শুক্রবার, ১৪ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

ঝটপট সাজ

ঝটপট সাজ

♦ মডেল : টুইঙ্কেল অরিন ♦ পোশাক : জেন্টল পার্ক ♦ অলঙ্কার : আভূষণ ♦ মেকআপ : শোভন মেকওভার ♦ ছবি : নেওয়াজ রাহুল

অফিস, বাসা, আড্ডা, ঘুরতে যাওয়া বা অনুষ্ঠানে নিজেকে গুছিয়ে উপস্থাপন করাটা কঠিন। তারপরও সবকিছু সামলে প্রস্তুত হতে হয় দ্রুত। সবকিছুর মাঝে নিজেকে পরিপাটি আর আকর্ষণীয় রাখাটাও বেশ ধৈর্যের ব্যাপার। কাজ, বিরূপ আবহাওয়া আর ব্যস্ততার মাঝেও ঝটপট সাজের কৌশল সম্পর্কে লিখেছেন-  তানিয়া তুষ্টি

 

হঠাৎ হঠাৎ প্রচন্ড গরম আর বৃষ্টি। সকালে পরিকল্পনা করলেন এক, দুপুরে হয়ে যায় আরেক। তাই তো সময় নিয়ে পার্লারে গিয়ে আবহাওয়া অনুযায়ী মেকআপ নেওয়া সম্ভব হয় না। রোদ-গরম-বৃষ্টির দিনে ঝটপট সাজগোজ নিয়ে হুট করেই বের হতে হয়। আর এ জন্য ঝটপট মেকআপ নিয়ে পরিকল্পনাটাও থাকতে হয় আপনারই মাথায়। এমন দিনে ঝটপট সাজ নিতে প্রথমে মুখ ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিন। এবার ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এর মধ্যে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ব্যাগে গুছিয়ে নিতে পারেন।

 

এবার মনোযোগ দিন মেকআপের দিকে। ত্বকের যেসব জায়গায় কালো ছোপ বা দাগ আছে, সেখানে কনসিলার লাগিয়ে আঙুল দিয়ে মিশিয়ে নিন। অতিরিক্ত ঘাম আর বৃষ্টির হাত থেকে রক্ষা পেতে এ সময় লিকুইড ফাউন্ডেশন কাজে দেবে। ফাউন্ডেশন লাগানোর পর এক টুকরো বরফ পুরো মুখে হালকাভাবে ঘষে নিন। এবার কমপ্যাক্ট পাউডার দিয়ে মুখে বেইস করে নিন। বাদামি বা পিচ রঙের ব্লাশন ব্যবহার করতে পারেন। হালকা বাদামি, হালকা মোভ, ব্রিক, অরেঞ্জ, সাদা ও সোনালি রঙের মিশ্রণে আইশ্যাডো দিয়ে চোখটাকে সাজালে ভালো লাগবে। এ সময় হালকা মেকআপই ভালো। কপালে ছোট গোল টিপ পরতে পারেন।

 

মাশকারা ও আইলাইনার ব্যবহার করলে, অবশ্যই ওয়াটার প্রুফ হতে হবে। ঠোঁটে লিপিস্টিক লাগিয়ে সাজ শেষ করুন।

 

ইদানীং অনেকেই চুল খোলা রাখতে পছন্দ করেন। তবে এই আবহাওয়ায় খোলা রাখার চেয়ে হালকা অথবা আঁটসাঁট করে খোঁপা করে নিতে পারেন।

 

সাজের অন্যতম অনুষঙ্গ পোশাক। আপনার উচ্চতা, গড়ন, ব্যক্তিত্ব আর গায়ের রং, চুলের রঙের সঙ্গে মানিয়ে পোশাক পরুন। আবার ঋতুভেদেও পোশাক নির্বাচন করা উচিত। কালো চুলে চোখ বুজে বেছে নিতে পারেন যে কোনো পোশাক। তবে লাল রঙের চুলে বেগুনি, ডার্ক বা বটল গ্রিন আর কালো রঙের পোশাকই বেশি মানানসই। আবার স্কিন টোন বুঝেও পোশাক বাছাই করা বুদ্ধিমানের কাজ। ফ্যাকাশে গায়ের রঙে নিন উজ্জ্বল রং। ব্লু, ব্ল্যাক, বেগুনি বা গ্রিনও হতে পারে মানানসই। শ্যামবর্ণ গায়ের রঙে সাদা বা অনুজ্জ্বল রঙের পোশাক মানানসই। আবার উচ্চতাও যে বিবেচ্য বিষয়। ছেলে-মেয়ে উভয়েরই উচ্চতা কম, স্বাভাবিক বা খুব বেশি হতে পারে। আবার বেশি উচ্চতার মানুষের শারীরিক গড়নও হতে পারে একটু পাতলা। আর এসব দিকে খেয়াল রেখে পোশাক নির্বাচন করা উচিত। আপনি যদি বেশ লম্বা ও পাতলা হয়ে থাকেন তাহলে খেয়াল রাখুন আপনার পোশাকের রংটি যেন উজ্জ্বল শেডের হয় এবং ভিন্ন রকমের রং যেন তাতে ব্যবহৃত হয়। তাতে আপনার ওজন কিছুটা বেশি মনে হবে। খানিকটা মোটা দেখাতে হলে পরুন ফুলস্লিভ পোশাক। এমন পোশাক পরুন যাতে অনেকগুলো স্ট্রাইপ রয়েছে। তবে আপনার উচ্চতা যদি খানিকটা কমের দিকে হয় তাহলে পরুন হালকা রঙের পোশাক। এতে প্রথম দেখাতে আপনার উচ্চতা খুব একটা বোঝা যাবে না। কর্মক্ষেত্রে পোশাক সবসময়ই ফরমাল হওয়া উচিত। অতিরিক্ত রংচঙে কাপড়, ফ্যাশনেবল ডিজাইন অফিসে আপনাকে অন্যদের চোখে আকর্ষণীয় বা সম্মানের নয়, বরং হাস্যকর করে তুলবে। আবার অন্যদিকে পার্টি বা অনুষ্ঠানের পোশাকটি হওয়া উচিত একেবারে উল্টো।

