শিরোনাম
শনিবার, ২০ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা
হজ কার্যক্রম-২০২৩ উদ্বোধনে প্রধানমন্ত্রী

হিজবুল বাহারকে জিয়া প্রমোদতরী বানিয়েছিলেন

নিজস্ব প্রতিবেদক

হিজবুল বাহারকে জিয়া প্রমোদতরী বানিয়েছিলেন

রাজধানীর আশকোনার হজ অফিসে হজ কার্যক্রম উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা -বাংলাদেশ প্রতিদিন

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান হাজিদের জাহাজকে প্রমোদতরী বানিয়েছিলেন বলে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে কম খরচে হজ করতে পাঠানোর জন্য আনা জাহাজ ‘হিজবুল বাহার’কে প্রমোদতরী বানিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান।

গতকাল সকালে রাজধানীর আশকোনার হজ অফিসে ‘হজ কার্যক্রম-২০২৩’ উদ্বোধন এবং হজযাত্রীদের সঙ্গে শুভেচ্ছাবিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতার পরপরই বঙ্গবন্ধু সৌদির বাদশাহর কাছে অনুরোধ করেছিলেন, যাতে আমাদের দেশের মানুষ হজে যেতে পারেন। সৌদির বাদশাহও সে ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। অল্প খরচে হজে পাঠানোর ব্যবস্থা বঙ্গবন্ধু করে দিয়েছিলেন। কিন্তু ’৭৫-এর পরে জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে সে জাহাজটিকে প্রমোদতরীতে পরিণত করে। তখন হজযাত্রা হতো না। এটা দুঃখজনক।

শেখ হাসিনা বলেন, বাবা সরকারে এসেই হজ ব্যবস্থা যেন সুষ্ঠুভাবে হয় তার জন্য ব্যবস্থা নেন। তখন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ। একটা টাকাও রিজার্ভ মানি নেই। কারেন্সি নোট নেই। গোলায় খাবার নেই। এর মাঝে মানুষ যাতে অল্প খরচে হজ করতে যেতে পারেন সে ব্যবস্থা তিনি নিয়েছিলেন। ‘হিজবুল বাহার’ নামে একটি জাহাজ ক্রয় করে হজের ব্যবস্থা করেছিলেন।

ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, সংসদ সদস্য হাবিব হাছান, ধর্মবিষয়ক সচিক কাজী এনামুল হাসান এনডিসি, ঢাকায় নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলান, হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম প্রমুখ।

শিশুদের জঙ্গিবাদ এবং সন্ত্রাসবাদ থেকে দূরে রেখে একটি আধুনিক ও জ্ঞানভিত্তিক উন্নত জাতি গঠনে অবদান রাখতে হজযাত্রী এবং আলেম-ওলামাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমি আপনাদের (হজযাত্রীদের) এবং আলেম-ওলামাদের জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সাহসিকতার সঙ্গে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছি, যাতে আমাদের শিশুরা এটি থেকে দূরে থাকতে পারে এবং উন্নত বাংলাদেশ গড়তে আধুনিক প্রযুক্তিতে প্রস্তুত হতে পারে। তিনি বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম এবং এটি সর্বদা মানুষের কল্যাণের ধর্ম, যা মানুষের অধিকার নিশ্চিত করে। ইসলামের নামে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস করে এমন কিছু লোকের কারণে ইসলামকে নিন্দিত করা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আসলে যারা জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস সৃষ্টি করে তাদের কোনো ধর্ম নেই। শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন, যারা জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ সৃষ্টি করছে তারা সব ধর্মেই আছে। তিনি বলেন, ‘যদি কেউ মনে করে যে তারা নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করে বেহেশতে যাবে, তা কখনই হবে না। সর্বশক্তিমান আল্লাহ তা বলেননি এবং আমাদের নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) তা বলেননি। শেখ হাসিনা আরও বলেন, আমাদের ইসলাম পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ধর্ম এবং অল্প কিছু মানুষই ইসলামের নিন্দার কারণ হয়ে উঠছে। তিনি বলেন, এ জঘন্য কাজটি থেকে লোকেদের থামাতে সবাইকে উদ্যোগ নিতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী তার ছোট বোন শেখ রেহানা ও পরিবারের অন্য সদস্যদের জন্য হজযাত্রীদের কাছে দোয়া চেয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনাদের (হজযাত্রীদের) কাছে আমার সবচেয়ে বড় দাবি হলো, আপনারা আমার বাংলাদেশের জনগণের জন্য দোয়া করবেন, যাতে তাদের ভাগ্য নিয়ে কেউ ছিনিমিনি খেলতে না পারে। তিনি হজযাত্রীদের বাংলাদেশ ও এর জনগণকে মানবসৃষ্ট বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষার জন্য প্রার্থনার আহ্বান জানান। সরকারপ্রধান বলেন, এখান থেকে ১৬১৩৬ নম্বরে কল সেন্টারের পাশাপাশি প্রতিটি হজযাত্রীকে এসএমএসের মাধ্যমে হজ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হচ্ছে এবং হজযাত্রীরা ডায়ালিং কলের মাধ্যমে সবকিছু জানতে পারবেন। তিনি আরও উল্লেখ করেন, তারা হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা আইন-২০২১ প্রণয়ন করেছেন, যা হজ ব্যবস্থাপনাকে আরও সহজ করেছে।

প্রসঙ্গত, প্রথম হজ ফ্লাইটটি আজ বেলা ২টা ৪৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সৌদি আরবের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার কথা রয়েছে। এ বছর বাংলাদেশ থেকে মোট ১ লাখ ২২ হাজার ২২১ জন হজযাত্রী পবিত্র হজ পালন করতে যাচ্ছেন। কভিড-১৯ বিধিনিষেধের কারণে গত বছর বাংলাদেশ থেকে হজযাত্রীর সংখ্যা ছিল ৫৭ হাজার ৫৮৫। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ২৭ জুন হজ অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

 

সর্বশেষ খবর