মঙ্গলবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

পাঁচ বছর পর মুখোমুখি বাইডেন-জিন পিং

ইন্দোনেশিয়ার বালিতে গতকাল বৈঠকের আগে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের করমর্দন -এএফপি

প্রতিদিন ডেস্ক

পাঁচ বছর পর মুখোমুখি বাইডেন-জিন পিং

দ্বন্দ্ব-বিরোধে উত্তাপ ছড়ানো দুই প্রতিপক্ষ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং গতকাল বহুল আলোচিত শীর্ষ বৈঠক করেছেন। গতকাল ইন্দোনেশিয়ার বালিতে জি-২০ সম্মেলনকে সামনে রেখে তারা দুই দেশের পক্ষে দীর্ঘ পাঁচ বছরেরও বেশি সময় পর প্রথম মুখোমুখি হন। উভয়পক্ষের রেড লাইনের মধ্যে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকের বিস্তারিত তাৎক্ষণিকভাবে জানা না গেলেও গণমাধ্যমগুলো প্রধান খবর হিসেবে বৈঠকের বিষয়টি তুলে ধরেছে।

চীনা গণমাধ্যম সিনহুয়ার খবরে বলা হয়, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং গতকাল ইন্দোনেশিয়ার বালিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে দেখা করেন। বৈঠকের সময় শি জিন পিং বলেছেন, দুটি প্রধান দেশের নেতা হিসেবে তাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের জন্য সঠিক পথ নির্ধারণ করতে হবে। চীনা প্রেসিডেন্ট ‘প্রাথমিক যোগাযোগ এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন থেকে আজ পর্যন্ত চীন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ৫০-এরও বেশি ঘটনাবহুল বছর পার করা এবং লাভ-ক্ষতির পাশাপাশি অভিজ্ঞতা ও শিক্ষার প্রসঙ্গ তুলে বলেন, ‘দুই পক্ষের উচিত এটিকে আয়না হিসেবে নিয়ে ভবিষ্যতের পথ দেখানো।’ তিনি আরও উল্লেখ করেন, দুই প্রেসিডেন্টকে নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করতে হবে, চীন-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য সঠিক পথ নির্ধারণ করতে হবে। একজন রাষ্ট্রনায়ককে তার দেশকে কোথায় নিয়ে যেতে হবে- তা নিয়ে চিন্তা করা উচিত। অন্যান্য দেশ এবং বিস্তৃত বিশ্বের সঙ্গে কীভাবে মিলিত হতে হয়- সে সম্পর্কেও ভাবা এবং জানা উচিত। শি জিন পিং বলেন, ‘বিশ্ব একটি চৌরাস্তায় চলে এসেছে। এখান থেকে কোথায় যাবেন? এটি এমন একটি প্রশ্ন যা শুধু আমাদের মনে নয়, সব দেশের মনেও রয়েছে। তাই বিশ্ব আশা করে, চীন এবং ইউনাইটেড রাজ্যগুলো তাদের সম্পর্ক সঠিকভাবে পরিচালনা করবে। বিশ্ব শান্তির জন্য আরও আশা- বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার বৃহত্তর আস্থা এবং অভিন্ন উন্নয়নে শক্তিশালী প্রেরণা আনতে উভয় পক্ষেরই সব দেশের সঙ্গে কাজ করা উচিত।’

উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৭ সালে সাক্ষাৎ করেছিলেন শি জিন পিং এবং জো বাইডেন। উভয়ে তখন নিজ নিজ দেশের ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন। এরপর বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর এটিই তাঁদের মধ্যে প্রথম সাক্ষাৎ।

রয়টার্স জানিয়েছে, বৈঠকের বিষয়ে বাইডেনের একজন সহযোগী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের প্রতিযোগিতা যেন সংঘাতে না গড়ায়, সে বিষয়ে কথা বলেন বাইডেন। এ ছাড়া বেইজিংয়ের মিত্র উত্তর কোরিয়া যেন পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ করে সেটা নিয়েও কথা বলেন তিনি। বিবিসির খবরে বলা হয়, দুই নেতা হোটেলে সারি সারি যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের পতাকার সামনে সাক্ষাতে করমর্দন করেন। সাক্ষাতের শুরুতে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং বাইডেনকে বলেন, ‘আপনার সঙ্গে  দেখা হয়ে ভালো লাগছে। সর্বশেষ পাঁচ বছরেরও বেশি সময় আগে আমরা সুইজারল্যান্ডের দাভোসে সাক্ষাৎ করেছিলাম। আপনি  প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার পর আমরা অনলাইনে ফোনকলে  যোগাযোগ রক্ষা করেছি। তবে সরাসরি সাক্ষাতের পরিপূরক কিছুই হতে পারে না। আজ আমরা মুখোমুখি সাক্ষাৎ করছি।’ শি জিন পিং বলেন, ‘আমরা অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। একইসঙ্গে অনেক শিক্ষাও নিয়েছি। ইতিহাস হলো বড় পাঠ্যপুস্তক (টেক্সটবুক)। সুতরাং ইতিহাসকে আমাদের দর্পণ হিসেবে নেওয়া উচিত। এখন যুক্তরাষ্ট্র-চায়না সম্পর্ক যে পর্যায়ে আছে, আমাদের অনেক তত্ত্বাবধান করা উচিত। দুটি বড় দেশের নেতা হিসেবে আমাদের যথোপযুক্ত নকশা করা প্রয়োজন। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে আমাদের সঠিক পথ খুঁজে পাওয়া প্রয়োজন।’ অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সংঘাত পরিহারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। শি জিন পিংয়ের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে বাইডেন বলেন, ‘সরাসরি আলোচনার পরিপূরক আসলে কিছু  নেই।’

সর্বশেষ খবর