শনিবার, ২৫ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

খাতুনগঞ্জে নেই পাইকারের সাড়া বেচাকেনা কমেছে ৪০ শতাংশ

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

দেশের ভোগ্যপণ্যের অন্যতম পাইকার বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ। রমজানের কয়েক দিন আগেই ক্রেতার আনাগোনায় সরগরম থাকে এ বাজার। অথচ এবারে রমজানের চিত্র একেবারের ভিন্ন। বাজারে অতি প্রয়োজনীয় পণ্যের পর্যাপ্ত মজুদ থাকলেও মিলছে না ক্রেতার সাড়া। পাইকারদের বাজারমুখী না হওয়ায় রমজানের অতি প্রয়োজনীয় পণ্যের বিক্রি কম হয়েছে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ।

খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ছৈয়দ ছগীর আহমদ বলেন, ‘এবার প্রত্যাশিত বেচাকেনা হয়নি খাতুনগঞ্জে। বেচাকেনা না হওয়ার অনেক কারণ রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ভোক্তা পর্যায়ে ক্রয়ক্ষমতা কমে যাওয়া, পাইকার ব্যবসা দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়া এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের স্কেল বৈষম্য। প্রত্যাশিত বেচাকেনা করতে না পারায় ক্ষতির সম্মুখীন হবেন ব্যবসায়ীরা।’ চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, ‘প্রত্যেক বছর রমজানের মাস দেড়েক আগে থেকেই পাইকারদের আনাগোনায় সরগরম থাকত চাক্তাই খাতুনগঞ্জ। এবার বাজারে প্রয়োজনীয় পণ্য মজুদ থাকলেও ক্রেতারা বাজারমুখী হননি। ফলে অন্য বছরের চেয়ে এবার ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ বেচা-বিক্রি কম হয়েছে।’ দেশের ভোগ্যপণ্যের সিংহভাগ জোগান দিয়ে আসছে চাক্তাই খাতুনগঞ্জ। রমজানের আগে ক্রেতার আনাগোনা বেড়ে যায় বহু গুণ। তাই রমজানের কয়েক মাস আগে থেকেই প্রস্তুতি নেন এ বাজারের আমদানিকারকরা। রমজান শুরুর মাস দেড়েক আগে পাইকারদের আনাগোনায় মুখরিত হয়ে থাকে এ বাজার। কিন্তু এবার রমজানের আগে ক্রেতার কাছ থেকে প্রত্যাশিত সাড়া মেলেনি। এ সময় ব্যস্ততম এ এলাকায় ছিল না গাড়ির দীর্ঘলাইন। শ্রমিকদের ছিল না পণ্য উঠানামার ব্যস্ততা। আগের মতো ছিল না শ্রমিকদের হাঁকডাক। এক প্রকার অলস সময় কাটিয়েছেন এ বাজারের আমদানিকারকরা। রমজানে পাইকার কমে যাওয়ার একাধিক কারণ চিহ্নিত করেছেন খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা। যার মধ্যে রয়েছে খুচরা পর্যায়ে ক্রয়ক্ষমতা কমে যাওয়া, ভোক্তরা সাশ্রয়ী হওয়া, দেশের বিভিন্ন উপজেলায় পাইকার বাজার ছড়িয়ে পড়া এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ওজন স্কেলের কারণে পরিবহন ব্যয় বেড়ে যাওয়া অন্যতম। এবার কেনাবেচা কমার বিষয়ে খাতুনগঞ্জের আড়তদার সোলায়মান বাদশা বলেন, ‘কয়েকটি কারণে ব্যবসার ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়ছে খাতুনগঞ্জ। যার মধ্যে রয়েছে সড়ক পথে ওজন স্কেল বৈষম্য। স্কেলের কারণে পরিবহন খরচ বাড়ছে। এ ছাড়া এক সময় বন্দর থেকে পণ্য খাতুনগঞ্জ হয়েই দেশের বিভিন্ন জায়গায় যেত। এখন বহির্নোঙর থেকে নিজেদের জাহাজে করে নৌপথে দেশের বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যাচ্ছে বড় আমদানিকারকরা। এতে তাদের পরিবহন খরচ কমছে। তাই প্রতিযোগিতা থেকে পিছিয়ে পড়ছে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা। কমছে বেচাকেনা।’

সর্বশেষ খবর