মঙ্গলবার, ১৪ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা
সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

কোনো চাপে টলানো যাবে না

♦ সংলাপ কার সঙ্গে করব? ♦ দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির চেষ্টা হচ্ছে ♦ ইভিএম ইসির ওপর ছেড়ে দিয়েছি ♦ অস্ত্র চোরাকারবারি বিএনপির ব্যবসা ♦ পরিবারের পরবর্তী প্রজন্মের রাজনৈতিক আকাক্সক্ষা নেই ♦ ড. ইউনূস নিয়ে বিবৃতি নয়, বিজ্ঞাপন ♦ রমজানে খাদ্যপণ্যের অভাব হবে না

নিজস্ব প্রতিবেদক

কোনো চাপে টলানো যাবে না

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নির্বাচন নিয়ে এমন কোনো চাপ নেই যেটা শেখ হাসিনাকে টলাতে পারে। এটা মাথায় রাখতে হবে। আমার শক্তি একমাত্র দেশের জনগণ আর ওপরে আল্লাহ। তিনি বলেন, আমার মাথায় আছে বাবার (জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু) আশীর্বাদের হাত। জনগণের স্বার্থে যেটা করার আমরা সেটাই করব। অতীতেও এ রকম বহু চাপ ছিল, তাতে আমাদের কিছু আসে যায় না। গতকাল বিকালে গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে ‘আগামী নির্বাচনকেন্দ্রিক বিদেশি কূটনীতিকদের আনাগোনা শুরু হয়েছে। কোনো চাপ আছে কি না’- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। কাতারে পাঁচ দিনের রাষ্ট্রীয় সফর নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে লিখিত বক্তব্যে কাতার সফর নিয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন সরকারপ্রধান। এরপর প্রায় দেড় ঘণ্টা সময় নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংবাদ সম্মেলনে মঞ্চে প্রধানমন্ত্রীর পাশে ছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ছাড়াও সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। এ ছাড়া মন্ত্রিসভার কয়েকজন সদস্য ও দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচন সামনে রেখে একটা অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টিরও চেষ্টা হচ্ছে। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি কেউ কিছু করতে পারবে না। হয়তো সাময়িক কিছু একটা সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। কিন্তু সেটা মোকাবিলা করবে আমাদের দেশের জনগণই। বিএনপির সঙ্গে সংলাপের সম্ভাবনা নাকচ করে তিনি বলেন, সংলাপ কার সঙ্গে করব? ২০১৮ সালের নির্বাচনে আমি সংলাপ করেছি। তার রেজাল্ট নির্বাচনটাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা ছাড়া আরও কিছুই করেনি। বিএনপি ৩০০ আসনে ৭০০ নমিনেশন দিয়ে টাকা খেয়ে নিজেরাই নিজেদের নির্বাচন থেকে সরিয়ে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। আর এদের (বিএনপির) সঙ্গে কীসের কথা বলব! কীসের বৈঠক করব? একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে আমাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। আমার মা-বাবার খুনিদের সঙ্গে সংলাপে বসেছি শুধু দেশের কথা চিন্তা করে। নির্বাচন সামনে রেখে দেশি-বিদেশি কোনো চাপসংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, এ রকম বহু চাপ ছিল, পদ্মা সেতুর আগে তো কম চাপ দেওয়া হয়নি। কোনো একটা দেশের