রবিবার, ৫ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

তিস্তার পানি টানতে ৪৭ কিমি খাল পশ্চিমবঙ্গে

কলকাতা প্রতিনিধি

কৃষিকাজে ব্যবহারের জন্য তিস্তা নদীর পানি সেচে নিতে পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলার গজলডোবা তিস্তা ব্যারাজ প্রকল্পের অধীনে ৪৭ কিমি দীর্ঘ দুটি খাল কাটা হবে। এ জন্য শুক্রবার প্রায় ১ হাজার একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। কোচবিহার এবং জলপাইগুড়ি জেলার বিস্তীর্ণ এলাকার কৃষি জমিকে সেচের আওতায় আনতে সাহায্য করবে। তবে মমতা সরকারের এই খাল খননের সিদ্ধান্তে রুষ্ট হতে পারে প্রতিবেশী বাংলাদেশ। বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে পানি সংকট নিরসনে এক দশকের বেশি সময় ধরে তিস্তার পানি দাবি করে আসছে বাংলাদেশ। ২০১১ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরে তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি সই হওয়ার কথা থাকলেও, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি তার সফরসঙ্গী হননি। রাজ্যের স্বার্থ দেখিয়ে তিনি সরে আসার কারণেই এই চুক্তি বাস্তবের মুখ দেখেনি। এরপর একাধিকবার দুই দেশের সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে উদ্যোগ নেওয়া হলেও বাস্তবের মুখ দেখেনি তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি। শুক্রবার জলপাইগুড়ি জেলায় পশ্চিমবঙ্গের সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিকের উপস্থিতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক বসে। উপস্থিত ছিলেন রাজ্য সরকারের রাষ্ট্রমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন ও অন্য সরকারি কর্মকর্তারা। ওই বৈঠকেই ১ হাজার একর জমি সেচ দফতরকে হস্তান্তর করে জেলা প্রশাসন। সেচ দফতর জানায়, এ প্রকল্পের অধীন তিস্তা ও জলঢাকা থেকে পানি সরবরাহ করার জন্য গজলডোবা ব্যারাজ থেকে কোচবিহার জেলার চ্যাংরাবান্ধা পর্যন্ত ৩২ কিলোমিটার খাল। ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে অন্য আরেকটি খাল তিস্তার বাম তীরে খনন করা হবে। খাল দুটি থেকে ১ লাখ কৃষক সেচের সুবিধা পাবেন। শিলিগুড়িতে অবস্থিত উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অধ্যাপক জানান, ‘মমতা সরকার এখন সেচ প্রকল্প সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিয়েছে, এ ঘটনায় স্পষ্ট যে তিস্তা থেকে আরও বেশি পরিমাণ পানি নতুন খালের মাধ্যমে প্রবাহিত হবে। এর অর্থ শুকনো মৌসুমে তিস্তা থেকে বাংলাদেশে আরও কম পানি প্রবাহিত হবে।’ তিস্তা নদীর উৎসস্থল উত্তর সিকিমের হিমালয় পর্বতমালা। শিলিগুড়ি থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে সেবকের করোনেশন সেতু পেরিয়ে তিস্তা পশ্চিমবঙ্গের সমভূমিতে প্রবেশ করেছে। এরপর পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলার গজলডোবা এবং বাংলাদেশের রংপুরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে এই নদী মিশেছে ব্রহ্মপুত্র নদে। সূত্রে খবর গ্রীষ্মকালে এই তিস্তায় পানি থাকে ১০০ কিউমেকস (কিউবিক মিটার প্রতি সেকেন্ড)। সেখানে ভারত এবং বাংলাদেশ উভয় দেশে কৃষি জমিতে সেচের জন্য প্রয়োজন হয় ১৬০০ কিউমেকস।

 

সর্বশেষ খবর