বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দেওয়া জমি থেকে উচ্ছেদ নোটিসের প্রেক্ষিতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন নোবেলজয়ী ভারতীয় অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক অমর্ত্য সেন। ওই উচ্ছেদ নোটিসের ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলা দায়রা আদালতে মামলা করেছেন তাঁর আইনজীবী।
জানা গেছে, জেলা দায়রা বিচারক সুদেষ্ণা দে (চ্যাটার্জি) ছুটিতে থাকায় বৃহস্পতিবার এ মামলার শুনানি হয়নি। অতিরিক্ত দায়রা বিচারক সরজিৎ মজুমদারের এজলাসে ১৫ মে এ মামলার শুনানি হওয়ার কথা। ওইদিন এ মামলায় সম্পৃক্ত সব পক্ষকে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মলয় মুখার্জি।
উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার শান্তি নিকেতনে অমর্ত্য সেনের ‘প্রতীচী’ নামের বাড়ির জমি নিয়ে বিতর্ক দীর্ঘদিনের। অমর্ত্য সেনের ওই বাড়িতে মোট জমির পরিমাণ ১.৩৮ একর। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, ওই জমির মধ্যে ১৩ শতক দখল করে রেখেছেন অমর্ত্য সেন।এদিকে গত ১৯ এপ্রিল বিশ্বভারতী তাদের দাবি করা ১৩ শতক জমি ছেড়ে দেওয়ার সময়সীমা বেঁধে দেয়। এতে অমর্ত্য সেনের বাড়িতে নোটিস লাগিয়ে ওই জমি খালি করার জন্য ১৫ দিনের সময়সীমা দেওয়া হয়। অন্যথায় বলপ্রয়োগ করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। এর পরেই আইনি পথে হাঁটলেন অমর্ত্য সেন।
এদিকে অমর্ত্য সেনের পাশে দাঁড়িয়ে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ ও কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন বিজেপিকে কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা ‘ওরা অমর্ত্য সেনের বাড়ি বুলডোজার দিয়ে ভাঙার চেষ্টা করে দেখুক, আমি সেখানে গিয়ে বসে পড়বো।’ বুধবার নবান্নতে সংবাদ সম্মেলন করে এ হুঁশিয়ারি দেন মমতা।
অমর্ত্য সেনকে হেনস্তার প্রতিবাদে পশ্চিমবঙ্গের বিশিষ্টজনদের একাংশ বিশ্বভারতীর পদক্ষেপের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কলকাতার নন্দনে-৩ সভাঘরে ওই প্রতিবাদ সভার ডাক দেয় ‘সামাজিক মর্যাদা রক্ষা সমিতি’ নামে একটি মঞ্চ। অধ্যাপক পার্থ মজুমদার, অনিল আচার্য, গৌতম হালদার, দেব শঙ্কর হালদার, রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত, বিভাস চক্রবর্তী, স্বপ্নময় চক্রবর্তী, অনিতা অগ্নিহোত্রী, উমা দাশগুপ্তসহ ৭০ বিশিষ্ট নাগরিক এতে উপস্থিত ছিলেন।