সেই রাষ্ট্রদূত থেকে শুরু করে, তাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী থেকে শুরু করে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে টেলিফোনের পর টেলিফোন! কেন? একটা ভদ্রলোক (ড. ইউনূস), তাকে একটি ব্যাংকের এমডি পদে রাখতে হবে। এমডি পদে কী মধু তা তো আমি জানি না। ৭০ বছর বয়স হয়ে গেছে, তার পরও এমডি পদে থাকতে হবে! একটাই সুবিধা, এমডি পদে থাকলে মানি লন্ডারিং করা যায়। পয়সা বানানো যায়, পয়সা মারা যায়, গরিবের রক্ত চুষে খাওয়া যায়। সেই চাপ কিন্তু শেখ হাসিনা সহ্য করে চলে এসেছে। তারপর পদ্মা সেতু বানিয়ে দেখালাম। তাই ওসব চাপে আমাদের কিছু আসে যায় না। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যে দল বেশি লাফায় সে দলের দুই নেতাই হচ্ছে সাজাপ্রাপ্ত আসামি। সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা না পারবে ইলেকশন করতে, না পারবে ক্ষমতায় আসতে। তিনি বলেন, বিএনপি নিজের গঠনতন্ত্র নিজেরা ভঙ্গ করছে। কারণ তাদের গঠনতন্ত্রে আছে সাজাপ্রাপ্ত আসামি দলের নেতা হতে পারে না। এখন সেই সাজাপ্রাপ্ত আসামিকেই দলের নেতা বানিয়ে রেখে দিয়েছে। এখন এই দলের কাছে কী আশা করবেন? তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনেও জনগণ যেন স্বাধীনভাবে ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিতে পারে সেই প্রস্তুতি আছে। দলীয় সরকারের অধীনেও যে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হতে পারে সেটা আমরা প্রমাণ করেছি। স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোই এর প্রমাণ। ২০০৮-এর নির্বাচনে বিএনপির নেতৃত্বে ২০-দলীয় জোট ৩০০ সিটের মধ্যে পেল মাত্র ৩০টি। আর ২৭০টি পেলাম আমরা মহাজোট। ২০০৮-এর নির্বাচন যেটাকে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে অবাধ, সুষ্ঠু বলা হয়, সেই নির্বাচনেই যখন তাদের (বিএনপি) এই দুরবস্থা, এখন তো আমরা অন্তত কাজ করে মানুষের আস্থা অর্জন করতে পেরেছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বগুড়ায় খবর নিলাম, সেখানকার মানুষেরও আমাদের সরকারের প্রতি একটা আস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আমার দল করে না, অন্য দল করে, তাদের মুখ থেকেই কিন্তু আমি আজ এ তথ্যটা নিয়েছি। সাধারণ মানুষ, গ্রামের মানুষের এখন একটাই কথা- এ সরকারেরই থাকা উচিত। এটা সাধারণ মানুষের আকাক্সক্ষা। এরপর কী হবে দেখা যাক। জনগণ ভোট দিলে আছি না দিলে নাই। এ নিয়ে আফসোস নেই। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এই নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য অনেক আন্তর্জাতিক ও দেশি এজেন্সি উন্মুখ হয়ে আছে। ৪০ জনের নামে (ওয়াশিংটন পোস্টের বিজ্ঞাপন) যেটা এসেছে, ওটার পেছনেও কিছু অ্যামবিশন আছে। এতে কোনো সন্দেহ নেই। যাদের ইচ্ছা তারা জনগণের কাছে যাবে। নির্বাচন যাতে অবাধ-সুষ্ঠু হয় তার জন্য নির্বাচন প্রক্রিয়ায় সংশোধন বা সংস্কার আনা হয়েছে। ১৪ বছর আগের বাংলাদেশের অবস্থা চিন্তা করার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৬ সালের পর ভোটারবিহীন ভোটার তালিকা, ২০০৭-এর নির্বাচন- এ ঘটনাগুলোর যাতে আর পুনরাবৃত্তি না ঘটে