সোমবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

ম্যারাডোনাকে ছাপিয়ে মেসি

আসিফ ইকবাল

লিওনেল মেসি ; ভালোবাসার এক নাম। একজন ফুটবল জাদুকর। একজন ছন্দের রাজপুত্র। একজন ফুটবল শিল্পী। একজন নায়ক। একজন মহানায়ক। একটি আবেগের নাম। সবকিছুকে ছাপিয়ে এখন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। ৩৫ বছর বয়সী মেসি ক্যারিয়ারের শেষ বিশ্বকাপ খেলেছেন কাতারে। খেলিয়েছেন গোটা দলকে। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন করেছেন আর্জেন্টিনাকে। আলবিসেলেস্তাদের তৃতীয়বারের মতো বিশ্বসেরা করতে মেসি পেছনে ফেলেছেন আর্জেন্টিনার আরেক ফুটবল ঈশ্বর দিয়েগো ম্যারাডোনাকে। বিশ্বকাপ ফুটবল ইতিহাসে একমাত্র ফুটবলার, যিনি দু-দুটি বিশ্বকাপে ‘গোল্ডেন বল’ জেতার বিরল রেকর্ড গড়েন।     

১৯৭৮ সালে ঘরের মাঠে বিশ্বকাপে ম্যারাডোনার বয়স ছিল মাত্র ১৮। আগের বছর, ১৯৭৭ সালে আর্জেন্টিনাকে যুব বিশ্বকাপ ট্রফি উপহার    দেন যুবক ম্যারাডোনা। তার দুর্দান্ত পারফরম্যান্স মুগ্ধতা ছড়িয়েছিল ফুটবলপ্রেমীদের মাঝে। তরুণ ম্যারাডোনাকে আর্জেন্টাইনরা চেয়েছিলেন ঘরের মাঠে বিশ্বকাপে। কিন্তু কোচ সিজার লুই মেনোত্তি বয়স কমের অজুহাতে নেননি। ১৯৮২ সালে প্রথমবার খেলতে নামলেও প্রতিপক্ষের ফাউলের শিকার হয়েছিলেন বারবার। ১৯৮৬ সালের মেক্সিকো বিশ্বকাপকে নিজের করে নিয়েছিলেন  ২৬ বছর বয়সী ম্যারাডোনা। ভিন্নগ্রহের জাদুকরী ফুটবল খেলে আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ ট্রফি উপহার দেন। ওই আসরের কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দুটি গোল করেছিলেন ম্যারাডোনা, যার একটিকে বলা হয় ‘গোল অব দ্য সেঞ্চুরি’। চার বছর পর ১৯৯০ সালে ইতালি বিশ্বকাপের ফাইনালেও খেলেছিল আর্জেন্টিনা। কিন্তু বিতর্কিত রেফারিংয়ে জার্মানির কাছে হেরে যান ম্যারাডোনা। দুটো বিশ্বকাপে ফাইনাল খেলে একটিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন আর্জেন্টাইন ফুটবল ঈশ্বর। ম্যারাডোনা বিশ্বকাপ খেলেছেন ১৯৮২, ১৯৮৬, ১৯৯০ ও ১৯৯৪- চার বিশ্বকাপে ২১ ম্যাচে গোল করেছেন ৮টি।

মেসি বিশ্বকাপ খেলছেন ২০০৬ সাল থেকে। টানা ৫ বিশ্বকাপে খেলেছেন ২৬ ম্যাচ। যা বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলার রেকর্ড। ২৫টি ম্যাচ খেলেছেন জার্মানির কিংবদন্তির ফুটবলার লোথার ম্যাথিউস। মেসি বিশ্বকাপে গোল করেছেন ১৩টি। নাম লিখেছেন ফ্রান্সের জাস্ট ফন্টেইনের পাশে। ১৯৫৮ সালে ফন্টেইন ৬ ম্যাচে গোল করেছিলেন ১৩টি। গতকাল ফাইনালে করেন ২ গোল। আসরে তার গোল ৭টি। ৮টি করে গোল্ডেন বুট জিতেছেন এমবাপ্পে। ম্যারাডোনা গোল্ডেন বল জিতেছিলেন ১৯৮৬ সালে। সেবার তিনি গোল করেছিলেন ৫টি। ম্যারাডোনা ও মেসি ফাইনাল খেলেছেন দুবার করে। ম্যারাডোনা চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন, রানার্সআপ হয়েছেন। মেসিও চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। রানার্সআপ হয়েছিলেন ২০১০ সালে। ম্যারডোনা এবং মেসি দুজনেই বিশ্বসেরা ফুটবলার। দুজনেই জীবন্ত কিংবদন্তি। ম্যারাডোনা মারা গেছেন ২০২১ সালের নভেম্বরে। আর্জেন্টিনা চাইছে মেসির জন্য বিশ্বকাপ জিততে। মেসি চাইছেন বিশ্বকাপ জিতে ম্যারাডোনার পাশে বসতে। তবে দুটি বিশ্বকাপের গোল্ডেন বল জিতে ম্যারাডোনাকে পেছনে ফেলেছেন মেসি।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর