বুধবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

একাত্তরের আদর্শে মৌলবাদী শক্তিকে মোকাবিলা : মোদি

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, ১৯৭১ সালের আদর্শ জীবন্ত রেখে মৌলবাদ ও সন্ত্রাসবাদী শক্তিকে সম্মিলিতভাবে মোকাবিলা করা জরুরি। এসব শক্তি আমাদের পারস্পরিক বিশ্বাসকে আঘাত করতে চায়। গতকাল হায়দরাবাদ হাউসে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের স্থিতিশীল, সমৃদ্ধ ও প্রগতিশীল বাংলাদেশের রূপকল্প বাস্তবায়নে  ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে ‘কদমে কদম’ (পায়ে পা) মিলিয়ে হাঁটবে। আমাদের আজকের আলোচনাটি মূলত এ প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করার একটি দুর্দান্ত সুযোগ ছিল। নরেন্দ্র মোদি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অসামান্য উন্নতি করেছে। গত কয়েক বছরে প্রতিটি ক্ষেত্রে তাদের পারস্পরিক সহযোগিতাও দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। আজকে বাংলাদেশ ভারতের বৃহত্তম উন্নয়ন অংশীদার এবং এ অঞ্চলে আমাদের বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার।

মোদি বলেন, দুই দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সাংস্কৃতিক ও মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্কও ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়েছে। তারা উভয়েই বিশ্বাস করেন কভিড মহামারি ও সাম্প্রতিক বৈশ্বিক পরিস্থিতি থেকে শিক্ষা নিয়ে তাদের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। মোদি বলেন, ‘আমরা আইটি, মহাকাশ ও পারমাণবিক শক্তির মতো খাতে সহযোগিতা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যা আমাদের তরুণ প্রজন্মের জন্য আগ্রহের বিষয়। আমরা জলবায়ু পরিবর্তন ও সুন্দরবনের মতো ঐতিহ্য রক্ষায়ও সহযোগিতা অব্যাহত রাখব।’ তিনি বলেন, রূপসা নদীর ওপর রেলসেতুর উদ্বোধন পারস্পরিক যোগাযোগ বৃদ্ধির একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। এ সেতুটি ভারতের লাইন অব ক্রেডিটের অধীনে খুলনা ও মোংলা বন্দরের মধ্যে নির্মিত নতুন রেললাইনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বাংলাদেশের রেল ব্যবস্থার উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে ভারত সব ধরনের সহায়তা অব্যাহত রাখবে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ক্রমবর্ধমান জ্বালানির দাম বর্তমানে সব উন্নয়নশীল দেশের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে। বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন সংযোগের বিষয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ফলপ্রসূ আলোচনা চলছে। আজ মৈত্রী তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের কাজ সম্পন্নের ঘোষণার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে সাশ্রয়ী বিদ্যুতের প্রাপ্যতা বৃদ্ধি করবে। মোদি বলেন, ভারত বাংলাদেশে পণ্য রপ্তানির জন্য এশিয়ার বৃহত্তম বাজার এবং এই প্রবৃদ্ধি আরও ত্বরান্বিত করতে তারা শিগগিরই দ্বিপক্ষীয় ব্যাপক অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (সেপা) নিয়ে আলোচনা শুরু করবে।

ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, বন্যা প্রশমনের ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর ‘ফলপ্রসূ আলোচনা’ হয়েছে। ভারত রিয়েল-টাইমের ভিত্তিতে বন্যা সংক্রান্ত তথ্য বাংলাদেশের সঙ্গে শেয়ার করছে এবং তারা তথ্য আদান-প্রদানের সময়সীমাও বাড়িয়েছে। তিনি বলেন, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের মধ্য দিয়ে ৫৪টি নদী প্রবাহিত হয়েছে। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে এগুলো দুই দেশের মানুষের জীবন-জীবিকার সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে আছে। এই নদীগুলো সম্পর্কিত লোককাহিনি ও লোকগীতিও আমাদের যৌথ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সাক্ষী। আজ আমরা কুশিয়ারা নদীর পানি বণ্টন নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি সই করেছি। এটি ভারতের দক্ষিণ আসাম ও বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলকে উপকৃত করবে।

সর্বশেষ খবর