বাংলাদেশের সীমান্তঘেঁষে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে দিন দিন সংঘাতের এলাকা বাড়ছে। কোনোভাবেই বন্ধ হচ্ছে না গোলাগুলি ও গোলাবর্ষণ। গোলাগুলির বিকট শব্দে সীমান্তের বাসিন্দাদের মধ্যে উৎকণ্ঠা ও আতঙ্কে মাঠে কাজকর্ম প্রায় বন্ধ। অন্যদিকে নিরাপত্তার স্বার্থে সীমান্তে চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপের পাশাপাশি সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি)। উখিয়ার পালংখালী সীমান্তের আঞ্জুমানপাড়া, পূর্ব ফারির বিল ও বটতলী সীমান্তেঘেঁষে রয়েছে হাজার হাজার একর চাষাবাদের জমি, আছে ১৫টির মতো মৎস্য ঘের। এসবের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে পালংখালী খাল। চারদিকে যেন সবুজের সমারোহ। চাষাবাদ, মৎস্য ঘের এবং খালে মাছ ও কাঁকড়া শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে ১০ হাজারের বেশি মানুষ। কিন্তু সীমান্ত উত্তেজনার রেশ এখন এসব এলাকায়। সীমান্তের ওপারে গোলাগুলি ও মর্টারের গোলার বিকট শব্দ ভেসে আসছে প্রতিনিয়ত। গত তিন দিন ধরে জীবিকার একমাত্র উৎস চাষাবাদ, মৎস্য ঘের ও খালে যেতে পারছেন না এলাকার কৃষক, দিনমজুর ও জেলেরা।
মৎস্য ঘেরের শ্রমিক আক্কাস বলেন, মিয়ানমারে যে অবস্থা শুরু হয়েছে, কোনোভাবেই আমরা বাংলাদেশি মানুষ মাছের ঘেরে থাকতে পারছি না। বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের ওপারে গতকাল সকাল ১১টায় বিকট শব্দে একটি মর্টার শেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। ঘুমধুম ইউপি সদস্য মো. আলম জানান, এলাকার মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এলেও উৎকণ্ঠা যেন কাটছেই না। অনেকে রাতে ঘুমাতে পারছেন না। আবার অনেকে রাতের বেলা অন্য ক্যাম্পে গিয়ে আশ্রয় নিচ্ছেন। এদিকে সীমান্তের ওপারে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়ে আসায় এপারের জনজীবনেও স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে। তুমব্রু বাজারে গতকাল জনসমাগম বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি বলেছেন, আমরা এখনই সীমান্ত থেকে ৩০০ পরিবারকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে চাচ্ছি না। সব ধরনের প্রস্তুতি থাকলেও আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। প্রয়োজন হলে লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে দেরি হবে না।