ডায়াবেটিস প্রতিরোধে একক সচেতনতার পাশাপাশি পারিবারিক সচেতনতা গড়ে তুলতে পারলেই মুক্তি পাওয়া সম্ভব এই ঘাতকব্যাধী থেকে। রবিবার বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস উপলক্ষে স্বাস্থ্য বিষয়ক স্টার্ট আপ ঢাকা কাস্ট’র আয়োজিত এক অনলাইন আলোচনায় এমনটাই জনালেন অংশগ্রহণ করা আলোচকরা।
ঢাকা কাস্টের প্রধান পরামর্শক ড. শেখ আহমেদুল হক কিরণের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের নারী বিজ্ঞানী ড. ফেরদৌসী কাদরী। সাধারণ মানুষের মধ্যে ডায়াবেটিস সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তোলার লক্ষ্যে ঢাকা কাস্টের এই আয়োজনের প্রশংসা করেন। অনুষ্ঠানে দেশের বিজ্ঞানী, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিরা অংশগ্রহণ করেন এবং ডায়াবেটিস রোগ নিয়ে আলোচনা করেন। প্রায় ১০০০ ডায়াবেটিস রোগী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
ড. ফেরদৌসী কাদরী বলেন, ‘ডায়বেটিস সচেতনতা শুধু এখন এককভাবে নয়,পরিবারের সকলকে এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে।’ ড. ফেরদৌসী কাদরি চিকিৎসা ক্ষেত্রে তার অবদানের জন্য ২০২০ সালে ইউনেস্কো পুরস্কার অর্জনের পাশাপাশি লাভ করেছেন আন্তর্জাতিক সম্মাননাও। এ বছর প্রকাশিত এশিয়ার সেরা ১০০ বিজ্ঞানীর তালিকাতেও জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। একই সাথে এশিয়ার নোবেল পুরস্কার হিসেবে খ্যাত র্যামন ম্যাগসেসে ২০২১ পুরস্কার অর্জন করেন।
অনুষ্ঠানে ঢাকা কাস্টের প্রতিষ্ঠাতা ডা. ফাহরিন হান্নান বলেন, ‘বর্তমান শতাব্দীতে বিশ্বজুড়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রসার ও জনপ্রিয়তা অনেক নতুন সম্ভাবনার সৃষ্টি করেছে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে সমগ্র বিশ্বজুড়ে অগণিত স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো খুব অল্প সময়ে এবং সাশ্রয়ী মূল্যে বিশাল সংখ্যক মানুষকে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করছে। বর্তমানে বাংলাদেশে জনসংখ্যা অনুপাতে চিকিৎসকের হার নিতান্ত অপ্রতুল। প্রতি ১০০০ জন মানুষের জন্যে মাত্র ছয়জন চিকিৎসক আছেন। এমতাবস্থায় ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যে আরো বড় সমস্যা। কারণ তাদের নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হয়। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ডায়াবেটিক রোগীদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের লক্ষ্য নিয়েই ঢাকা কাস্ট নিরবিচ্ছন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছে।’
নভেম্বর মাসের ১৪ তারিখ বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস উদযাপন করা হয়। এ বছরে বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস উপলক্ষে অনলাইন ভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ঢাকা কাস্ট এক বিশেষ ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে দেশের বিজ্ঞানী, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিরা অংশগ্রহণ করেন এবং ডায়াবেটিস রোগ নিয়ে আলোচনা করেন। প্রায় ১০০০ ডায়াবেটিস রোগী ইন্টারনেটের মাধ্যমে এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক ড. শুভাগত চৌধুরী, সাবেক পরিচালক, ল্যাব সার্ভিস, বারডেম; মিস টিনা জাবীন, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক, স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড; ড. তাহসিন বাহার, প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক, জাগ্রত মানবিকতা; প্রখ্যাত ডায়াবেটিক বিশেষজ্ঞ ড. এজাজ বারী, ঢাকা কাস্টের পরামর্শক ড. রেজোয়ানা বিশ্বাস ও ঢাকা কাস্টের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মোনতাসির ইসলাম।
১৯৯১ সালে আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশন (আইডিএফ) এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) যৌথভাবে ১৪ নভেম্বরকে বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস হিসেবে ঘোষণা দেয়। এই দিনটি উদযাপনের মূল লক্ষ্য হচ্ছে বিশ্বব্যাপী ডায়াবেটিস সম্পর্কে ব্যাপক জনসচেতনতা গড়ে তোলা এবং একই সাথে ডায়াবেটিস প্রতিরোধের জন্যে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, বিজ্ঞানী, নীতি-নির্ধারকসহ সকলকে একত্র করে আলোচনার মাধ্যমে ডায়াবেটিসের উন্নত ওষুধ ও চিকিৎসা ব্যবস্থা তৈরির কাজে উৎসাহিত করা। ২০২১ সালের বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবসের মূল প্রতিপাদ্য ছিল-" Access to Diabetes Care, if not now, When?" (ডায়াবেটিস রোগের সেবা আজ এবং এখনি)।
বিডি প্রতিদিন/এমআই