শনিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

ছাড় পেতে পেতে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে

আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছাড় পেতে পেতে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেছেন, ছাত্র সংগঠনের নেতা বা নেত্রী বলে তাদের অনেক ছাড় দিয়ে থাকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। ছাড় পেতে পেতে বিশ্ববিদ্যালয়ের হর্তাকর্তা মনে করে নিজেদের। এর ফলে যথেচ্ছাচারভাবে ক্ষমতা প্রয়োগের চেষ্টা করে তারা। এর ফলে র‌্যাগিংয়ের নামে শিক্ষার্থী নির্যাতন হচ্ছে। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।

এ শিক্ষাবিদ বলেন, র‌্যাগিংয়ের সঙ্গে জড়িত অপরাধী কোন ছাত্র সংগঠনের নেতা বা কর্মী সেটি বড় কথা নয়, বড় কথা হচ্ছে সে কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র বা ছাত্রী। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিয়ম-কানুন মেনেই একজনকে ছাত্রত্ব বজায় রাখতে হবে। কোনো ছাত্র বা ছাত্রী যদি ছাত্র সংগঠন করতে চায়, সেই স্বাধীনতা তার রয়েছে। কিন্তু ছাত্র সংগঠনের ছাত্রচ্ছায়ায় থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নীতিবিরোধী কোনো কর্মকাণ্ডে জড়াতে পারে না। প্রকৃতপক্ষে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই ছাত্রছাত্রীকে প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে ভূমিকা পালন করে। সাম্প্রতিক কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীদের ওপর নির্যাতনের ঘটনা দেখছি, এগুলো সবই কোনো না কোনো রাজনৈতিক দলের, বিশেষ করে ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের।

অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘ছাত্র সংগঠনের নেতৃত্বে থেকেও কেউ কেউ এরকম বিব্রতকর কর্মকাণ্ডে জড়াচ্ছে। কারণ সেই নেতা বা নেত্রী মনে করছে তার হাতে ক্ষমতা রয়েছে। আসলে ছাত্র হিসেবে তার কোনো ক্ষমতাই থাকার কথা নয়। সমস্যা হচ্ছে, আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো তার ছাত্রছাত্রীদের ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের নেতা বা নেত্রী বলে অনেক ছাড় দিয়ে দেয়। এর ফলে এমন বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। একই সঙ্গে এই ছাত্র সংগঠনগুলোতে যারা নেতৃত্ব দেয় তারাও হয়তো এ বিষয়গুলোতে নজর দিচ্ছে না। আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তারা কিছু শিক্ষার্থীকে ছাত্রছাত্রী না ভেবে বরং রাজনৈতিক নেতা হিসেবে বিবেচনা করছেন। এটি নিয়ে সচেতন হওয়া, সতর্ক হওয়ার সময় এসেছে। শিক্ষার্থীকে ছাত্র বা ছাত্রী হিসেবে দেখতে হবে। কেউ যদি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নীতিবিরুদ্ধ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি নষ্ট করে তবে তার ছাত্রত্ব সাময়িকভাবে বরখাস্ত করার তো বটেই, প্রয়োজনে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করার সুযোগ রয়েছে। প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এই ক্ষমতা রয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো যথাযথভাবে এসব ব্যাপারে পদক্ষেপ নিলে র‌্যাগিংয়ের মতো এমন অপ্রীতিকর ঘটনা আর ঘটবে না।’

সর্বশেষ খবর