তার জন্যই আমরা এ সংস্কারগুলো করে দিয়েছি। এখন জনগণের ওপর নির্ভর করে তারা কীভাবে চায়? নির্বাচনের প্রস্তুতি আমাদের সব সময়ই আছে, জনগণ যেন ভোট দিতে পারে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারই প্রথম নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য আইন করে দিয়েছে। সেই আইনের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের স্বতন্ত্রতা আমরা দিয়ে দিয়েছি। নির্বাচন কমিশনকে সম্পূর্ণ অবাধ নিরপেক্ষ করে গড়ে দিয়েছি যাতে জনগণের ভোটের অধিকার জনগণ প্রয়োগ করবে। জনগণ যাকে খুশি ভোট দেবে- এটা আমাদেরই স্লোগান। ‘আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব’। সেই ভোট-ভাতের আন্দোলন কিন্তু আমাদেরই করা। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, আমাদের আন্দোলন, রাষ্ট্র পরিচালনায় যেসব কথা আমরা দিয়েছি, আমরা তা রেখেছি। মাঝখানে করোনাভাইরাস আর ইউক্রেন যুদ্ধ যদি না হতো আমাদের প্রবৃদ্ধি ৮ ভাগের ওপরে ছিল, আমরা আরও এগিয়ে যেতে পারতাম। আমাদের দারিদ্র্যের হার ২০ ভাগে নামিয়ে এনেছিলাম। আজ যদি করোনা আর যুদ্ধ না থাকত আরও ২ থেকে ৩ শতাংশ দারিদ্র্য কমিয়ে আনতে পারতাম। নানা কারণে হয়তো হয়নি। তবে এখানে থেমে থাকলে হবে না, হতাশাগ্রস্ত হলে হবে না। আমি কখনো হতাশায় ভুগি না, একটা আত্মবিশ্বাস নিয়ে চলি, আমার তো হারানোর কিছু নেই। তিনি বলেন, আমাদের সামনে নির্বাচন। ’৭৫ সালের পর যে ধরনের নির্বাচন হয়েছে আর আমরা ক্ষমতায় আসার পর থেকে যে নির্বাচন হয়েছে, তাতে করে অন্তত তখনকার মতো ভোট চুরি, কেন্দ্র দখল, কারচুপির সুযোগ এখন নেই। এখন ছবিসহ ভোটার তালিকা, আইডি কার্ড হয়ে গেছে। স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স আছে, সিল মেরে ব্যালট বাক্স ভরে ফেলার সুযোগ নেই। তিনি বলেন, ইভিএম করতে চেয়েছিলাম। কারণ সবাই ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভোট দেবে, সঙ্গে সঙ্গে ফলাফল পাবে। এখন এসব নির্বাচন কমিশনের ওপর, তারা যতটুকু পারে করবে। পুরোটা করতে পারলে ভালো হতো, অন্তত মানুষ তাদের ভোটের অধিকার প্রয়োগ করতে পারত। একটা আধুনিক পদ্ধতি মানুষ ব্যবহার করতে পারত। সেটা নিয়ে এত আলোচনা-সমালোচনা, আমরা এই বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের ওপর ছেড়ে দিয়েছি। এক প্রশ্নের জবাবে শান্তিতে নোবেলজয়ী গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা বিবৃতি না, এটা একটা বিজ্ঞাপন। যে ৪০ জনের নাম ব্যবহার করা হয়েছে একজন বিশেষ ব্যক্তির পক্ষে, এর উত্তর কী দেব, জানি না। আমার একটা প্রশ্ন আছে, যিনি এত নামিদামি নোবেল প্রাইজপ্রাপ্ত, তার জন্য এই ৪০ জনের নাম খয়রাত করে এনে বিজ্ঞাপন দিতে হবে কেন! তা-ও আবার বিদেশি পত্রিকায়। তিনি বলেন, আমাদের বিচার বিভাগ স্বাধীন। শ্রমিকদের অধিকার আমরা রক্ষা করি, ট্যাক্স বিভাগ আছে আলাদা। তারা সেটি আদায় করে। কেউ যদি আইন ভঙ্গ করে, শ্রমিকের অধিকার কেড়ে নেয়, শ্রম আদালত আছে। এ ক্ষেত্রে আমার তো কিছু করার নেই সরকারপ্রধান হিসেবে। আমাকে কেন বলা হলো। এর বাইরে কী বলব। তবে একটা কথা বলব, পদ্মা সেতু কিন্তু আমরা করে ফেলেছি, এইটুকু সবাইকে স্মরণ করিয়ে দিলাম।

