শুক্রবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় শেখ হাসিনা

বিএনপির শাসনামলে দুর্নীতিই নীতি হয়ে যায়

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপির শাসনামলে দুর্নীতিই নীতি হয়ে যায়

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপির সময় দুর্নীতিই নীতি হয়ে যায়। আবার যখন আওয়ামী লীগ সরকারে এসেছে তখনই মানুষের জীবনমান উন্নত হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার নিজেকে জনগণের সেবক মনে করে এবং সেভাবেই কাজ করে। গতকাল সন্ধ্যায় গণভবনে আওয়ামী লীগের সর্বশেষ কার্যনির্বাহী সভায় সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ২০০১ সালের নির্বাচন ছিল গভীর চক্রান্ত। জনগণের ভোট আওয়ামী লীগ বেশি পেয়েছিল কিন্তু ক্ষমতায় বসতে পারেনি। বিএনপি-জামায়াতের শাসনামল ছিল জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসের। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, লুটপাট সব মিলিয়ে দেশে আরেকটি কালো অধ্যায় শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপির রাজনৈতিক ধারাবাহিকতাই ছিল অগণতান্ত্রিক ও অবৈধ উপায়ে। জেনারেলের পকেট থেকেই বিএনপির জম্ম। মাটি ও মানুষ থেকে এদের জš§ হয়নি। এরা সব সময় মানুষের ভোটের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে। তিনি বলেন, ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কারও কোনো অভিযোগ ছিল না। সে সময় বিএনপির সব পছন্দের লোক ক্ষমতায় থাকার পরও যে দল ৩১টি আসন পায়, সে দল জনগণের ভোটে ক্ষমতায় আসবে- এটা বিএনপি নেতারা কীভাবে মনে করেন?

বিএনপির কঠোর সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, যে দলের নেতা বিদেশে টাকা পাচারের জন্য শাস্তি পাওয়া, গ্রেনেড হামলায় শাস্তি পাওয়া, ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালান, মানি লন্ডারিংয়ের সঙ্গে জড়িত, মুচলেকা দিয়ে দেশ ছেড়েছে, এখন বিদেশে বসে দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছে, দেশের যে টাকা পাচার করে নিয়ে গেছে, এখন সেই টাকা দিয়ে বিদেশে দেশের বদনাম করছে, দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে, তারাই আবার টাকা পাচার নিয়ে কথা বলে! জনগণের ভোটে বিএনপি ক্ষমতায় যাবে- এ স্বপ্ন তারা কীভাবে দেখে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দেশের কিছু বুদ্ধিজীবী প্রতিবন্ধী অগণতান্ত্রিক সরকারব্যবস্থার জন্য জামা-কাপড় ইস্তিরি করে বসেই থাকেন। অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে তাদের মূল্য বাড়ে। গণতান্ত্রিক ধারায় দেশ চললে তাদের হতাশা লাগে। এ সময় তাদের জ্ঞান-বুদ্ধিকে দেশের কল্যাণের কাজে লাগানোর আহ্বান জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, যাদের চোখ আছে তারা উন্নয়ন দেখবে। আর বুদ্ধিজীবী প্রতিবন্ধীরা কোনো উন্নয়ন দেখেন না। নির্বাচিত সরকার হটিয়ে অনির্বাচিত কাউকে ক্ষমতায় আনলে দেশের কোনো ভালো হবে না বলেও মন্তব্য করেন সরকারপ্রধান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সূচনা বক্তব্যের পর তাঁর সভাপতিত্বে সভায় মূল আলোচনা শুরু হয়। সভায় কার্যনির্বাহী কমিটির অধিকাংশ সদস্য উপস্থিত ছিলেন। আগামীকাল অনুষ্ঠেয় দলের ২২তম জাতীয় সম্মেলনের আগে এটাই দলের শেষ কার্যনির্বাহী কমিটির সভা। ফলে অনেকের জন্য এটাই হয়তো শেষ কার্যনির্বাহী সভায় অংশগ্রহণ। সূত্র জানান, সভায় অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হয় দলের গঠনতন্ত্র সংশোধনের খসড়া। অবহিত করা হয় কাউন্সিলের আয়োজনের সার্বিক প্রস্তুতির সর্বশেষ অবস্থা। দলের বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকরা নিজ নিজ দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভাগের সাংগঠনিক রিপোর্ট সভায় তুলে ধরেন। রীতি অনুযায়ী, আলোচনা শেষে কার্যনির্বাহী সংসদের এই বৈঠক মুলতবি ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। জাতীয় সম্মেলেনের কাউন্সিল অধিবেশন শুরুর আগমুহূর্ত পর্যন্ত বর্তমান কমিটির কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক মুলতবি থাকবে। তবে এর মধ্যে প্রয়োজনে যে-কোনো সময় মুলতবি সভা ডাকতে পারেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী।

সর্বশেষ খবর