 

 

অনেকেই পোশাকের দিকে যতটা না মনোযোগী তার চেয়ে একটু কমই মনোযোগী পায়ের জুতোয়। সত্যি বলতে, পরিপূর্ণ সৌন্দর্যের বহিঃপ্রকাশে জুতার অবদান অনেকটাই। মানানসই পোশাক, মানানসই প্রসাধন, মানানসই আনুষঙ্গিক জিনিসের মিশেল ঘটানোর পরও পুরো সাজটাই মাটি হয়ে যায় যখন জুতা ঠিকঠাক না হয়। তাই পোশাকের পাশাপাশি লক্ষ্য রাখুন জুতার দিকেও। বর্তমানে হিল, সেমি হিল, ফ্ল্যাটের পাশাপাশি চলছে নানা ধরনের পাম্প শু ও টেন্ড ইন। সাজের সঙ্গে মানিয়ে মানানসই একটি ব্যাগও থাকা চাই হাতে।

 

 

সানগ্লাস তরুণ প্রজন্মের কাছে তো বটেই, এর বাইরেও সব বয়সীর পছন্দের তালিকায় শীর্ষে। চোখের সুরক্ষার সঙ্গে স্টাইলিশ লুক দিতে একটি সানগ্লাসের গুরুত্ব অনেক। হাতে থাকতে পারে একটি স্মার্ট ওয়াচ। বালা বা চুড়িতে পুরোপুরি ওয়েস্টার্ন লুক না এলেও ওয়েস্টার্ন লুকের জন্য হাতে পরতে পারেন স্টাইলিশ ব্রেসলেট আর গলা এবং কানে পরতে পারেন নান্দনিক হার এবং কানের দুল। স্টাইল স্টেটমেন্ট আসবে ভিন্নতা এবং আপনি হয়ে উঠবেন অনন্য।

 

মনে রাখতে হবে...

গরম বা বৃষ্টিযুক্ত আবহাওয়ায় মেকআপ অবশ্যই ওয়াটার প্রুফ হতে হবে। না হলে ঘর থেকে বের হওয়ার ঘণ্টা না পেরোতেই মেকআপ মলিন হয়ে যাবে। আপনাকে সুন্দর দেখানোর বদলে তখন অসুন্দরই লাগবে। অতিরিক্ত গরমে হালকা মেকআপই ভালো। পোশাক নির্বাচনের ক্ষেত্রে পাতলা ও আরামদায়ক হওয়া চাই। এতে অতিরিক্ত ঘাম বৃষ্টিতে ভিজলেও দ্রুত শুকিয়ে যাবে। আবার গরম ধরবে কম। আপনি যদি একটু ভারি ওজনের হন তবে অবশ্যই ফুলস্লিভ পোশাক এড়িয়ে চলুন। এতে বেশি মোটা দেখায়। হালকা রঙের পোশাকে ওজন কম দেখায়। এ ছাড়া কম উচ্চতার মেয়েদের হঠাৎ দেখায় খাটো মনে হয় না। গাঢ় রঙের পোশাক আপনাকে মোটা ও খাটো দেখাতে সাহায্য করবে। অতিরিক্ত রংচঙে ও ভারি ডিজাইনের কাপড় পরে অফিস করাটা ব্যক্তিত্বের পরিপন্থী। তাই খেয়াল রাখতে হবে সাদামাটা পোশাকের দিকে। সাজগোজের ব্যাপারেও হতে হবে সাবধান। খুব বেশি রগরগে মেকআপ এড়িয়ে অফিসে হালকা মেকআপ করাই ভালো। মনে রাখতে হবে ঝটপট সাজে আপনাকে যখন বেরিয়ে যেতে হচ্ছে তখন চলাচলও রাখতে হচ্ছে স্মুথ। আর সে জন্য আরামদায়ক একটি জুতা হতে পারে আপনার উপযুক্ত সঙ্গী। আপনার চলাফেরাকে আরও সহজ ও আরামদায়ক করে তুলতে সহায়তা করতে পারে উপযুক্ত মাপের একটি হাতব্যাগ। যার মধ্যে আপনার টুকটাক প্রয়োজনের সব জিনিস ঠিকঠাক ধরে যায়। তাই এসব বিষয়ে আগে থেকেই খেয়াল রাখুন যেন দ্রুত নিজেকে প্রস্তুত করে বের হতে বেগ না পেতে হয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর