বৃহস্পতিবার, ২৫ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

অপহরণকারীদের আস্তানায় তিন অর্ধগলিত লাশ

টেকনাফে পুলিশ র‌্যাবের অভিযান

কক্সবাজার প্রতিনিধি

কক্সবাজারের টেকনাফের গহিন পাহাড়ে অপহরণকারীর আস্তানায় পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যরা অভিযান চালিয়ে অর্ধগলিত তিনজনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, এগুলো গত ২৮ এপ্রিল অপহৃতদের মৃতদেহ। অপহরণে জড়িত একজনকে আটক করা হয়েছে। গতকাল বিকালে শুরু হওয়া এ অভিযান চলে রাত ৮টা পর্যন্ত। কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. রফিকুল ইসলাম জানান, টেকনাফের দমদমিয়া এলাকার গহিন পাহাড়ে অপহরণকারীর আস্তানায় র‌্যাব ও পুলিশ যৌথভাবে এ অভিযান চালায়। অভিযানস্থল গহিন পাহাড় থেকে অর্ধগলিত তিনজনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। এদের পরিচয় তিনি নিশ্চিত করতে পারেননি।

র‌্যাব-১৫ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন জানিয়েছেন, মৃতদেহ ৩টি গত ২৮ এপ্রিল টেকনাফে গিয়ে অপহৃত তিন যুবকের বলে দাবি করছেন স্বজনরা। স্বজনদের দাবি সঠিক হলে মৃতদেহ ৩টি কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার জালালাবাদ সওদাগরপাড়া এলাকার মোহাম্মদ ইউছুপ, চৌফলদন্ডী ইউনিয়নের রুবেল, কক্সবাজার শহরের নুনিয়াছড়া এলাকার ইমরানের। এরা তিনজনই বন্ধু।

র‌্যাব-১৫ এর অধিনায়ক জানান, ২৮ এপ্রিল টেকনাফে গেলে তাদের সিএনজি অটোরিকশা থামিয়ে একদল অপহরণকারী পাহাড়ের গহিন জঙ্গলে নিয়ে যায়। পরে তাদের ছেড়ে দিতে ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে নির্যাতনের ভিডিও পাঠায়। ঘটনার পর থেকে পরিবারের সদস্যরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কয়েকটি সংস্থায় যোগাযোগ রক্ষা করে। কিন্তু গহিন জঙ্গল এবং অপহরণকারীরা বারবার স্থান পরিবর্তন করায় তাদের উদ্ধার এবং জড়িত কাউকে আটক করা যায়নি। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনায় জড়িত একজনকে আটক করেছে র‌্যাব। তার স্বীকারোক্তি মতে ঘটনাস্থলে পৌঁছে তিন মৃতদেহের সন্ধান পাওয়া যায়।

টেকনাফ থানার ওসি মো. আবদুল হালিম বলেন, ‘আটক ব্যক্তিকে সঙ্গে নিয়ে টেকনাফের গভীর জঙ্গলে অভিযান চালানো হয়। এ সময় তিনজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। মৃতদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।

অপহৃত কৃষকের সন্ধান মেলেনি চার দিনেও : টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের লেদা থেকে অপহৃত আলী হোসেনের (৫৫) সন্ধান মেলেনি চার দিনেও। ২১ মে লেদার পাহাড়ি এলাকায় গরু চড়াতে গেলে কৃষক আলী হোসেনকে অপহরণ করে টেকনাফের গহিন পাহাড়ের দিকে নিয়ে যায়। অপহৃত আলীর ছোট ভাই কামাল হোসেন জানিয়েছেন, তার বড় ভাই লেদার পুরনো রোহিঙ্গা ক্যাম্প পার্শ্ববর্তী পাহাড়ি এলাকায় গরু চড়াতে যান। সেখানে তার কৃষিজমি রয়েছে। ২১ মে বিকালে মুঠোফোনে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি মুক্তিপণের ১০ লাখ টাকা জোগাড় করতে বলে। এরপর অপহৃত আলীর সঙ্গে কথা বলতে দেয়। ওই সময় আলী তাকে বলেন, তিনি রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের হাতে অপহৃত হয়েছেন। অপহরণের খবর পুলিশ, র‌্যাবসহ কোনো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানানো হলে সন্ত্রাসীরা তাকে মেরে ফেলবে বলে হুমকি দিয়েছে। টেকনাফ থানার ওসি মো. আবদুল হালিম বলেন, হ্নীলা থেকে কৃষক অপহরণের ঘটনা তার জানা নেই। এ বিষয়ে কেউ থানায় অভিযোগও করেনি। তারপরও তিনি ঘটনার অনুসন্ধান করছেন।

সর্বশেষ খবর