রবিবার, ১০ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

সর্দি-কাশি ও ভিটামিন সি

সর্দি-কাশি ও ভিটামিন সি

কথায় বলে, ওষুধ খেলে সর্দিকাশি ৭ দিনে সারে, না খেলে এক সপ্তাহ। তা জানা সত্ত্বেও আমরা সর্দি-গর্মির ওষুধের জন্য হন্যে হয়ে ফিরি। আর এর ওষুধও আছে হরেক রকম। বিগত সাত দশকের ওপর বিতর্ক চলছে। সাধারণ সর্দি-কাশি প্রতিরোধে ভিটামিন সি আসলে কি কোনো কাজ করে? সর্দি-কাশি আমাদের পরিচিত রোগ। সচরাচর আমরা একে ঠাণ্ডা লাগা বা ফ্লু হওয়া বলে থাকি। এর জন্য প্রায় ২০০ রকমের ভাইরাসকে দায়ী করা হয়। সর্দি-কাশি হলে জ্বর হয়, এর সঙ্গে প্রচণ্ড শারীরিক দুর্বলতা অনুভূত হয়, শরীর ম্যাজম্যাজ করে; হাঁচি, সর্দি, মাথাব্যথা, গলা ব্যথাসহ নানারকম লক্ষণ-উপসর্গ প্রকাশ পায়। এর জন্য প্রচুর ভোগান্তি হয়। ভাইরাসজনিত ব্যাধি হওয়ার কারণে এর বিরুদ্ধে অ্যান্টিবায়োটিকও কোনো কাজ করে না। সম্প্রতি ভিটামিন সি-এর ব্যবহার সম্পর্কে ৭২টি গবেষণার ফলাফল আবার নতুন করে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এতে দেখা যাচ্ছে : ♦ ২০টি গবেষণায় ১১ হাজার রোগীকে সর্দি-গর্মি প্রতিরোধ করার জন্য ভিটামিন সি ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু এতে কোনো ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া যায়নি। মাত্র ৩% ক্ষেত্রে এটা কিছু উপকার করেছে। তবে যারা প্রচণ্ড মানসিক চাপের মধ্যে থাকেন (যেমন : ম্যারাথন দৌড়বিদ, মরু এলাকায় কর্মরত সৈনিক), তাদের ক্ষেত্রে ভিটামিন সি ব্যবহার করে ভালো ফল পাওয়া যায়। এ সব ক্ষেত্রে সর্দি-কাশির হার প্রায় অর্ধেক কমানো সম্ভব হয়েছে। ♦ ৩১টি গবেষণায় ১০ হাজার রোগীর সর্দি-কাশির স্থায়িত্বকাল নিয়ে পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, রোগের সময়কাল কমানোর ক্ষেত্রেও ভিটামিন সি-এর তেমন কোনো ভূমিকা নেই।  ♦ সবশেষে বিচার করা হয়েছে উপসর্গের তীব্রতা কমানোর ক্ষেত্রে ভিটামিন সি-এর কোনো ভূমিকা আছে কিনা। সেখানেও কোনো ভালো ফল পাওয়া যায়নি। দেখা যাচ্ছে, শিশুদের দৈনিক ১ থেকে ২ গ্রাম ভিটামিন সি খাওয়ালে তাদের সর্দি-কাশির তীব্রতা কিছু কমে। কিন্তু এত উচ্চমাত্রায় ভিটামিন শিশুদের খাওয়ানো আবার কতটুকু নিরাপদ সে প্রশ্ন রয়েই যায়।

ডা. মো. আজিজুর রহমান, বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ, ঢাকা সেন্ট্রাল ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কজেল হাসপাতাল

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর