শুক্রবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা
ট্রলারে ১০ মৃতদেহ

ভেসে আসা কঙ্কাল নিখোঁজ জেলেদের ধারণা পুলিশের

আরও তিনজন গ্রেফতার

কক্সবাজার প্রতিনিধি

ভেসে আসা কঙ্কাল নিখোঁজ জেলেদের ধারণা পুলিশের

কক্সবাজারের নাজিরারটেক উপকূলে ট্রলার থেকে ১০ লাশ উদ্ধারের ঘটনায় আরও তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ও র‌্যাব। এ নিয়ে এ ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হলো। এর আগে গ্রেফতার হওয়া দুই আসামি পাঁচ দিন করে রিমান্ডে রয়েছেন। একই সঙ্গে মঙ্গলবার রাতে মহেশখালী উপজেলার কুতুবজোমের খাল থেকে উদ্ধার হওয়া কঙ্কালটি নিখোঁজ জেলেদের মধ্যে একজনের বলে ধারণা করছে পুলিশ।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মাহফুজুল ইসলাম জানিয়েছেন, বুধবার রাতে প্রযুক্তিগত সহায়তায় ১০ লাশ উদ্ধারের ঘটনায় চকরিয়া উপজেলার বদরখালী এলাকা থেকে গিয়াস উদ্দিন মুনির (৩২) নামের একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মুনির বদরখালী এলাকায় মো. নুর নবীর ছেলে। তাকে ইতোমধ্যে আদালতে পাঠিয়ে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। তবে রিমান্ড আবেদনের শুনানি এখনো হয়নি।

গতকাল সকালে এ ঘটনায় সন্দেহভাজন    দুজনকে আটক করে পুলিশের কাছে র‌্যাব সোপর্দ করেছে জানিয়ে এসপি বলেন, বাঁশখালীর কুদুকখালী থেকে আটক করে এ দুজনকে সোপর্দ করা হয়েছে। এদেরও গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। এরা হলেন বাঁশখালীর কুদুকখালী এলাকার মৃত সিরাজুল হকের ছেলে ফজল কাদের মাঝি (৩০) ও শামসুল আলমের ছেলে আবু তৈয়ব মাঝি (৩২)।

এসপি মো. মাহফুজুল ইসলাম জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাতে মহেশখালী উপজেলার কুতুবজোমের খাল থেকে একটি কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়। কঙ্কালটি এ ঘটনায় নিখোঁজ জেলেদের একজনের বলে ধারণা করা হচ্ছে। ১০ জনের পাশাপাশি এ কঙ্কালের ডিএনএ নমুনাও সংগ্রহ করা হয়েছে। পরীক্ষার জন্য নমুনা ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। পরীক্ষার প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যাবে।

ইতোমধ্যে ১০ লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে পুলিশ সুপার বলেন, নিহতদের কারও শরীরে গুলি বা অন্য কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ফলে এদের হাত-পা বেঁধে হিমঘরে আটকে হত্যার বিষয়টি অনেকটা পরিষ্কার। তিনি জানিয়েছেন, আদালতের আদেশে মামলার এজাহারভুক্ত ১ নম্বর আসামি মাতারবাড়ীর এলাকার ট্রলারমালিক বাইট্টা কামাল ও ৪ নম্বর আসামি ট্রলারমাঝি করিম সিকদার রিমান্ডে রয়েছেন। এদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই চলছে। এর সূত্র ধরে চলছে তদন্ত। পুলিশ এ ঘটনায় কয়েকটি উৎস সামনে রেখে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে জানিয়ে মাহফুজুল ইসলাম বলেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে এ হত্যাকাণ্ডের মূল কারণ জানা সম্ভব হতে পারে। রবিবার গুরা মিয়া নামের এক ব্যক্তির মালিকানাধীন একটি ট্রলার ঘটনার শিকার সাগরে ভাসমান থাকা ট্রলারটি নাজিরারটেক উপকূলে নিয়ে আসে। আর ওই ট্রলারের হিমঘর থেকে হাত-পা বাঁধা ১০ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। ওই ট্রলারটির মালিক মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের হরিয়ারছড়া এলাকার ছনখোলাপাড়ার মৃত রফিক উদ্দিনের ছেলে শামসুল আলম ওরফে শামসু মাঝি। ইতোমধ্যে তার লাশ গ্রহণ করেছেন স্ত্রী রোকেয়া বেগম। এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার বাদীও তিনি। রোকেয়া বেগমও স্বীকার করেছেন ট্রলারটির মালিক তার স্বামী। উদ্ধার হওয়া ১০ জনের মধ্যে ছয়জনের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করলেও মর্গে রয়ে গেছে আরও চারজনের লাশ। এ ছাড়া মঙ্গলবার রাতে উদ্ধার হওয়া কঙ্কালটিও রয়ে গেছে। ডিএনএ পরীক্ষার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে এ পাঁচজনের পরিচয়।

 

 

সর্বশেষ খবর