আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আত্মশক্তি হলো মূল কথা। সেই আত্মশক্তিতে আমরা আজ বলীয়ান একটা জাতি। সারা পৃথিবীতে মহামন্দার তপ্ত বাতাস। এই তপ্ত বাতাসের আঁচ আমাদের এখানেও লেগেছে। তবে সংকটের মধ্যে শেখ হাসিনাই একমাত্র নেতা, যিনি সংকটকে সম্ভাবনার রূপ দিতে পারেন। গতকাল সকালে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভার স্বাগত বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওবায়দুল কাদের বলেন, আজ পাকিস্তান আমাদের চেয়ে শক্তিশালী, এর পেছনে আর্থ-সামাজিক কোনো বিষয়ই নেই। শক্তিশালী কারণ, তাদের শ খানেক পরমাণু বোমা আছে। আমাদের কাছে বিধ্বংসী বোমা নেই। এ ছাড়া অন্য কোনো অংশে পাকিস্তান আমাদের বিট করতে পারেনি। গত আগস্ট মাসে পাকিস্তানের এক্সপ্রেস ট্রিবিউন পত্রিকায় প্রকাশিত লেখার উদ্ধৃতি দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, পাকিস্তানের পত্রিকা এক্সপ্রেস ট্রিবিউনে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করে পাকিস্তানের একটি প্রদেশের একজন সাবেক মুখ্য সচিব সাহেব একটি নিবন্ধন লেখেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, পাকিস্তানের তুলনায় ১৯৭০ সালে দেশটি (বাংলাদেশ) ৭৫ শতাংশ দরিদ্র ছিল। কিন্তু এখন পাকিস্তানের চেয়ে ৪৫ শতাংশ ধনী। স্বাধীনতা চেয়ে, স্বাধীনতা এনে বঙ্গবন্ধু ভুল করেননি। পাকিস্তানের ১ হাজার ৫৪৩ ডলারের তুলনায় বাংলাদেশে এখন মাথাপিছু আয় ২ হাজার ২২৮ ডলারের ওপরে। এটা পাকিস্তানের ওই পত্রিকার সংখ্যা। ওবায়দুল কাদের বলেন, এখন বাংলাদেশের জিডিপি ৪৪৩ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলার। পাকিস্তানের ৩০৭ দশমিক ১৯ বিলিয়ন ডলার। পার ক্যাপিটাল ইনকাম বাংলাদেশের ২ হাজার ৮২৪, পাকিস্তানে ১৬৫৮। জিডিপি গ্রোথ ৭ দশমিক ৫ শতাংশ বাংলাদেশের, পাকিস্তানের ২ শতাংশ। সেতুমন্ত্রী বলেন, মানুষের গড় আয়ু হিসেবে আমাদের ৭৩, পাকিস্তানের ৬৭ বছর। রিজার্ভ আমাদের ৪৮ থেকে বিশ্ব পরিস্থিতির কারণে ৩৪ বিলিয়ন। পাকিস্তানের ৬ দশমিক ৭ বিলিয়ন এই মুহূর্তে। সাক্ষরতায় আমাদের ৭৪ দশমিক ৬, আর পাকিস্তানে ৫৮ শতাংশ। আমি তুলনামূলক চিত্রটা তুলে ধরলাম এই কারণে যে পাকিস্তান থেকে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনে, এই বিজয় ছিনিয়ে এনে, বঙ্গবন্ধু জাতির পিতা কিছুমাত্র ভুল করেননি। তিনি বলেন, সব শিক্ষাই আছে। আমরা শেখ হাসিনার কাছ থেকে শিখব। এই পরিবার থেকে শিক্ষার আছে। আজ সততা, সাহসের জন্য কোথাও যেতে হবে না। কোনো মনীষীর নিবন্ধন পড়তে হবে না। আমাদের জাতির পিতা থেকে আমরা শিক্ষা নেব। এই জনপদে বঙ্গবন্ধু নেই, এই জনপদে শেখ হাসিনাও এক দিন থাকবেন না। কিন্তু তাদের উত্তরাধিকার বেঁচে থাকবেন। স্বাধীনতার উত্তরাধিকার বেঁচে থাকবে, বেঁচে থাকবে মুক্তির উত্তরাধিকার।