জাঠ সংরক্ষণ আন্দোলনকে কেন্দ্র করে হরিয়ানার পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হয়ে উঠেছে। জাঠ সম্প্রদায়কে অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি (ওবিসি)-এর তালিকাভুক্ত করার দাবিতে প্রায় এক সপ্তাহ আগে রোহতকে যে আন্দোলন শুরু হয়, ক্রমশ সেই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে রাজ্যটির নয়টি জেলাতে। রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তা চলমান রয়েছে।
আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে এখনও পর্যন্ত প্রাণ গেছে ১০ জনের। আহত হয়েছেন অন্তত ১৫০ জন। রোহতক, চন্ডীগড়, ঝাঁঝড়, সোনিপথে সেনা নামিয়ে উত্তাল পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করলেও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আন্দোলনের নামে অগ্নিসংযোগ ঘটানো হয়েছে একাধিক বাস-গাড়ি, রেলওয়ে স্টেশন, পুলিশ থানা, সরকারি ভবন, পেট্রল পাম্প, রাজ্যটির অর্থমন্ত্রী ও সাধারণ মানুষের বাড়িতেও। হরিয়ানার যেসব জায়গায় মাত্রাতিরিক্ত উত্তেজনা রয়েছে সেই সব জায়গায় দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রবিবার ঝিন্দ, হিসার ও হানসি সহ আরও পাঁচটি শহরে নতুন করে কার্ফু জারি করা হয়েছে। এছাড়া রোহতক, সোনিপথ, ভিওয়ানি, ঝাঁঝড়ে আগে থেকেই কার্ফু জারি আছে। আন্দোলনের জেরে উত্তর ভারতের রেল পরিষেবা সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত। বাতিল করা হয়েছে ৭০০টিরও বেশি ট্রেন। একাধিক জাতীয় সড়কের মাঝখানে খুঁড়ে রাখায় হরিয়ানার সঙ্গে পাঞ্জাব, হিমাচল প্রদেশ, জম্মু-কাম্মীরসহ উত্তর ভারতের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সড়ক যোগাযোগ ব্যাহত হওয়ায় বিমানের ভাড়া দ্বিগুণ হয়েছে। আন্দোলনের রেশ এসে পড়েছে দিল্লি লাগোয়া গুড়গাঁওয়ে। এখানকার যে মুনক ক্যানাল থেকে দিল্লিতে পানি সরবরাহ করা হয় সেখানে আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভ শুরু করায় ক্যানালটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। স্বাভাবিকভাবেই রবিবার সকাল থেকে রাজধানী দিল্লির একাধিক জায়গায় পানি সরবরাহ বন্ধ। সব মিলিয়ে এই আন্দোলনের ফলে ২০০ কোটি রুপির সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে।
পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খাট্টার একটি সর্বদলীয় বৈঠক করেন। ওই বৈঠকেই জাঠদের সংরক্ষণ দেওয়ার জন্য শিগগিরি রাজ্য বিধানসভায় একটি বিল আনা হবে বলে আশ্বস্ত করেন। পরিস্থিতি নিয়ে ইতোমধ্যেই বৈঠক করেছেন হরিয়ানার মুখ্যসচিব, ক্যাবিনেট সচিব। কিন্তু তবুও পরিস্থিতি শান্ত হচ্ছে না।
বিডি-প্রতিদিন/ ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬/ রশিদা