের পর বছর সেখানে রেখে দেওয়া হয়। যারা সেখান থেকে বেরিয়ে এসেছেন তারা কথা বলতে শুরু করেছেন। আসন্ন নির্বাচনের কারণে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচলেটকে সরকার দেশে আসার অনুমিত দিয়েছে। এর আগে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে আসতে চেয়েছিল তাদের আসার অনুমতি দেওয়া হয়নি। জাতিসংঘ এবার তাদের বিশ্বব্যাপী বার্ষিক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের বিচারকাণ্ড বিষয়ে তুলে ধরেছে। বাংলাদেশে গুম হয় এটা এখন বিশ্বের সামনে চলে এসেছে।

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর মন্দিরে আক্রমণ হয়েছে : বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর মন্দিরে আক্রমণ হয়েছে। রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে গতকাল জন্মাষ্টমীর শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। মির্জা ফখরুল বলেন, শুধু হিন্দু নয়, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, মুসলিম সবার ওপর আক্রমণ হচ্ছে। যতক্ষণ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত কোনো সম্প্রদায়ের মানুষ নিরাপদে থাকবে না। বিএনপি নেতা বিজন কান্তি সরকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর