‘ন্যাশনাল হেরাল্ড’ পত্রিকা মামলায় দিল্লির হাইকোর্টের একটি রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করলেন কংগ্রেস সভাপতি সোনিয়া গান্ধী ও দলের সহ-সভাপতি রাহুল গান্ধী। বৃহস্পতিবার মা ও ছেলের পাশাপাশি শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হলেন এই মামলার অভিযুক্ত সুমন দুবে এবং শ্যাম পিত্রেদাও।
হেরাল্ড মামলায় নিম্ন আদালতে নিজেদের ব্যক্তিগত হাজিরা আটকাতে গত বছরেই দিল্লি হাইকোর্টে আর্জি জানিয়েছিলেন সোনিয়া ও রাহুল। কিন্তু গত বছরের ৭ ডিসেম্বর আদালত তাদের সেই আর্জি খারিজ করে দেয়। স্বাভাবিকভাবেই পরদিন ৮ ডিসেম্বর সশরীরে দিল্লির নিম্ন আদালতে (পাতিয়ালা হাউজ) হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল মা ও ছেলের। কিন্তু ওই দিন ব্যাক্তিগত হাজিরার দিন পিছিয়ে দিয়ে ১৯ ডিসেম্বর ধার্য করেছিল। সেইমতো ১৯ তারিখ পাতিয়ালা হাউজ আদালতে হাজিরা দেন সোনিয়া ও রাহুল। যদিও ব্যক্তিগত ৫০ হাজার রুপির বন্ডে নিম্ন আদালত তাদের দুই জনকেই জামিন মঞ্জুর করে। পাশাপাশি আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি ফের ব্যক্তিগত ভাবে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত। যদিও আদালতের এই রায় কোনভাবেই মেনে নিতে পারেননি গান্ধী পরিবারের এই দুই সদস্য। সেই কারণেই নিম্ন আদালতে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে রেহাই পেতে এবার শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হলেন তারা।
প্রসঙ্গত, সোনিয়া ও রাহুলসহ ৬ কংগ্রেস নেতার বিরুদ্ধে ‘ন্যাশনাল হেরাল্ড’ পত্রিকার কয়েক কোটি রুপির সম্পত্তি অবৈধভাবে দখলের চেষ্টায় অভিযোগ এনেছিলেন বিজেপি নেতা সুব্রমণিয়াম স্বামী। চার বছর আগেই সোনিয়া ও রাহুলের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন তিনি। স্বামীর অভিযোগের ভিত্তিতে ২০১৫ সালের ২৬ জুন দিল্লির পাতিয়ালা হাউজ আদালতের তরফে সমন পাঠোনো হয় সোনিয়া ও রাহুল গান্ধীকে।
ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম চলাকালীন কংগ্রেস নেতা জওহরলাল নেহেরুর উদ্যোগে ১৯৩৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ‘ন্যাশনাল হেরাল্ড’ পত্রিকাটি প্রকাশিত হয়। কিন্তু প্রবল অর্থাভাবে চার ও সাতের দশকে এই ইংরেজি পত্রিকাটির প্রকাশনা সাময়িকভাবে কয়েকবার থমকে থাকলেও ২০০৮ সালে ১ এপ্রিল তা একেবারে বন্ধ হয়ে যায়। আদালতে বিজেপি নেতা সুব্রম্মণিয়াম স্বামীর অভিযোগ ছিল পত্রিকাটিকে উজ্জীবীত করার নামে ২০০৮ সালে প্রকাশক অ্যাসোসিয়েটেড জার্নালস লিমিটেড (এজিএল)-কে কংগ্রেসের দলীয় তহবিল থেকে ৯০.২৫ কোটি রুপি ঋণ দেওয়া হয়। এই ঋণ পুরোপুরি সুদ মুক্ত ছিল। পরে ২০১০ সালে ইয়ং ইন্ডিয়া লিমিটেড(ওয়াই আই এল) নামে একটি সংস্থা মাত্র ৫০ লাখ রুপিতে ওই পত্রিকাটি কিনে নেয়। স্বামীর অভিযোগ ছিল এজিএল এবং ওয়াই আই এল নামে এই দুই সংস্থারই মালিক আসলে কংগ্রেস নেতারা। দুইটি সংস্থার শেযারই নাকি সোনিয়া ও রাহুলসহ গান্ধী পরিবারের সদস্যদের নামে।
বিডি-প্রতিদিন/০৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬/মাহবুব