ইরানের নৈতিক পুলিশ হিজাব না পরায় ২২ বছর বয়সী তরুণী মাহশা আমিনিকে কাস্টডিতে নিয়ে পৈশাচিকভাবে পিটিয়ে হত্যা করার ঘটনায় ইরানজুড়ে বিক্ষোভ করে চলেছেন নারীরা। লাগাতার এ বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে দেশটি। এদিকে এ ইস্যুতে ইরানের নৈতিক পুলিশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সূত্র : রয়টার্স।
খবরে বলা হয়, গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ ইরানি নিরাপত্তা ও নৈতিক পুলিশের সাতজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। তাদের বিরুদ্ধে নারীদের, নাগরিক সমাজের এবং শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকারীদের অধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে। এই নতুন নিষেধাজ্ঞার লক্ষ্য, ইরানের নৈতিক পুলিশ প্রধান মোহাম্মদ রোস্তামি চেশমেহ গাচি এবং তেহরানের জন্য এই বাহিনীর পরিচালক হাজ আহমেদ মিরজেই। যদিও ইরানি তরুণী মাহশা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদের পর মিরজেইকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। মাহশাকে তারই তত্ত্বাবধানে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার আওতায় আরও রয়েছেন, ইরানের গোয়েন্দা বিভাগের মন্ত্রী ঈসমাইল খতিব, বাসিজ বাহিনীর উপ-অধিনায়ক সালার আবনুশ, আইন প্রয়োগকালী বাহিনীর উপ-অধিনায়ক কাসেম রেজাই, ওই বাহিনীর প্রাদেশিক বাহিনী মানুশের আমানুল্লাহি এবং ইরানি সেনার স্থলবাহিনীর কমান্ডার কিউমার্স হেইদারি। এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে এই ইরানি কর্মকর্তাদের সব ধন-সম্পদ আটক করা হবে এবং যুক্তরাষ্ট্র ও বিদেশে তাদের সঙ্গে আর্থিক লেনদেনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। ট্রেজারি বিভাগের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এই নিষেধাজ্ঞার চূড়ান্ত লক্ষ্য শাস্তি দেওয়া নয়, বরং তাদের আচরণে ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসা। মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘এসব কর্মকর্তা সেই সমস্ত সংগঠনের তদারকি করে, যারা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকারীদের এবং ইরানের সুশীল সমাজের সদস্যদের, রাজনৈতিক ভিন্ন মতাবলম্বীদের এবং ইরানের বাহাই সম্প্রদায়ের লোকজনকে দমন করতে নিয়মিত সহিংসতা চালিয়ে থাকে।’ উল্লেখ্য, ২২ বছর বয়সী আমিনি গত ১৬ সেপ্টেম্বর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তার আগে তিন দিন তেহরানের একটি নৈতিক পুলিশের কাস্টডিতে আটক ছিলেন তিনি। মাথায় হিজাব না পরার জন্য তাকে আটক করে বেদম পেটানো হয়েছিল।
