সৎ, যোগ্য, দলনিরপেক্ষ ও প্রজ্ঞাবান লোকদের দিয়ে প্রশাসন পুনর্গঠন এবং সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা ছাড়া জনগণ দায়সারা নির্বাচন মেনে নেবে না বলে অন্তর্বর্তী সরকারকে সতর্ক করে দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতারা।
গতকাল রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে জামায়াতের ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ এবং মহাখালী কলেরা হাসপাতালের সামনে মহানগরী উত্তরের সমাবেশ ও গণমিছিলে নেতারা সরকারকে এ হুঁশিয়ারি দেন। এ ছাড়া একই দাবিতে গতকাল ঢাকার বিভিন্ন স্থানে কর্মসূচি পালন করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ আরও সাত দল।
ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি, নভেম্বরের মধ্যে গণভোট আয়োজনসহ পাঁচ দফা আদায়ের লক্ষ্যে গণমিছিলপূর্ব সমাবেশের আয়োজন করে জামায়াতে ইসলামী। এ সময় দলটির নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব হলো অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করা। অতীতের আওয়ামী পদ্ধতির নির্বাচন জনগণ কোনোভাবেই মেনে নেবে না। একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য সবার আগে প্রশাসনের দলবাজি বন্ধ করতে হবে। নির্বাচনের আগেই জুলাই গণহত্যার বিচার, স্বাক্ষরিত জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির জন্য নভেম্বরের মধ্যই গণভোটসহ পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের সব নাগরিকের ভোটের মূল্যায়ন করতে হবে। প্রয়োজন হলে এ বিষয়ে গণভোটের আয়োজন করা যেতে পারে।’ এতে সভাপতিত্ব করেন উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন। উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমানের সঞ্চালনায় সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন উত্তরের জামায়াত নেতা ডা. ফখরুদ্দীন মানিক, ইয়াছিন আরাফাত প্রমুখ।
এদিকে বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে গণমিছিলপূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনের দিন গণভোটের সুযোগ নেই। জাতীয় নির্বাচনে ক্ষমতায় যাওয়ার প্রতিযোগিতায় কোনো দল সংঘর্ষে জড়ালে কিংবা ভোট কারচুপি হলে গণভোটও বিতর্কিত হবে। তাই নভেম্বরের মধ্যে গণভোট সম্পন্ন করে ফেব্রুয়ারিতে জুলাই সনদের ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচন করতে হবে।’ মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির ড. হেলাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের পরিচালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি যথাক্রমে মোহাম্মদ কামাল হোসেন ও ড. আবদুল মান্নান।
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি, এর ওপর নভেম্বরের মধ্যেই গণভোট আয়োজনসহ পাঁচ দফা দাবিতে গতকাল বায়তুল মোককাররম মসজিদের উত্তর গেটে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। মিছিলপূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দলের মহাসচিব ইউনুছ আহমাদ বলেন, ‘পুরোনো বন্দোবস্তের নির্বাচনের মাধ্যমে দেশ আগের পরিস্থিতিতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তা জনতা প্রতিহত করবে। জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিতে হবে। নির্বাচনের আগে গণভোট হতে হবে।’ এ ছাড়া খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) এবং বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি পৃথক গণমিছিল ও সমাবেশ করেছে।