বিশিষ্ট নগর ও পরিবেশবিদ স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেছেন, বাংলাদেশ জন্মের পরই বিকেন্দ্রীকরণের প্রক্রিয়া শুরু করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। পরবর্তীতে স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, অফিস, আদালত- সব ঢাকাকেন্দ্রিক হয়ে ওঠে। সব অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ঢাকাকে কেন্দ্র করে। যত দিন এগুলো বিকেন্দ্রীকরণ করতে না পারব, ঢাকার দুরবস্থা কাটবে না। মানুষকে ঢাকাবিমুখ করতে দেশের সর্বত্র উন্নত শিক্ষা, ভালো স্বাস্থ্যসেবা ও কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে হবে। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) যুগ্ম সম্পাদক ইকবাল হাবিব বলেন, রাজনৈতিক সদিচ্ছা আর দৃঢ়তায় বিকেন্দ্রীকরণ জরুরি। কর্মসংস্থান, বিনিয়োগ বান্ধবতা আর দ্রুত ও নির্ভরযোগ্য যোগাযোগ (ভৌত ও ডিজিটাল) নিশ্চিত করার পাশাপাশি স্থানীয় সরকারব্যবস্থা শক্তিশালী করতে হবে। স্থানীয়ভাবে সম্পদ আহরণ ও বিনিয়োগ সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি ইতোমধ্যেই পরিকল্পিত ঢাকা ঘিরে চক্রাকার সড়ক ও জলপথনির্ভর উদ্যোগগুলো দ্রুত সম্পাদনের মাধ্যমে শহরতলি- তথা ‘পেরি আরবান’ এলাকাগুলো পরিকল্পিত নগরায়ণের আওতায় আনা ত্বরান্বিত করতে হবে। সরকার পরিচালন ব্যবস্থার বাস্তব বিকেন্দ্রীকরণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারে বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার মাধ্যমে এই ঘুরে দাঁড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু হোক এক্ষুনি। তিনি বলেন, সব অফিস ঢাকায় হতে হবে কেন? হাওর উন্নয়ন বোর্ড, সেচ ভবনের মতো অনেক অফিস ঢাকায় থাকার যৌক্তিকতা নেই। অনেক সরকারি কর্মকর্তার পোস্টিং জেলা শহরে, তার পরিবার ঢাকায় থাকে। স্বাধীনতার পর সব জিলা স্কুলগুলো ছিল দেশসেরা। এখন সেই স্কুলগুলোর অবস্থা শোচনীয়। এর কারণ খতিয়ে দেখা দরকার। সরকারি কর্মকর্তা, এমপি, মন্ত্রী, বড় বড় ব্যবসায়ীদের সন্তানরা ঢাকায় লেখাপড়া করে। ঢাকার বাইরে ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, উন্নত চিকিৎসা, নাগরিক সুযোগ-সুবিধা, কর্মসংস্থান থাকলে মানুষ ঢাকায় ভিড় করত না। বিভিন্ন মামলা-মোকদ্দমার জন্য মানুষকে ঢাকায় আসতে হয়। বিভাগীয় পর্যায়ে উচ্চ আদালতের বেঞ্চ করে দিলে মানুষকে এত দূর ছুটে আসতে হতো না।