বিএনপির শাসনামলে তাদের মদদেই ১০ ট্রাক অস্ত্র পাচার নিয়ে সাবেক উলফা নেতা অনুপ চেটিয়ার সাক্ষাৎকার প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১০ ট্রাক অস্ত্র নিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়ল, এটা আবার রাজনৈতিক হয় কী করে। এ ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলাতেই কিন্তু তারেক রহমান সাজাপ্রাপ্ত এবং খালেদা জিয়ার মন্ত্রীরাও। তার পরও তারা যদি এটাকে রাজনৈতিক বলে তাহলে আমার মনে হয় জনগণই বিচার করবে। এটা জনগণের সঙ্গে মুনাফেকি ছাড়া আর কিছু না। অস্ত্র চোরাকারবার ব্যবসাটাই হচ্ছে তাদের ব্যবসা। আর সেটাকে তারা রাজনীতি হিসেবে দেখাতে চায়। যেটা হাতেনাতে ধরা পড়ল যে ১০ ট্রাক ভর্তি অস্ত্র পাচার হচ্ছে। যে পুলিশ ধরল সে পুলিশকে টর্চার করল, চাকরি থেকে বের করে দিল। এটা আবার শুধু রাজনৈতিক হয় কীভাবে? তিনি বলেন, আসলে ওদের (বিএনপির) জন্মই হয়েছে অস্ত্র হাতে নিয়ে, অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী একজন সেনা কর্মকর্তার পকেট থেকে। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে সে-ই একাধারে সেনাবাহিনীর প্রধান, আবার সেই অবস্থায় থেকে নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা দিয়েছে অস্ত্র হাতে নিয়ে। নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা দিয়ে ক্ষমতায় বসেছে। আর সেই ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে তৈরি করা দল হলো বিএনপি। কাজেই এদের কাছ থেকে জনগণ আর বেশি কী আশা করবে? তিনি বলেন, খালেদা জিয়া ও তার ছেলেদের লুটপাট-দুর্নীতির কথা আমাদের না, এটা আমেরিকা-সিঙ্গাপুরে ধরা পড়েছে। এমনকি তাদের পাচার করা ৪০ কোটি টাকা কিন্তু বাংলাদেশ উদ্ধার করে ফেরত এনেছে। এ কথাটা বোধহয় সবার মনে রাখা উচিত। সেটাকেও তারা রাজনৈতিক বলবে? তিনি বলেন, সরাসরি অস্ত্র চোরাকারবারি ও গ্রেনেড হামলা ওটাও তো রাজনৈতিক। রাজনৈতিকভাবে আমাকে হত্যা করতে চেয়েছিল, এই তো। ভালো, সবই রাজনৈতিক বলে ধামাচাপা দেওয়া। এরা রাজনীতির কী জানে, রাজনীতির মাধ্যমে জন্ম না তো। জন্ম তো অস্ত্র হাতে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীর হাতে। নতুন রাষ্ট্রপতি (মো. শাহাবুদ্দিন) প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্রপতি একজন পোড় খাওয়া মানুষ এবং একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। পঁচাত্তর-পরবর্তী জিয়াউর রহমান তাঁকে গ্রেফতার করে ডান্ডাবেড়ি দিয়ে রেখেছিলেন। কারণ তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদকারী। তিনি জুডিশিয়াল সার্ভিসেও চাকরি করেছেন। বিএনপি আমলে বাধ্য হয়ে তাঁকে চাকরি ছাড়তেও হয়েছে। কাজেই আমি মনে করি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তাঁর মাঝে ওই দায়িত্ববোধ, রাজনৈতিক সচেতনতা, দেশপ্রেম ও ব্যক্তিত্ব আছে। নতুন রাষ্ট্রপতিরও সব সময় এই প্রচেষ্টাই থাকবে নির্বাচন যেন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়। তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব সরকারের একার নয়, সবার। সবাইকে সে দায়িত্ব পালন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে সাংবাদিকদেরও দায়িত্ব আছে। সত্যের জয় হয়। এটা কেউ ঢাকতে পারে না। এটা আমি বিশ্বাস করি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে গত ৭ মার্চ ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি। ববি রাজনীতিতে আসছেন কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ফুল দিতে গেছে পরিবারের পক্ষ থেকে। কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য কিংবা আকাক্সক্ষা নিয়ে যায়নি। শেখ রেহানা আমার ছোট বোন। আমাদের পাঁচ ছেলেমেয়ে। তারা কিন্তু আপনাদের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। আজ স্টার্টআপ প্রোগ্রাম, ইয়াং বাংলা, সিআরআইয়ের মতো গবেষণা প্রতিষ্ঠানসহ যত রকমের কাজ আছে তারা করে যাচ্ছে দেশের স্বার্থে। তিনি বলেন, আজ ডিজিটাল বাংলাদেশ আমরা উপভোগ করছি। সেখানে তাদের সবারই কিন্তু কিছু না কিছু অবদান আছে। তারা কিন্তু দেশের মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু ওই রকম কোনো রাজনৈতিক আকাক্সক্ষা নিয়ে কাজ করেনি। এখন পর্যন্ত তাদের দলেরও সদস্য করা হয়নি। তারা দলের কাজের মধ্যেও আসে না। তারা রাজনৈতিক অভিলাষ নিয়ে কাজ করে না। জনগণের স্বার্থে করে, দেশের স্বার্থে করে।

রমজানে খাদ্যপণ্যের অভাব হবে না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মজুদকারী, তারা মজুদ করে রাখার চেষ্টা করে। আর আমাদের কিছু কিছু বিরোধী দল তো আছেই, সব জায়গায় ঝামেলা পাকানোর জন্য একটা চেষ্টা। কথায় কথায় কোনো একটা কথা ছড়াল, মিথ্যা একটা ধুয়া তুলল। এগুলো তো হবেই, এখানে বিভ্রান্ত হওয়ার কিছু নেই। মানুষের যাতে কষ্ট না হয় রমজান মাসে, তার জন্য যথাযথ চেষ্টা আমরা করব।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর