বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সেন্টমার্টিন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্য তাঁর রাজনৈতিক কৌশল। সেন্টমার্টিন প্রসঙ্গে বিএনপির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী মিথ্যা, সম্পূর্ণ বানোয়াট ও ভিত্তিহীন তথ্য দিয়েছেন। বিএনপি মহাসচিব বলেন, দলের সঙ্গে কোনো দেশের কখনো চুক্তি হয় না। চুক্তি হয় দেশের সঙ্গে দেশের। সেন্টমার্টিন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য প্রসঙ্গে তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, বিএনপিসহ বিরোধীমতের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল আইনে মামলা হয়, প্রধানমন্ত্রীর এ মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে এ আইনে মামলা হয় কি না?
মির্জা ফখরুল গতকাল দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তৃতা করছিলেন। সেখানে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালামও বক্তব্য দেন। এ সময় বিএনপি ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুস সাত্তার, লিটন মাহমুদ, আ ন ম সাইফুল ইসলামসহ নগর বিএনপির সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সুইজারল্যান্ড সফরের ওপর বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘এখনো যদি আমি বলি, ওই সেন্টমার্টিন দ্বীপ বা আমাদের দেশ কাউকে লিজ দেব, তাহলে আমাদের ক্ষমতায় থাকতে কোনো অসুবিধা নেই। আমি জানি সেটা। কিন্তু আমার দ্বারা সেটি হবে না।’ এ সময় প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন রেখে বলেন, বিএনপি সেন্টমার্টিন দ্বীপ বা বাংলাদেশকে বিদেশিদের কাছে লিজ (বন্ধক) দিয়ে ক্ষমতায় আসতে চায় কি না? ২০০১ সালে বিএনপি গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর এসব বক্তব্যের জবাব দিতে এ সংবাদ সম্মেলনের অয়োজন করে বিএনপি। এতে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিএনপি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সব অভিযোগ ভিত্তিহীন। বিএনপি কখনো দেশের স্বার্থ বিক্রি করেনি। আজ পর্যন্ত কেউ এমন অভিযোগ করেনি যে বিএনপি দেশ বিক্রি করেছে বা দেশের কোনো জিনিস দিয়ে দিয়েছে। বিএনপি সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ আছে। বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, তারা (সরকার) নিজেদের মুখে বলেছে, আমরা (ভারতকে) সবকিছু দিয়ে দিয়েছি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিদেশিদের সাহায্য চাওয়ার কথা বলেছেন। একবার ভারতের কাছে বলেছেন, একবার যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে বলেছেন যে, আপনারা একটু সাহায্য করেন, বিএনপি যাতে নির্বাচনে আসে। আবার যেন আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় থাকতে দেওয়া হয়।
মির্জা ফখরুল প্রধানমন্ত্রীকে ইঙ্গিত করে বলেন, তবে উনি কি নিশ্চিত হয়ে গেছেন যে ক্ষমতায় আর থাকতে পারছেন না। নইলে এ প্রসঙ্গ আসছে কেন?
বিএনপি মহাসচিব বলেন, সেন্টমার্টিন দিয়ে দেওয়ার কথা বলছেন তারা (আওয়ামী লীগ সরকার), সেন্টমার্টিন কি চাচ্ছে তারা (আমেরিকা)? আপনি চিন্তা করতে পারেন, সেই দেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কটা কোন পর্যায়ে গিয়ে দাঁড়াবে। যুক্তরাষ্ট্র বুধবার বিবৃতি দিয়ে বলেছে যে, তারা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে, তারা এসব কখনো চায়নি।
তিনি বলেন, এ সরকার আর ক্ষমতায় থাকতে পারবে না জেনেই বিদেশিদের কাছে সাহায্য চাচ্ছে। বিএনপি ও জনগণ তাদের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও এক ইঞ্চি মাটিও কাউকে নিতে দেবে না, সরকার যা বরাবরই করেছে।
প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, জনগণের আশা-আকাক্সক্ষা পূরণের জন্য দায়িত্ব পালন করুন। সরকারের বেআইনি আদেশ মেনে দেশ ও জাতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করবেন না।
